সাতক্ষীরায় টয়লেট থেকে নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার
সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় খানপুর গ্রামের একটি টয়লেটের ভেতর থেকে এক নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার করেছে স্থানীয়রা।
মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলার খানপুর বাজারের দক্ষিণপাশের একটি টয়লেট থেকে নবজাতকের মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নবজাতকের মা খানপুর গ্রামের রইচ উদ্দীনের প্রতিবন্ধী মেয়ে মাছুরা খাতুন (১৭) এবং নবজাতকের নানি শহিদা খাতুনকে (৫০) আটক করে স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানায়, মঙ্গলবার দুপুরে নবজাতকটি ভূমিষ্ঠ হয়। এ সময় নবজাতকের মা ও নানি নবজাতকটি টয়লেটের ভেতরে ফেলে দেন।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট এলাকার মহিলা ইউপি সদস্য রুমা আক্তার জানান, স্থানীয় কয়েকজন নারীর তথ্যের ভিত্তিতে আমি টয়লেটের পাশে যাই। ওই সময় নবজাতকের নানিকে জিজ্ঞাসা করা হলে নবজাতকটি টয়লেটের ভেতরে বলে তিনি জানান। পরে নবজাতকটিকে সেখান থেকে মৃত উদ্ধার করা হয়।
ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, “পরিবারটি অত্যন্ত গরিব। পরিবারের ৫ জন মানুষের ভোরণপোষণ যোগান ৭২ বছর বয়সী রইচ উদ্দীন। দারিদ্রতার সুযোগ নিয়ে বছর ছয়েক আগে একব্যক্তি কিশোরী মাছুরাকে ধর্ষণ করেন। এতে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেন মাছুরা।
ওই ঘটনার ৬ বছর পর কে-বা কারা কিশোরীটির দারিদ্রতার সুযোগ নিয়ে তাকে আবারও ধর্ষণ করে। তবে এ ঘটনায় যারাই জড়িত হোক না কেন তাদের আইনের আওতায় এতে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খানপুর গ্রামের হতদারিদ্র রইচ উদ্দীনের মেয়ে জন্মলগ্ন থেকে মানসিক প্রতিবন্ধী। এর আগেও কিশোরী মাছুরার বয়স যখন ১১ বছর সেসময় পার্শ্ববর্তী খানপুর গ্রামের গোলাবাড়ি এলাকার মৃত জাহা বকস্ আলীর ছেলে আব্দুস সাত্তার (৪৫) খাবারের প্রলোভন দেখিয়ে মাছুরাকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। এতে সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে।
একপর্যায়ে কিশোরী মাছুরা একটি ছেলে-সন্তানের জন্ম দেয়। সেই সন্তানের বয়স আজ ৫ বছর। তবে আজকের এ ঘটনায় নবজাতকটির বাবা কে সে সম্বন্ধে কিছু বলতে পারেননি স্থানীয়রা।
এ ব্যাপারে মাছুরার মা শহিদা খাতুন জানান, দুপুরের দিকে নবজাতকটি টয়লেটে ভূমিষ্ঠ হয়ে ওইখানেই পড়ে যায়। পরে মাছুরা তাকে জানালেও লোকলজ্জার ভয়ে বিষয়টি কাউকে বলেননি তারা।
শহিদা খাতুন আরও জানান, বছর ছয়েক আগে খাবারের প্রলোভন দেখিয়ে পার্শ্ববর্তী আব্দুস সাত্তার তার মেয়েকে ধর্ষণ করেন। এ ঘটনায় মেয়েটি ওই সময় অন্তঃসত্ত্বা হয়ে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেয়। এ বিষয়ে একটি মামলা করলে আদালত তার মেয়েকে স্ত্রীর অধিকার দিতে সাত্তারকে নির্দেশ দেন। তবে এখনও মাছুরাকে স্ত্রীর অধিকার দেননি সাত্তার। এ কারণে আজকের ঘটনাটি পারিবারিকভাবে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন তারা।
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা সদর থানার এসআই শাহজালাল বলেন, “আমি ঘটনাস্থলে আছি। বিষয়টি সম্বন্ধে অনুসন্ধান চলছে। বিস্তারিত পরে জানানো যাবে।”
এমএসপি