নেত্রকোনায় নদ-নদীতে বাড়ছে পানি, ঝুঁকিতে ফসলরক্ষা বাঁধ
নেত্রকোনার হাওর অঞ্চল খালিয়াজুরীর ধনু নদের পানি অস্বাভাবিক বৃদ্ধির পাওয়ায় কির্তনখোলার ফসলরক্ষা বেড়ি বাঁধটি ঝুঁকির মুখে পড়েছে। পানির চাপে যেকোনো মুহূর্তে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন এলাকার কৃষকরা।
এলাকার কৃষকেরা জানান, প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) কিছু অনিয়মের কারণে প্রত্যেকটি বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ফলে, আগাম বন্যায় ফসল পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় ভুগছেন তারা।
চাকুয়া গ্রামের কৃষক বাবুল রায় বলেন, বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে এবং প্রচণ্ড বাতাস থাকায় হাওরে ঢেউ উঠছে। ঢেউয়ের আঘাতে বাঁধ ক্রমশই দুর্বল হয়ে পড়ছে।
সংশ্লিষ্ট কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, খালিয়াজুরী হাওরে প্রায় ২১ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে। তবে ইতোমধ্যে পাহাড়ি ঢলের কারণে বেড়ি বাঁধের বাইরে বিপুল পরিমাণ জমির ধান তলিয়ে গেছে।
ঝুঁকিপূর্ণ বেড়ি বাঁধ পরিদর্শনে আসেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এমএল সৈকত, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. ফকরুজ্জামান (জুয়েল), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খালিয়াজুরী সার্কেল নেত্রকোনা মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম, খালিয়াজুরী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মুজিবুর রহমানসহ আরো অনেকেই।
আরও পড়ুন: সিলেটের হাওরে পাহাড়ি ঢল, ডুবছে ফসল
খালিয়াজুরী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ইয়াসিন খন্দকার বলেন, মনিটরিং ব্যবস্থা চালু রাখা আছে। কির্তনখোলা বাঁধরক্ষার জন্য সব ধরনের চেষ্টা হচ্ছে। তাছাড়া কৃষকরা স্বপ্রণোদিত হয়ে বাঁধে দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।
তবে পাইয়ার বাঁধ, শুক্কর মেম্বারের বাড়ি সংলগ্ন বাঁধ, পাইয়ার বাঁধ ঝুঁকিতে রয়েছে। কির্তনখোলা বাঁধে চাকুয়া, রানীচাপুর, বল্লী ও খালিয়াজুরী সাধারণ জনগণ বাঁধ রক্ষায় সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
নগর ইউনিয়নের মেম্বার ও পিআইসি সভাপতি কবীন্দ্র সরকার বলেন, ষাড়মারা বিলের বাঁধও ঝুঁকিপূর্ণ। পানি বেশি হওয়ায় প্রচণ্ড ঢেউ বাঁধে আঘাত করায় বাঁধ ঝুঁকিতে পড়েছে।
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী এমএল সৈকত বলেন, বাঁধ রক্ষা করার জন্য সব ধরনের কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে খালিয়াজুরী ধনু নদে বিপদ সীমার কাছাকাছি দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় প্রত্যেকটি বাঁধ ঝুঁকিতে রয়েছে। সকল পিআইসি, কৃষকসহ সকলকে নিয়ে সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
এমএসপি