খালিয়াজুরীতে হাওড়ের জমি দখলে ইউপি চেয়ারম্যান!
নেত্রকোনার হাওড় অঞ্চল খালিয়াজুরীর গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ স্বাধীনের বিরুদ্ধে সরকারি জমি অবৈধভাবে দখলের অভিযোগ উঠেছে।
পাঁচহাট গ্রামের ইসমাইল মিয়ার ছেলে ইদ্রিছ মিয়া এলাকাবাসীর পক্ষে জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরে এ অভিযোগ করেছেন।
এ বিষয়ে ইদ্রিছ মিয়া বলেন, “ফেব্রুয়ারির শুরুতে স্বাধীন আওয়ামী লীগ নেতা আলী জাহান চৌধুরী ও ইউপি সদস্য হারুনসহ অন্য লোকদের নিয়ে পাঁচহাট মৌজায় বাজারের পাশে প্রায় ২০ একর সরকারি জমি দখলে নিয়ে মাটি ভরাট করেছেন। এ জমি এতদিন কারো দখলে ছিল না।”
এ ব্যাপারে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক, খালিয়াজুরির ইউএনও ও সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, হাওড় অধ্যূষিত উপজেলা খালিয়াজুরীতে জনবসতি খুবই কম। যেদিকে চোখ যায় শুধু হাওড় আর হাওড়। এসব হাওড়ে আছে বিশাল পতিত জমি। জমির মালিক সরকার।
সরকারি সূত্র মতে, হাওড়ে বিভিন্ন শ্রেণির খাসজমির পরিমাণ আট হাজার একরেরও বেশি। স্থানীয় অনেকের অভিযোগ, কোনো দপ্তর এ সরকারি জমির খোঁজ-খবর রাখে না।
প্রভাবশালীদের কেউ কেউ নিজেদের ইচ্ছেমতো ভোগ-দখল করছে এ জমির বিশাল অংশ। তারা দরিদ্র ও ভূমিহীন লোকদের প্রলুব্ধ করে জমি দখল করেন। তারপর সরকারি দপ্তরের একশ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ম্যানেজ করে নিজেদের নামে কাগজপত্র করিয়ে নেন। এভাবেই চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ স্বাধীনসহ অন্যরা পাঁচহাট মৌজায় ২০ একর খাসজমি কব্জা করেছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এ বিষয়ে গাজীপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আতাউর রহমান বলেন, “চেয়ারম্যান স্বাধীন ও আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত আলী জাহান চৌধুরী এবং স্থানীয় কিছু লোক পাঁচহাট মৌজায় সরকারি জমি দখল করে মাটি ভরাট করছে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।”
তবে গাজীপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবদুর রউফ স্বাধীন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “স্থানীয় কিছু লোক আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গায় মিথ্যা অভিযোগ করছে। আমি সরকারি খাস জমি দখল করিনি। এলাকার ভূমিহীনরা ওই জায়গায় বাড়িঘর করার জন্য মাটি ভরাট করছে। গত নির্বাচনে বিরোধী পক্ষ পাস করতে পারেনি বলে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছে।”
খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এএইচএম আরিফুল ইসলাম অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, “পাঁচহাট মৌজায় অনেক খাসজমি আছে। মৌজার একটি অংশে কিছু লোক মাটি ভরাট করেছে। অভিযোগ পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের ভূমি সহকারী কর্মকর্তাকে পাঠিয়ে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।”
জেলা প্রশাসক কাজী মো. আব্দুর রহমান জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে আইনানুগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এমএসপি