আবর্জনা-দূষণে জর্জরিত লৌহজং নদী, পরিচ্ছন্নতায় ২ হাজার সেচ্ছাসেবক
ছবি : ঢাকাপ্রকাশ
টাঙ্গাইলের লৌহজং নদী দখল- দূষণে জর্জরিত নদীতে আবর্জনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার কার্যক্রম শুরু করেছেন- টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক মো. কায়ছারুল ইসলাম।
শুক্রবার (১ মার্চ) সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে টাঙ্গাইল পৌর শহরের হাউজিং মাঠ এলাকায় লৌহজং নদীর ময়লা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন- টাঙ্গাইল (সদর- ৫) আসনের সংসদ সদস্য মো. ছানোয়ার হোসেন।
নদী পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম উদ্বোধনকালে উপস্থিত ছিলেন- জেলা প্রশাসক মো. কায়ছারুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. ওলিউজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শরফুদ্দিন (এসপি পদোন্নতিপ্রাপ্ত), টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এসএম সিরাজুল হল আলমগীর, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান আনছারী, টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি জাফর আহমেদ প্রমুখ।
লৌহজং নদীর ৪ কিলোমিটার এলাকা নির্ধারণ করে টাঙ্গাইল শহরের হাউজিং ব্রিজপাড় থেকে বেড়াডোমা ব্রিজ পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার নদীর বর্জ্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কার্যক্রমে বিডি ক্লিনের প্রায় ২ হাজার সদস্য অংশ নেন। এ কাজে সার্বিক সহযোগিতা করছে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসন ও টাঙ্গাইল পৌরসভা।
স্থানীয়রা জানায়, লৌহজং নদীটি সদর উপজেলার যুগনী থেকে বুড়িগঙ্গা পর্যন্ত ৭৫ কিলোমিটার দীর্ঘ। এক সময় শহরের নিরালা মোড় এলাকায় এ নদীর নৌবন্দর ছিল। দেশ-বিদেশ থেকে লঞ্চ, স্টিমার, জাহাজ ও বড় বড় নৌকা এ নৌবন্দরে ভিরতো। এখানে ছিল মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক পরিবেশ। বর্তমানে এসব কিছুই যেন রূপকথার গল্প। দীর্ঘদিন ধরে নদীটি খনন না করায় নাব্যতা হারিয়েছে। এ সুযোগে দুই তীরের বাসিন্দারা কৌশলে প্রথমে ময়লা-আবর্জনা ফেলে দখল করছে। পরবর্তীতে স্থায়ী ভবন, দেওয়াল ও স্থাপনা নির্মাণ করছে। এছাড়াও বিভিন্ন মিল-কারখানা ও শহরের সব ময়লা আবর্জনা নদীতে ফেলে দূষিত করা হচ্ছে পানি।
এ ছাড়াও টাঙ্গাইল শহরের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া লৌহজং নদী ময়লা, আবর্জনা ও কচুরিপানায় ভরে গেছে। এছাড়া কল-কারখানার বর্জ্যে নদীর পানি দূষিত হচ্ছে। ফলে নদীর পঁচা পানি প্রতিনিয়ত দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। নদীর দুই তীরের পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। এর প্রভাব পড়ছে জীববৈচিত্রে। প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে প্রায় ৭ বছর আগে নদী উদ্ধার কার্যক্রম শুরু হয়। তবে প্রায় ৪ বছর ধরে কার্যক্রম না থাকায় অবৈধ দখলদাররা ফের জেঁকে বসেছে। ফলে নদীটি মৃত খালে পরিণত হয়েছে।
২০১৬ সালে জেলা প্রশাসনের সহায়তায় নদীটি দখল ও দূষণমুক্ত করার জন্য আন্দোলনে নামে স্থানীয়রা। ওই বছরের ২৯ নভেম্বর নদীটি দখল ও দূষণমুক্ত করার কার্যক্রম উদ্বোধন করেন, তৎকালীন জেলা প্রশাসক মো. মাহবুব হোসেন। ওই সময়ে শহরের পুলিশ লাইনস হাজরাঘাট এলাকা থেকে বেড়াডোমা পর্যন্ত চার কিলোমিটার দখল ও দূষণমুক্ত করা হয়। গত চার বছরে আর কোনো কার্যক্রম না থাকায় নদীর পানি আর ব্যবহার উপযোগী নেই। নদীর স্বাভাবিক গতি হারিয়ে সরু খালে পরিণত হয়েছে।