ঠাকুরগাঁওয়ে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষে লাভবান চাষিরা
ভালোবাসার প্রতীক ফুল। শ্রদ্ধা নিবেদন, অভ্যর্থনা আর একে অন্যের প্রতি ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে ফুল অনন্য। আর সারা বছরে ফেব্রুয়ারী মাসকে ঘিরে ফুলের ব্যবহার সবচেয়ে বেশী দেখা যায়৷ এ মাসেই ফুলের দিবস আর ভালবাসা দিবস নামক দুটি দিন রয়েছে৷ আর এ মাসকে ঘিরে ফুল চাষ করে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন বুনে ফুল চাষীরা।
ঠাকুরগাঁওয়ে প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে নানা ধরনের ফুল চাষ। গোলাপ, গাঁদা, রজনীগন্ধাসহ বেশকিছু জাতের ফুল উৎপাদন করে স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় ফুল বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন ঠাকুরগাঁওয়ের ফুল চাষিরা।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নারগুন ও বেগুনবাড়ি ইউনিয়নের কয়েকজন উদ্যোক্তা ফুল চাষ করে লাভবান হয়েছেন। পাশাপাশি ফুল চাষকে ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে অনেক বেকারের কর্মসংস্থান।
ঠাকুরগাঁও জেলার বিভিন্ন নার্সারি ঘুরে দেখা যায়, নার্সারি পর্যায়ে স্বল্প পরিসরে কিছু ফুল চাষ ও চারা উৎপাদন করে জেলার কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। ফুল চাষ লাভজনক হওয়ায় অন্যান্য ফসলের চেয়ে অল্প সময়ে বেশি লাভের আশায় কৃষকরা এখন ফুল চাষের দিকে ঝুকে পড়েছেন। তাদের দেখে আগ্রহী হয়ে উঠছেন অন্যান্য এলাকার ফুল প্রেমী মানুষেরা।
এ ছাড়া ফুলের উৎপাদন ভালো হওয়ায় আশপাশের অন্যান্য চাষিরা আগ্রহী হয়ে উদ্যোক্তাদের কাছে নিচ্ছেন পরামর্শ। আর রং বেরংয়ের নানা জাতের চাষবাদকৃত ফুটন্ত ফুল ও ঘ্রাণ নিতে ছুটে আসছেন অনেকেই।
ফুল চাষি নাসিমুল আলম ঢাকাপ্রকাশকে জানান, গোলাপ, গাঁদা, রজনীগন্ধাসহ বিভিন্ন জাতের উন্নত মানের ফুল চাষ করা হয়েছে। স্থানীয় শ্রমিকদের যত্নে চাষাবাদকৃত চোখ জুড়ানো ফুটন্ত এসব ফুল দ্রুতই বেড়ে উঠছে। সরবরাহ করা হচ্ছে বাজারে। সামাজিক, রাজনৈতিকসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ফুলের কদর থাকায় একটা সময় অন্যান্য জেলা থেকে স্থানীয় বাজারের চাহিদা পূরণ করা হলেও এখন নিজ জেলায় উৎপাদন হচ্ছে নানা জাতের ফুল।
ফুলের বাগান দেখতে আসা মাশহুর রহমান মাসুদ ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই ফুলের বাগানটির খবর পাই। পাওয়ার পর খুব ইচ্ছে হয় স্বচক্ষে দেখার, তাই এসেছি। দেখার পর আলাদা একরকম প্রশান্তি অনুভব করলাম।
আরেক দর্শনার্থী রিপন আহমেদ ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ফুল চাষ করা আমার খুব শখ। তাই ফুলের বাগানটি দেখতে এসেছি। শখ পূরণের পাশাপাশি লাভবান হওয়ারও সুযোগ রয়েছে। আমি নিজেও একটি ফুলের বাগান গড়ব।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আবু হোসেন ঢাকাপ্রকাশকে জানান, অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি কৃষকরা ফুল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। কৃষি বিভাগ ফুল চাষিদের বিভিন্ন রকম পরামর্শ ও সেবা প্রদান করছেন, সেই সঙ্গে কৃষকদের ফুল চাষে উদ্বুদ্ধ করছেন। অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি এ জেলায় ফুল চাষ ছড়িয়ে দিতে পারলে একদিকে যেমন লাভবান হবেন কৃষক, অন্যদিকে কৃষি অর্থনীতি বিস্তার লাভ করবে।
টিটি/