আলু চাষ করে লোকসান গুণছেন জয়পুরহাটের কৃষকরা
দেশের তৃতীয়তম আলু উৎপাদনকারী বৃহৎ জেলা হিসেবে পরিচিত জয়পুরহাটে এবার আলু চাষ করে ব্যাপক লোকসানে পড়েছেন এ জেলার কৃষকরা। গত বছর বেশি দাম পাওয়ায় এবার বেশি দামে সার কিনে আলু লাগিয়েছেন তারা। কিন্তু এবার চেহারা গেছে বদলে। আলুতে লাভ তো দূরের কথা খরচই তুলতে পারছেন না চাষিরা। দেনা করে আলু লাগিয়ে তাদের মাথায় এখন ঋণের বোঝা। ফলে চরম হতাশায় রয়েছেন জেলার আলু চাষিরা।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, এক বিঘা জমিতে তাদের আলু লাগাতে খরচ হয়েছিল প্রকারভেদে ২৫-২৮ হাজার টাকা। এখন সেই জমি থেকে বর্তমানে আলু বিক্রি হচ্ছে ২৩০-২৮০ টাকা মণ দরে বিঘায় ১৫-১৮ হাজার টাকায়। এতে বিঘা প্রতি কৃষকদের লোকসান হচ্ছে ৮-১০ হাজার টাকার মতো।
জয়পুরহাট সদর উপজেলার হিসমী কমরগ্রামের আলু চাষী আনোয়ার হোসেন ঢাকাপ্রকাশ-কে জানান, তিনি চার বিঘা জমিতে আলু লাগিয়েছিলেন। খরচ হয়েছিল সবমিলিয়ে প্রায় দেড়লাখ টাকার মতো। সেখানে তিনি আলু বিক্রি করেছেন ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। তিনি বলেন, এ বছর আলু চাষ করে আমরা চরম বেকায়দায় পড়েছি।
ক্ষেতলাল উপজেলার বড়াইল গ্রামের আলু চাষি শহিদুল ইসলাম ঢাকাপ্রকাশ-কে জানান, সে দুই বিঘা গেনোলা আলু চাষ করতে খরচ হয়েছে প্রায় ৪৫ হাজার টাকা। তিনি আলু পেয়েছেন ১৪০ মণ। সেই আলু বিক্রি করেন ২৫০ টাকা মণ দামে ৩৩ হাজার ৬০০ টাকায়। তার লোকসান হয়েছে ১১হাজার ৪০০ টাকা।
কালাই উপজেলার নান্দাইলদীঘি গ্রামের চাষি আতোয়ার হোসেন ঢাকাপ্রকাশ-কে জানান, তিনি চার বিঘা জমিতে আলু লাগিয়েছেন। সেখানে মাত্র এক বিঘা জমির আলু উত্তোলন করেছেন বাকি আলুগুলো সময় হলেও গত কয়েকদিন আগে বৃষ্টির ফলে সেখানে এখনও পানি জমে থাকায় সেগুলো আর তোলা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি বলেন, পানিতে থাকা এই আলুগুলো ইতিমধ্যে নষ্ট হতে শুরু করেছে। জানি না কী অবস্থা যে আমাদের হবে।
জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা ও জেলা কৃষি কর্মকতা সাখওয়াত হোসেন ঢাকাপ্রকাশ-কে জানান, কৃষকরা আলু চাষ করে এবার তেমন লাভবান হচ্ছে না। তবে বাজার মনিটরিং হচ্ছে বলে জানান তিনি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. শফিকুল ইসলাম ঢাকাপ্রকাশ-কে জানান, এ বছর জেলায় ৪০ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে আলু করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ৪০ ভাগ জমিতে আলু তোলা শেষ হয়েছে। তিনি বলেন, 'দাম কম পেলেও ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকরা তাদের খরচ কিছুটা পুষিয়ে নিতে পারবেন।'
এমন অবস্থায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন এ জেলার আলু চাষিরা। দ্রুত সরকারের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন কৃষকরা।
টিটি/