গ্রামীণ ঐতিহ্যের অন্যতম নিদর্শন ভালুকার মাটির ঘর
ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘুরতে গেলে আপনার চোখে পড়বে শত শত মাটির ঘর। এসব ঘরের মাঝে সবচেয়ে বেশি নজর কাড়ে দোতলা মাটির ঘর।
দোতলা মাটির ঘরের বারান্দায় বসে চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে নিজেকে রাজ্য শাসক ভাবতেই পারেন ঘরের মালিক।
উপজেলার চান্দরহাটি, সিডস্টোর, মল্লিকবাড়িসহ কয়েকটি গ্রামের কয়েকজন মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এটা তাদের বাপ-দাদার ঐতিহ্য, অনেকের পাকাঘর করার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও শুধু বাপ-দাদার ঐতিহ্যকে লালন করেন বলে মাটির ঘরেই থাকেন।
আবার অনেকে পাকাঘর তৈরি করলেও মাটির ঘরটি না ভেঙে অক্ষত রেখে দেন স্মৃতিস্বরূপ। এমন কিছু মাটির ঘর সেখানে রয়েছে যা বাহির থেকে দেখে মনে হয় ইহা যেন ইটের তৈরি অট্টালিকা।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, তাদের এলাকার মাটি অন্যান্য স্থানের মাটির চাইতে তুলনামূলক অনেক বেশি শক্ত। যার ফলে এখানকার মাটির দেয়ালে বালি ও সিমেন্ট মিশিয়ে প্লাস্টার করে দিলে তা অনেক বেশি টেকসই হয় এবং বাহির থেকে দেখলে বোঝার উপায় নেই যে এটা মাটির ঘর।
এইসব মাটির ঘরের সবচেয়ে বড় একটি বৈশিষ্ট্য হলো গরমের সময় ঘর পর্যাপ্ত ঠান্ডা থাকে এবং শীতকালে ঘর গরম থাকে। যার ফলে মাটির ঘর বেশ আরামদায়ক।
কিছু মাটির ঘরে দেশীয় শিল্পের কারুকার্য চোখে পড়ে, যা দেখলে যে কেউ মুগ্ধ হয়ে যাবে।
আরেকটি অবাক করা বিষয় হলো, ভালুকা পৌরসভায় কিছু খাবার হোটেল আছে যেগুলো মাটির তৈরি, এসব হোটেলে কাস্টমারদের আগ্রহ অন্যান্য হোটেলের চাইতে অনেক বেশি।
তবে বাস্তবিক অর্থে নগর সভ্যতার আধুনিকায়ন ও দ্রুত শিল্পায়নের ফলে দিন দিন কমে যাচ্ছে মাটির তৈরি এসব ঘর। সেখানে গড়ে উঠছে বিশাল দালান, হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামের ঐতিহ্য।
টিটি/