উপহার পেয়ে আনন্দে ভাসলো ৬শ শিক্ষার্থী
সবার হাতে নতুন স্কুল ব্যাগ, খাতা, কলম পেন্সিলসহ বিভিন্ন শিক্ষা উপকরণ। সে কি উচ্ছ্বাস তাদের। কারও চোখ নতুন ব্যাগে। কেউ ব্যাগ খুলে পরখ করছে খাত-কলম। সবার চোখে-মুখে আনন্দ! বৃহস্পতিবার এমন দৃশ্য দেখা যায় নওগাঁর সদর উপজেলার গাংজোয়ার উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে।
বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১২টায় সদর উপজেলার গাংজোয়ার উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আর্ন্তজাতিক দাতা সংস্থা ‘লাইফ’ এর সহযোগিতায় বেসরকারি সংস্থা ‘স্যোসাল এইড’ এবং ‘রানি’ এ আয়োজন করে।
এ সময় সদর উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মাহমুদ আকতার, শিক্ষা একাডেমিক কর্মকর্তা এস.এম. ওয়াজেদ আলী, চন্ডিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খুরশিদ আলম রুবেল, স্কুলের প্রধান শিক্ষক সাইদুর রহমান, রানির প্রধান নির্বাহী ও স্যোসাল এইডের পরামর্শক ফজলুল হক খান, সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক আবু হানিফ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। পরে ৬শ শিক্ষার্থীর মাঝে স্কুল ব্যাগ, খাতা, কলম পেন্সিলসহ বিভিন্ন শিক্ষা উপকরণ তুলে দেওয়া হয়।
শিক্ষা উপকরণ পেয়ে চুনিয়াগাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী তানভী আক্তার বলে, ‘আমার বাবা নেই। মা অন্যের বাড়িতে কাজ করে আমার পড়াশোনা ও সংসার চালায়। বাড়ি থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে আমাদের স্কুল। বইগুলো হাতে করে নিয়ে প্রতিদিন স্কুলে যেতে অনেক কষ্ট হয়। অনেক সময় ঘামে বই ও খাতার পৃষ্টা নষ্ট হয়ে যায়। আজ স্কুলে শিক্ষা উপকরণ দেওয়া হয়েছে। এতগুলো শিক্ষা উপকরণ পেয়ে আমি খুশি।’
ইলশাবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী শাহাদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার বাবা একজন ভ্যান চালক। একসঙ্গে এতগুলো শিক্ষা উপকরণ কিনে দেওয়ার মতো সামর্থ্য নেই। আজ শিক্ষা উপকরণ পেয়ে অনেক উপকার হলো। যা জরুরি প্রয়োজন ছিল আমার। আয়োজকদের অশেষ ধন্যবাদ জানাই।’
শিমুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাদিয়া আক্তার বলেন, ‘আমার আব্বু মানুষের বাড়িতে শ্রমিকের কাজ করে। স্কুলের বইগুলোর জন্য ব্যাগের খুব প্রয়োজন ছিল। ব্যাগের পাশাপাশি খাতা, কলম পেন্সিলসহ অনেকগুলো শিক্ষা উপকরণ পেয়েছি। এগুলো পেয়ে আমার অনেক ভালো লাগছে।’
‘রানি’র প্রধান নির্বাহী ও ‘স্যোসাল এইড’-র পরামর্শক ফজলুল হক খান ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, আর্ন্তজাতিক দাতা সংস্থা ‘লাইফ’ এর সহযোগিতায় সদর উপজেলার চুনিয়াগাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়, চুনিয়াগাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইলশাবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়, শিমুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গাংজোয়ার উচ্চ বিদ্যালয় ও গাংজোয়ার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এর ৬শ দরিদ্র ও মেধাবি শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে। শিক্ষা উপকরণগুলো পেয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে যে উচ্ছ্বাস তা দেখে খুব ভালো লেগেছে। আমরা চেষ্টা করবো আগামীতেও অন্য স্কুলগুলোর দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ দেওয়ার।’
/এএন