সৈকতে অতিরিক্ত জেলিফিশ, ক্ষতির মুখে জেলেরা
পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সৈকতসহ দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকায় দেখা মিলছে শত শত জেলিফিশ। অতিরিক্ত জেলিফিশের কারণে সাগরে জাল ফেলতে পারছেন না খুঁটা জাল দিয়ে মাছ শিকারে যাওয়া জেলেরা। ফলে ক্ষতির মুখে পড়ছেন তারা।
রবিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) কুয়াকাটা সৈকতের গঙ্গামতি, লেম্বুরবন ও চর বিজয়ের বিভিন্ন তীর ঘেঁষে দেখা যায় শত শত জেলিফিশ। জীবিত অবস্থায় এসব জেলিফিশ ভেসে আসলেও সৈকতের বালুতে আটকা পড়ে মারা যাচ্ছে।
ঝাউবন এলাকার জেলে আবুল কালাম জানান, গত ১৫ দিন ধরে হঠাৎ জেলিফিশ (নোনা) বেড়েছে। প্রথম দিকে কম থাকলেও এখন অনেক বেশি। এ কারণে সাগরে কোনো মাছ ধরা যাচ্ছে না। জাল, রশি নষ্ট করে জেলিফিশ। তাই জাল তুলে নিয়ে এসেছি। জেলিফিশ কমলে আবার জাল ফেলব।
গঙ্গামতির জেলে আলি হোসেন জানান, গভীর সমুদ্রে জেলিফিশ অনেক বেশি দেখা যায়। ঢেউয়ে তীরে ভেসে আসে কিন্তু ভাটায় পানি কমলে সেগুলো বালুতে আটকা পড়ে মারা যায়। এসব জেলিফিস বিভিন্ন রকমের হয়। কোনোটা চাঁদের মতো আবার কোনোটা দেখতে অক্টোপাসের মতো।
পটুয়াখালী জেলা ইউএস-এইড/ ইকো-ফিস ২, ওয়ার্ড ফিস বাংলাদেশ প্রকল্পের সহযোগী গবেষক সাগরিকা স্মৃতি জানান, সৈকতে হঠাৎ এত বেশি জেলিফিশ আসছে যে, মনে হচ্ছে সমুদ্রের স্বাস্থ্য ঠিক নেই। আবার জেলিফিশ যেসব মাছের খাবার সেসব মাছ কমে গেলেও উৎপাত বাড়তে পারে। জেলিফিশের শরীর খুবই বিষাক্ত সে কারণে তাদের সংস্পর্শে আসা রেণু পোনাও মারা যাচ্ছে। এটা নিয়ে গবেষণা করলে হয়তো কারণ জানা যাবে।
কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, জেলিফিশ মূলত ১৫-২০ প্রজাতির হয়ে থাকে। এরমধ্যে বর্তমানে দুই প্রজাতির দেখা মিলছে। তার একটি হলো আওরেলিয়া আওরেটা ও অন্যটি ব্যারেল জেলিফিশ। আওরেলিয়া আওরেটা প্রজাতির জেলিফিস দেখতে চাঁদের মতো। তাই এ প্রাণীকে মুন জেলিফিস বলা হয়। তবে অপরটি ব্যারেল প্রজাতির জেলিফিশ মনে হচ্ছে। জেলিফিশ মূলত মেরুদণ্ডহীন প্রাণী। তাই এটি বাতাস কিংবা স্রোতের উল্টো চলতে পারে না।
‘সৈকতের কী কারণে জেলিফিশ আসছে সেটা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে বছরের এই মৌসুমে উপকূলীয় এলাকায় জেলিফিশের দেখা মেলে। বেশি দিন স্থায়ীভাবে এরা থাকে না। আবহাওয়ায় গরমের প্রভাব বাড়লে এটা কমতে শুরু করবে। জেলিফিশের অতিরিক্ত মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটে অবহিত করা হয়েছে'-বলে জানান তিনি।
টিটি/