শাশুড়ির সাথে পরকীয়ার জেরে শশুরকে হত্যা
ছবি: সংগৃহীত
লক্ষ্মীপুরে জামাতার সাথে নিজের স্ত্রীর পরকীয়ার জেরে খুন হন জুলফিকার আলী মামুন নামে এক ব্যক্তি। এ ঘটনায় আদালত মেয়ে জামাতা রাকিব হোসেন ও স্ত্রী শাহিনুর বেগমকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন। একই সাথে তাদের প্রত্যেকের ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
বুধবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন। রায়ের সময় দণ্ডপ্রাপ্ত দুইজন আদালতে উপস্থিত ছিল। তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
ভিকটিম জুলফিকার লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের বিরাহিমপুর গ্রামের মৃত সফি উল্যা পাটওয়ারীর ছেলে। তিনি ঢাকা শহরে পান বিক্রেতা ছিলেন। দণ্ডপ্রাপ্ত শাহিনুর ভিকটিম জুলফিকার আলীর দ্বিতীয় স্ত্রী ও রাকিব হোসেন পৌরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের রাজিবপুর গ্রামের হাবিবুল্লাহ চৌধুরীর ছেলে ও ভিকটিমের মেয়ে জামাতা। ২০২২ সালের ৯ অক্টোবর দিবাগত গভীর রাতে এ দুইজন মিলে জুলফিকারকে শ্বাসরোধে হত্যা করে।
মামলার এজাহার ও আদালত সূত্র জানায়, শাহিনুর পরকীয়ায় আসক্ত ছিল। এ নিয়ে স্বামী এবং শশুর বাড়ির লোকজনের সাথে তার মনোমালিন্য দেখা দেয়। সে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর মজুপুর গ্রামে ভাড়া বাসায় থাকতো। পাশ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দা রাকিবের সাথে পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল তার।
বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য স্বামীর অমতে তাদের ১০ বছরের শিশু কন্যাকে পরকীয়া প্রেমিক রাকিবের সঙ্গে বিয়ে দেয় শাহিনুর। ঘটনার ২-৩ দিন আগে জুলফিকার ভাড়া বাসায় এসে তার স্ত্রী শাহিনুর ও মেয়ে জামাতা রাকিবকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পায়। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি হয়। রাতে তারা দুইজন মিলে জুলফিকারকে মারধর ও গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করে।
২২ অক্টোবর সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে ভিকটিমের মা ফাতেমা বেগম। মামলায় পুত্রবধূ শাহিনুর ও পরকীয়া প্রেমিক রাকিব এবং সহযোগী হিসেবে শাহ আহাম্মদসহ দুই থেকে তিন জনকে অজ্ঞাত আসামী করা হয়।
হত্যা মামলাটি তদন্ত কর্মকর্তা শাহিনুর এবং রাকিবকে অভিযুক্ত করে ৩০ নভেম্বর আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দেন ৷ এছাড়া মামলার ৩ নম্বর আসামী শাহ আহাম্মদকে মামলার অভিযোগ থেকে অব্যাহতির আবেদন করেন। মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত এ রায় দিয়েছেন।