চুয়াডাঙ্গায় শিশু আবু হুরায়রা হত্যার রহস্য উম্মোচন
চুয়াডাঙ্গার সদর উপজেলার তালতলা এলাকার নিখোঁজ শিশু আবু হুরায়রা হত্যা রহস্য উম্মোচন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ঘাতক মোমেনকে (২৬)।
সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) গভীর রাতে তালতলা এলাকার কবরস্থান থেকে শিশু আবু হুরায়রার বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ জানুয়ারি থেকে নিখোঁজ ছিল চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তালতলা এলাকার আব্দুল বারেকের ছেলে চুয়াডাঙ্গা ভি জে স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র আবু হুরায়রা।
হত্যার রহস্য উন্মোচন করতে গিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন জানান, পেশায় রাজমিস্ত্রির সহযোগী (জোগালে) মোমেন। তিনি তালতলা এলাকার শহীদুলের ছেলে।
গত ২ বছর আগে এক ঈদের রাতে সাউন্ড বক্সে উচ্চস্বরে গান বাজাচ্ছিল মোমেন ও তার বন্ধুরা। এতে ক্ষিপ্ত হন আবু হুরায়রার বাবা আব্দুল বারেক। রাগে তিনি সেই সাউন্ড বক্সের টেবিলে লাথি মারেন। এতে টেবিলটি ভেঙে যায়। অনুষ্ঠানও পণ্ড হয়ে যায়। এতে মোমেনের ৩ হাজার টাকার ক্ষতি হয়।
এ ঘটনায় মোমেন মনে মনে ক্ষিপ্ত হন এবং প্রতিশোধ নিতে সুযোগ খুঁজতে থাকেন। এ জন্য তিনি টার্গেট করেন আব্দুল বারেকের শিশুপুত্র আবু হুরায়রাকে।
গত ১৯ জানুয়ারি আবু হুরায়রা প্রাইভেট পড়তে বের হয়। এ সময় মোমিন তাকে একা পেয়ে খোরগোশের লোভ দেখান। শিশুটিকে খরগোশ দেবে বলে তালতলা সরকারি কবরস্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর হাত-পা বেঁধে গলা টিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। হত্যার পর মরদেহ রেখে চলে যান মোমেন। পরবর্তীতে রাত ৮টার দিকে আবারও এসে মরদেহ বস্তায় ঢুকিয়ে মাটিতে পুঁতে রাখেন তিনি।
এদিকে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সন্দেহভাজন মোমেনকে রবিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) তালতলা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যার কথা স্বীকার করেন। পরে তার দেখিয়ে দেওয়া জায়গা থেকে উদ্ধার করা হয় আবু হুরায়রার মরদেহ।
এ ঘটনায় দুপুরে সদর থানায় সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশ। সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু তারেক (প্রশাসন) জানান, ঘাতক মোমেনকে আটক করা হয়েছে। তাকে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চাওয়া হবে। এ ঘটনায় আর কেউ জড়িত আছে কিনা তা আরও জিজ্ঞাসাবাদে জানা যাবে।
এদিকে, তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী আবু হুরায়ার হত্যার ঘটনায় চুয়াডাঙ্গা ভি জে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকদের বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন হয়েছে।
সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে মানববন্ধন হয়। পরে তারা শহরের বিভিন্ন সড়কে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিল থেকে হত্যাকারী রাজমিস্ত্রী সহকারী মোমিনের ফাঁসি দাবি করা হয়।
এমএসপি