খুনের হুমকিসহ ডজনখানেক অভিযোগ আমতলী পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে
বরগুনার আমতলী পৌরসভার মেয়র মো. মতিয়ার রহমানের বিরুদ্ধে মারধর, খুনের হুমকি ও স্বাস্থ্য ক্লিনিকে জোর করে তালা মেরে দেওয়ার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগীরা।
বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিকালে বরগুনা প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। আমতলী পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের মৃত আব্দুল বারেক তালুকদারের ছেলে পিয়াল তালুকদার সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
বক্তব্যে তিনি বলেন, আমতলীর কিছু প্রভাবশালী আমাদের জমিজমা দখলের চেষ্টাসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছে। আমতলীতে সময় মেডিকেয়ার ও হসপিস ক্লিনিক নামে আমাদের একটি স্বাস্থ্য সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ৩ বছরের চুক্তিতে আমাদের পরিবারের যৌথ মালিকানাধীন জমির উপর ক্লিনিকটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
প্রতিষ্ঠানটি লাভজনকভাবে পরিচালনা করে চুক্তি অনুযায়ী নিয়মিত ভাড়া পরিশোধ করলেও কয়েক মাস আগে অংশিদারদের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয় এবং অধিকাংশ অংশীদার রাকিব চৌধুরী রাজুর বিপক্ষে অবস্থান নেন। পরে আমতলী পৌর মেয়র মতিয়ার রহমানের মধ্যস্থতায় কবির মাহমুদ ও পলাশ তালুকদারকে ক্লিনিক পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়।
কিন্তু হঠাৎ করে ৭ ফেব্রুয়ারি দুপুর দেড়টায় মেয়রের উপস্থিতিতে রাকিব চৌধুরী রাজু ক্লিনিকের মালামাল নিতে আসে। এসময় আমরা মেয়রের কাছে চুক্তি অনুযায়ী প্রাপ্য ভাড়া দাবি করতেই রাকিব চৌধুরী রাজুর নেতৃত্বে তার লোকজন এবং পৌরসভার স্টাফরা অতর্কিত হামলা চালিয়ে আমাকে বেদম মারধর করে। এ সময় আমার ডাক চিৎকারে ভাই তমাল, মৃণাল, মঈনসহ অন্য এগিয়ে এলে মেয়র তার সঙ্গে থাকা পিস্তল উঁচিয়ে খুনের হুমকি দেন। পরে মেয়রের নির্দেশে তার লোকজন ক্লিনিকে থাকা রোগী, ডাক্তার, অংশীদার ও কর্মচারীদের জোর করে বের করে দিয়ে ক্লিনিকে তালা লাগিয়ে দেন।
লিখিত বক্তব্যে পিয়াল আরও বলেন, পৌর মেয়র একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। তাই তার অন্যায়ের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস পায় না। তিনি শুধু আমাদেরকেই হয়রানি করেনি। তিনি আমতলী উপজেলার অসংখ্য মানুষকে হয়রানি করেছেন।
পিয়াল বলেন, ‘মেয়র মতি বিএনপি এবং জাতীয় পার্টির রাজনীতি থেকে অবসর নিয়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যোগদান করেছে। স্থানীয় প্রবীণ আওয়ামী লীগ এবং বংশ পরম্পরায় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত নেতাকর্মীদের কোণঠাসা করে ফেলেছেন তার অবৈধ অর্থের প্রভাব খাটিয়ে। ইতোমধ্যেই তার অবৈধ অর্থ অনুসন্ধানে নেমেছে দুদক, তার বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমতলী পৌরসভার মেয়র মতিয়ার রহমানের অন্যায় ও অনিয়ম স্থানীয় প্রশাসন ও স্থানীয় সবাই অবগত। অত্যন্ত প্রভাবশালী মেয়র হওয়ায় তার অন্যায় ও অনিয়মের বিষয় দেখেও না দেখার ভান করে সকলে।’
সংবাদ সম্মেলনে পিয়াল তালুকদারের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন ভুক্তভোগী তমাল তালুকদার, মিনাল তালুকদার, শহীদ তালুকদার, মহিন তালুকদার ও রোশন তালুকদার।
তবে এ ব্যাপারে পৌর মেয়র মো. মতিয়ার রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার ফোন বন্ধ থাকায় কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এমএ/এমএমপি