কুমিল্লায় প্রত্নসম্পদের সন্ধানে খনন শুরু
কুমিল্লায় চার বছর বন্ধ থাকার পর পুনরায় শুরু হলো ৭ম-৮ম শতকের প্রাচীন নিদর্শন শালবন বৌদ্ধ বিহারের খনন কাজ।
মূল বিহারের পার্শ্ববর্তী অংশ থেকে আরও নতুন কিছুর সন্ধানে নেমেছে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর। বৌদ্ধ বিহার ও তৎকালীন মানুষের জীবনযাপন সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করতেই মূল বিহারের আঙ্গিনায় উত্তর-পূর্ব কোণায় খোঁড়াখুড়ি শুরু হয়েছে। চলবে মাসব্যাপি।
গত ২০১৪ সালে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের খনন কাজে সন্ধান মেলে একটি কুপের। ঐ কুপে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে সামন্য খনন কাজ হয়। এ সময় একটি মেঝে ব্যতীত তেমন কিছু পাওয়া যায়নি। এরপর প্রায় ৪ বছর শালবন বিহারে কোনো খনন কাজ হয়নি, দর্শনার্থীদের সামনে আসেনি নতুন কোনো প্রত্নসম্পদ।
বৃহস্পতিবার (২৪ ফ্রেরুয়ারি) কোটবাড়ি এলাকায় শালবন বিহারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ১৫-১৬ জনের একটি দল মাটি খননে কাজ করছে একাগ্রচিত্তে। খুঁড়ে পাওয়া ইট পাথর আর মাটি আলাদা আলাদা পরখ করে দেখছেন এই দলটি। নতুন কোনো প্রত্নসম্পদের অংশ বিশেষ পাওয়ার আশায়। মূল বিহারের মন্দিরের উত্তর পূর্ব কোণার সীমানায় খনন কাজ চালিয়ে যাচ্ছে কুমিল্লা প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের কর্মকর্তাসহ এই দলটি।
এই খনন কাজে অংশ নিয়েছেন প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর-কুমিল্লার আঞ্চলিক পরিচালক এ কে এম সাইফুর রহমানের, ময়নামতি যাদুঘরের কাস্টোডিয়ান হাসিবুল হাসান সুমি, ফিল্ড অফিসার শাহীন আলম, সার্ভেয়ার চাই থয় মারমা, ড্রাফটস ম্যান রিপন মিয়াসহ বগুড়ার মহাস্থানগড় থেকে আসা প্রত্নতত্ত্ব খনন কাজে পারদর্শী একদল শ্রমিক।
কুমিল্লার প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক এ কে এম সাইফুর রহমান জানান, এবার খনন কাজ চালানোর জন্য নেওয়া হয়েছে বাড়তি সতর্কতা। বগুড়ার মহাস্থানগড় থেকে আনা হয়েছে একদল দক্ষ খনন শ্রমিক। এসব শ্রমিকরা বংশ পরম্পরায় যুগের পর যুগ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রত্নসম্পদ খোঁজার কাজে নিয়োজিত। নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবে কুমিল্লার বিভিন্ন প্রত্নক্ষেত্রে খনন কাজ করা হয় প্রতিবছর। বর্তমানে যে জায়গায় খনন চলছে এর আগে কখনো খনন হয়নি। তাই এখানে নতুন কিছু পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উল্লেখ্য, কুমিল্লার লালমাই থেকে ময়নামতি পর্যন্ত ১১ কিলোমিটারের মধ্যে ৫৫টি প্রত্নক্ষেত্র রয়েছে। এর মধ্যে খনন কাজ হয়েছে ১০টিতে। ১৯৫৫ সালে শালবন বিহার এলাকায় প্রথম খনন কাজ শুরু হয়, এরপর বিভিন্ন সময়ে বেরিয়ে আসে নানা প্রত্নসম্পদ। এর মাঝে উল্লেখযোগ্য হলো বর্তমান শালবন বৌদ্ধ বিহার।
টিটি/