মসজিদের দেয়ালে মৌচাক, মধু বিক্রির টাকায় উন্নয়ন কাজ!
মানুষ ও মৌমাছির মধ্যে মেলবন্ধন দেখা যাবে কুষ্টিয়ার খোকসা পূর্ব আমবাড়িয়া জামে মসজিদে গেলে। মৌমাছির বাসা ওপরে আর মসজিদে নামাজ পড়ছে এলাকাবাসী।
মৌমাছিগুলো মানুষের সঙ্গে মিলে-মিশে বসবাস করছে। একে অপরের কোনো ক্ষতি না করেই বছর পর বছর ধরে তাদের বসবাস।
এমন ঘটনার দেখা মিলবে কুষ্টিয়া জেলার খোকসা উপজেলার আমবাড়িয়া গ্রামের পূর্ব আমবাড়িয়া জামে মসজিদের দেয়ালে।
মসজিদের চারদিকের কার্নিশ, সিলিং, বারান্দার দেয়াল, ভবনের পাশে এবং গাছের ডালেও রয়েছে মৌমাছির চাক। মোট ৮-১০টি মৌচাক। এখনো নতুন মৌমাছি এসে বাসা বাঁধছে। তাই এলাকাবাসী মসজিদটিকে মৌমাছি মসজিদ বলে নামকরণ করেন অনেকেই। গত ২-৩ বছর ধরে এ মসজিদে বাসা বাঁধছে মৌমাছিগুলো। তবে কয়েক বছরের তুলনায় এবছর মৌমাছি বাসা বেঁধেছে বেশি। একটি-দুটি নয় ৮-১০টির বেশি মৌমাছির চাক রয়েছে এ মসজিদে। এক তালা ভবনের কার্নিশ, বারান্দার অংশসহ প্রায় সব জায়গায় বাসা বেঁধেছে মৌমাছি। এমনকি ভবনের আশপাশের গাছেও মৌমাছির বাসা দেখা গেছে।
মসজিদ কমিটির সভাপতি আবু বক্কর মন্ডল বলেন, '২-৩ ধরে মসজিদে মৌমাছি বাসা বেঁধেছে। আমাদের কোনো ক্ষতি করে না মৌমাছিগুলো। আমাদের ভালো লাগার কারণেই মৌমাছিগুলোর কোনো ধরনের ক্ষতি হতে দেই না। প্রতি বছর এই মৌমাছির চাকগুলো থেকে মধু সংগ্রহ করে বেশ কিছু টাকা পাওয়া যায়। যা দিয়ে মসজিদের উন্নয়নে খরচ করে থাকি।'
স্থানীয় বাসিন্দা মিঠু হোসেন বলেন, 'এই মৌমাছি আমাদের কামড় দেয় না। আমাদের বাচ্চারা এ জায়গায় খেলাধুলা করে, তাদেরও কোনো ক্ষতি করে না। মসজিদে নামাজের জন্য সবাই আসেন, তাদেরও কখনো কামড় দেয় না মৌমাছিগুলো। আমরাও তাদের ক্ষতি করি না।'
স্থানীয়রা জানান, কয়েক বছর ধরে মসজিদে মৌমাছির চাক থাকলেও কারো কোনো ক্ষতি করে না। এলাকাবাসীরা মৌচাকগুলো দেখে রাখেন। প্রতিবছর সংগ্রহ করা মধু বিক্রির টাকা মসজিদের কাজে লাগানো হয়। বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ আসেন এ মৌমাছির চাক দেখার জন্য। অনেকেই এসে ছবি তোলেন।
প্রাণীবিজ্ঞানীদের মতে মৌমাছি সব সময় নিরাপদ ও যেখানে পর্যাপ্ত খাবার থাকে সে স্থানে বাসা বাঁধে। গ্রামটিতে প্রচুর সরিষার আবাদ হয়। এটিও মৌমাছির বাসা বাঁধার অন্যতম একটি কারণ।
/এমএসপি