শিশু সন্তানকে না পেয়ে চিরকুট লিখে জীবন দিলেন বাবা!
'ভাই আমার জীবন আর চালাই নিতে পারছি না রে ভাই। প্রতিটি মুহূর্ত যন্ত্রণার। মাহমুদ, অনেক ভালোবাসি ভাই তোকে। আমাকে মাফ করে দিস। আমার সংসারটা শিলার বাবা, মা আর ওর ভাই নাহিদ নষ্ট করে দিছে। আমার কলিজার টুকরাকেও নিয়ে গেছে ওরা।
ভাই, প্রতিদিনের এই যন্ত্রণা, কষ্ট থেকে এটা ছাড়া উপায় ছিল না। ভাই আমার অসহায়ত্ব আর চোখের পানিও ওদের কাছে হাসি তামাশার মনে হয়েছে। ভাই বাবুকে দেখে রাখিস। আর পারলাম না ভাই।
একটু একটু করে মরার চেয়ে একেবারেই মরে যাওয়া ভালো। তাও যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাব। আমার আব্বা মাকে মাফ করে দিতে বইলো ভাই। আল আমীন ১৭/২/২২।'
টাঙ্গাইল ঘাটাইলে ছোট ভাই মাহমুদের কাছে সাদা কাগজে এমনি একটি চিরকুট লিখে আত্মহত্যা করেছেন বড় ভাই আল আমীন (৪০)।
আর সেই সুইসাইড (চিরকুট) নোটটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের আইডি থেকে পোস্ট করেছেন মাহমুদ। নোটের সত্যতা স্বীকার করেন মাহমুদের চাচা আবুল খায়ের খান।
আল আমীন টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার দিঘলকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ইকবাল খানের বড় ছেলে। তিনি ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে স্নাতক পাস করেন।
নিহতের পরিবার ও পুলিশ ঢাকাপ্রকাশকে জানান, উপজেলার দেওপাড়া ইউনিয়নের তালতলা গ্রামের ইউসুফ আলীর মেয়ে শিলাকে বিয়ে করেন। সম্প্রতি তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে। আশরাফুল নামে তাদের দুই বছরের এক ছেলে রয়েছে।
বিবাহ বিচ্ছেদের পর নিজ সন্তানকে কাছে রাখতে না পাওয়ায় হতাশায় ভুগছিলেন তিনি। ওই অবস্থায় ১৭ ফেব্রুয়ারি ভাইয়ের কাছে সুইসাইড নোট লিখে ১৮ ফেব্রুয়ারি বিষপান করেন।
গুরুতর অবস্থায় তাকে টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থার আরও অবনতি হলে গত বুধবার ১৮ ফেব্রুয়ারি রাতেই তিনি টাঙ্গাইলের কুমুদিনী হাসপালে নেওয়া হলে সেখানেই তিনি মারা যান।
এরপর মরদেহের ময়না তদন্ত শেষে শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকালে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করেছে স্বজনরা।
এ বিষয়ে ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজহারুল ইসলাম সরকার ঢাকাপ্রকাশকে জানান, মরদেহে ময়না তদন্তের পর পরিবারের কাছে হস্তাস্তর করা হয়েছে।
টিটি/