তীব্র শীতে শীতবস্ত্রের অভাবে বিপর্যস্ত জনজীবন
বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) থেকে রংপুরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সঙ্গে বইছে হিমেল হাওয়া। কুয়াশা কম থাকলেও উত্তরের হিমেল বাতাসে কাবু করে ফেলেছে এ জনপদের মানুষদের। শীতবস্ত্রের অভাবে শীতার্ত মানুষ খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
হঠাৎ কনকনে শীতে স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। সন্ধ্যা হলেই হাট-বাজার, রাস্তা-ঘাট ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। রংপুর আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজার রহমান বলেছেন, ‘গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির কারণে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। দিনের তাপমাত্রা একরকম থাকলেও রাতের তাপমাত্রা কমবে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ দশমিক ২২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। একই সময়ে রংপুরে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় গতকাল বুধবার সন্ধায় ১৪ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে শুক্রবার থেকে তাপমাত্রা আরও কমবে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাবের চেয়ে মাঠে শীতের তাপমাত্রা অনেক কম বলে জানান এলাকাবাসী।
জীবিকার তাগিদে শীত উপেক্ষা করে ঘর থেকে বের হয়ে স্বল্প আয়ের মানুষেরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। শীতের প্রকোপে শীতজনিত নানা রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। শিশু ও বৃদ্ধরা আক্রান্ত হচ্ছেন সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়া সহ শীতজনিত নানা রোগে।
কনকনে ঠাণ্ডায় গরম কাপড়ের অভাবে শীতে কাঁপছে রংপুরের পীরগাছা, কাউনিয়া ও গঙ্গাচড়া উপজেলার তিস্তা নদীর চরাঞ্চলের দরিদ্র মানুষ। সরকারিভাবে শীতার্তদের জন্য কম্বল বরাদ্দ দেওয়া হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল্য। এ কারণে দরিদ্র পরিবারের ভাগ্যে এখনও তা জোটেনি। এই তিন উপজেলার চরাঞ্চলে প্রায় ২৫ হাজার হতদরিদ্র পরিবারের বাস। নদীভাঙনের শিকার এসব পরিবার জমি ও সম্বলহারা।
কাউনিয়া উপজেলার শোভাঘাট চরের আছিয়া বেওয়া (৫৫) বলেন, ‘আইতোত তিস্তা নদীর ঠাণ্ডা বাতাস হু-হু করি বেড়ার ফাঁক দিয়া ঘরোত ঢোকে, তখন কোঁকড়া নাগি (লেগে) থাকা ছাড়া উপায় থাকে না ‘
পীরগাছা উপজেলার চর গাবুড়া গ্রামের আফছার আলী বলেন, ‘যে ঠাণ্ডা পড়েছে, তাতে কাজ কাম ঠিকভাবে চলে না। গরম কাপড় কিভাবে কিনমো বাহে।’
রংপুর জেলা ভারপ্রাপ্ত প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. রাসেল মিয়া বলেন, ‘জেলার আট উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে ৪৭০টি করে কম্বল সরকারিভাবে বিতরণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী দপ্তর থেকে জেলা প্রশাসন ৫২ হাজার ৬শ কম্বল ও আট উপজেলার জন্য নগদ ৮৫ লাখ ৫৬ হাজার টাকা, রংপুর সিটি কর্পোরেশনে ১৫ লাখ টাকা, ৩টি পৌরসভায় ২ লাখ ৩৭ হাজার টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। পর্যাক্রমে আরও বরাদ্দ পাওয়া যাবে।
/এএন