রাজনগরের সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয় স্থানান্তর
লাগাতার আন্দোলনের হুমকি, কলম বিরতিতে যাবেন দলিল লেখকরা
মৌলভীবাজারের রাজনগর সাব-রেজিস্ট্রার অফিস উপজেলা সদর থেকে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন রাজনগর বাজারের ব্যবসায়ী ও দলিল লেখকরা।
বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাজনগর প্রেসক্লাবে আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ব্যবসায়ী ফারুকুজ্জামান খান। বক্তব্য রাখেন বাজারের প্রবীন ব্যবসায়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়ছল আহমদ ও সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান দেওয়ান খয়রুল মজিদ সালেক, উপজেলা ছাত্র লীগের সাবেক সভাপতি শাহেদ্জ্জুামান আনছারী মনাই প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, রাজনগর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার আজমেরি নির্ঝর নিজের ইচ্ছে মতো বর্তমান কার্যালয়কে ড্যামেজ দেখিয়ে দলিল লেখক, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা ও ভোগান্তির কথা চিন্তা না করে উপজেলা সদর থেকে প্রায় দুই-আড়াই কিলোমিটার দূরে সাব-রেজিস্ট্রার অফিস স্থানান্তরের জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন। কতিপয় ব্যক্তির সহযোগিতায় তিনি উপজেলা সদরের ব্যবসা-বাণিজ্য ধ্বংস করতে চাচ্ছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তরা বলেছেন, সাব-রেজিস্ট্রার অফিসকে উপজেলা সদর থেকে সরিয়ে রাজনগর কলেজ মোড়ে নেওয়া হলে রাজনগরের সর্বস্তরের মানুষ মারাত্মক দুর্ভোগের শিকার হবেন। বিশেষ করে ওই স্থানে ব্যাংক সুবিধা না থাকায় দলিল লেখকদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয় স্থান্তরের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার দুপুরে মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি স্তম্ভের সামনে প্রতীকী অনশন করা হবে।
এ ছাড়া রাজনগর বাজার অবরোধ, সাব-রেজিস্ট্রার অফিস অবরোধসহ রাজনগরে লাগাতার ধর্মঘট করা হবে।
উল্লেখ্য, ১৯৯২ সাল থেকে উপজেলা পরিষদের ভিতর আইন মন্ত্রণালয়ের ভবনের কয়েকটি কক্ষ নিয়ে সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের কার্যক্রম চলছে। ভবনটি যথেষ্ট মজবুত থাকা সত্ত্বেও সংস্কারের উদ্যোগ না নিয়ে অফিস অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার আবেদন করেন উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার। এরই অংশ হিসেবে গত ১৯ জানুয়ারি নিবন্ধন অধিদপ্তর থেকে সহকারী মহা-পরিদর্শক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) শেখ মো. আনোয়ারুল হক স্বাক্ষরিত পত্রে অফিস সরিয়ে নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়।
সাব-রেজিস্ট্রার অফিস স্থানান্তরের সংবাদ জানার পর থেকেই রাজনগরের ব্যবসায়ী, দলিল লেখকসহ সর্বস্তরের মানুষ অফিস স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের দাবিতে গত ১৫ দিন ধরে বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করেও আসছেন। দলিল লেখকরা গত ১৫ দিন ধরে দলিল লেখা বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে সাধারণ মানুষ চরম বিপাকে পড়েছেন। সরকারও রাজস্ব হারাচ্ছে।
এদিকে সাব-রেজিস্ট্রার অফিস সরানোর সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে দলিল লেখকদের চলা কলম বিরতির সঙ্গে একাত্মতা জানিয়েছে মৌলভীবাজার জেলা দলিল লেখক সমিতি। জেলা দলিল লেখক সমিতি রাজনগরে সভা করেছে। সেই সভায় দলিল লেখক সমিতির নেতারা বলেছেন,ন্যায্য দাবি মানা না হলে জেলা ব্যাপী কলম বিরতির ডাক দেবেন তারা।
এনএইচবি/এমএমএ/