পাওনা টাকা চাওয়ায় পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

ফেনীর পরশুরামে পাওনা টাকা চাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে একজনকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে এ পিটুনির ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। গত বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় পরশুরামের দক্ষিণ কোলাপাড়ায় একটি ফিস ফিড দোকানের সামনে এ ঘটনাটি ঘটেছে।
নিহত ব্যক্তির নাম শাহীন চৌধুরী (৫৫)। তিনি স্থানীয় মির্জানগর ইউনিয়নের দক্ষিণ কাউতলী গ্রামের আবদুর রহমানের ছেলে এবং এলাকায় একটি দোকানের কর্মচারী ছিলেন।
এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী মোছা. ফিরোজা বেগম বাদী হয়ে ইউপি চেয়ারম্যানসহ পাঁচ জনের নাম উল্লেখ ও ছয়জনকে অজ্ঞাত আসামি করে বৃহস্পতিবার রাতে পরশুরাম মডেল থানায় মামলা করেছেন। পুলিশ গতরাতেই চার জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
গ্রেপ্তার চারজন হলেন, মো. এনায়েত (২২), মো. রহিম (২১), মো.জাহিদ হোসেন আরিফ (৩৪) ও আজিজ (২৬)। শুক্রবার সকালে স্থানীয় লোকজন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে এলাকায় ও উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, শাহীন চৌধুরী স্থানীয় ছিদ্দিক ফিস ফিড দোকানে কর্মচারী হিসেবে চাকরি করতেন। দোকানটি থেকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান ভুট্টোর ঘনিষ্ট সহযোগী হিসেবে পরিচিত জনৈক আবুল হাসেম ৭ লাখ টাকার মালামাল বাকিতে নিয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার বিকালে ওই বকেয়া টাকা পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু বিকালে টাকা পরিশোধ না করে সন্ধ্যায় পরিশোধ করা হবে বলে জানায় আবুল হাসেম। সন্ধ্যায় দোকান মালিকের নির্দেশে আবারও ওই বকেয়া টাকা চাওয়ায় আবুল হাসেম ক্ষিপ্ত হয়। এ নিয়ে শাহীন চৌধুরীর সঙ্গে হাসেমের বাক বিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে আবুল হাসেম মুঠোফোনে ইউপি চেয়ারম্যানকে খবর দেন। চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে দুটি মোটরসাইকেলে কয়েকজন সেখানে এসে শাহীন চৌধুরীকে কিল-ঘুষি মারতে শুরু করে। এরপর চেয়ারম্যানের পক্ষে আরও দুটি মোটরসাইকেলে করে ৪ যুবক সেখানে উপস্থিত হয়। তারাও শাহীন চৌধুরীকে মারধর করেন। মারধরের এক পর্যায়ে দোকান কর্মচারী শাহীন চৌধুরী মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এ অবস্থায় চেয়ারম্যানসহ তার সহযোগীরা সেখান থেকে চলে যায়।
স্থানীয়রা শাহীন চৌধুরীকে দ্রুত পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে (শাহীন) মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে পরশুরাম থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ফেনী ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে। ইউপি চেয়ারম্যান নুরুজ্জমান ভূট্টু ঘটনার পর থেকে পলাতক।
পরশুরাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালেদ হোসেন জানান, পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। অন্যদের গ্রেপ্তারের অভিযান চলছে।
এএম/এএন
