সাব-রেজিস্টার অফিস সরানোর প্রতিবাদে রাজনগরে অবরোধ পালন
মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলায় সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত সর্বাত্মক অবরোধ পালিত হয়েছে। উপজেলা পরিষদের সাব-রেজিস্ট্রার অফিস দূরবর্তী স্থানে সরিয়ে নেওয়ার প্রতিবাদে দলিল লেখক, ব্যবসায়ী ও স্থানীয় সাধারণ জনগণ এই অবরোধের ডাক দেন।
অবরোধ চলাকালে সকাল থেকে রাজনগরের সর্বস্তরের ব্যবসায়ী দোকানপাট বন্ধ রেখে বিক্ষোভ করেন। দলিল লেখক এবং সাধারণ লোকজন উপজেলা পরিষদ ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন।
অবরোধকারীরা জানিয়েছেন, উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে রাজনগর কলেজ পয়েন্ট এলাকায় ভাড়া বাড়িতে সাব-রেজিস্টার অফিস স্থানান্তরের বিষয়টি জানার পর থেকে গত ১৫ দিন ধরে তারা আন্দোলন করে আসছেন।
অন্যদিকে, গত ২০ দিন ধরে দলিল লেখকরা কলম বিরতি অব্যাহত রেখেছেন।
তারা বলেন, উপজেলা সদরে ভাড়া নিয়ে অফিস পরিচালনা করার উপযোগী অনেক বাড়ি রয়েছে। কিন্তু সাব-রেজিস্টার রহস্যজনক কোনো কারণে উপজেলা সদর থেকে দূরবর্তী স্থানে অফিস স্থানান্তর করতে চাচ্ছেন।
আন্দোলনকারীদের দাবি, রাজনগর সদর থেকে সাব-রেজিস্টার অফিস অন্যত্র স্থানান্তর করলে রাজনগর শহরে দীর্ঘ দিনের জমে উঠা ব্যবসা বাণিজ্যের মারাত্মক ক্ষতি হবে।
এ ছাড়া যে স্থানটিতে অফিস সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে সে জায়গা কোনভাবেই নিরাপদ নয়।
অবরোধ চলাকালে আন্দোলনকারীরা উপজেলা সদরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কে বিক্ষোভ করেন ও সড়ক অবরোধ করেন ।
এ সময় আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরাও উপজেলা সদরের বিভিন্ন মোড়ে মেড়ে অবস্থান নেন। ফলে কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে অবরোধ পালিত হয়।
অবরোধের কারণে রাজনগরের সঙ্গে সিলেট ও মৌলভীবাজারের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ ছিল। যানচলাচল বন্ধ থাকায় জরুরি প্রয়োজনে লোকজন কষ্ট করে পায়ে হেঁটে চলাচল করেন। রাজনগর উপজেলা শহরের সব ধরনের দোকানপাট সম্পূর্নভাবে বন্ধ থাকে।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, তারা কোনভাবেই রাজনগর উপজেলা পরিষদ ভবন থেকে সাব-রেজিস্টার অফিস স্থানান্তরিত হতে দিবেন না।
রাজনগর উপজেলা সদরের প্রবীন ব্যবসায়ী ছাদিকুর রহমান বলেন, এমনিতেই রাজনগর উপজেলা সদর অবহেলিত এক জনপদ। যদি উপজেলা সদর থেকে সাব-রেজিস্টার অফিস সরিয়ে নেওয়া হয় তা হলে সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে।
রাজনগর বাজারের ব্যবসায়ী জাবেদ আহমদ বলেন, তারা দীর্ঘ কয়েক যুগ ধরে এখানে ব্যবসা-বাণিজ্য চালিয়ে আসছেন। হঠাৎ করে এখান থেকে সাব-রেজিস্টার অফিস সরিয়ে নিলে তাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের যেমন ক্ষতি হবে, তেমনি এলাকার অর্থনৈতিক অবস্থাও হুমকির মুখে পড়বে। কাজেই তাদের যৌক্তিক এ দাবি না মানলে প্রয়োজনে তারা কঠোর আন্দোলনের হুমকি দেন তিনি।
জেলা রেজিস্টার এস এম সোহেল রানা মিলন বলেন, বিষয়টি শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য আন্দোলনকারীদের নিয়ে আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারী আলোচনায় বসার চিন্তা ভাবনা চলছে। তাদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।
এনএইচবি/এমএমএ/