সিলেটের হাওরে পাহাড়ি ঢল, ডুবছে ফসল
সুনামগঞ্জের পর এবার বানের জলে তলিয়ে যাচ্ছে সিলেটের হাওরগুলো। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বাড়ছে নদীর পানি। বাড়তে থাকা পানি এখন সিলেটের বিভিন্ন হাওরে প্রবেশ করতে শুরু করেছে। ফলে হাওরের আধা-পাকা ও কাঁচা বোরো ফসল পানিতে নিমজ্জিত হচ্ছে। হুমকির মুখে পড়ছে বেশ কয়েকটি ফসল রক্ষাবাঁধ।
সোমবার (৪ এপ্রিল) গোয়াইনঘাট উপজেলার কয়েকটি হাওরে পানি প্রবেশ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মসজিদ-মাদরাসা থেকে মাইকিং করে কৃষকদের বিভিন্ন বিলের মাটি ভরাট করে বাঁধ রক্ষায় ডাকা হচ্ছে। এ অবস্থায় ফসল রক্ষা করতে ও বাঁধ বাঁচাতে কোদাল হাতে টিন-কাঠ বাঁশ নিয়ে ছুটছেন কৃষকরা।
উপজেলার পূর্ব জাফলং পশ্চিম জাফলং রুস্তুমপুর তোয়াকুল ও ডৌবাড়ী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার হাওরাঞ্চলের বোরো ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। পানির চাপে হুমকির মুখে পড়েছে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বোরো ফসল। চোখের সামনে ফসল হারোনোর শঙ্কায় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে কৃষকদের। কৃষিণীরাও দুশ্চিন্তায় ভুগছেন।
স্থানীয় কৃষকরা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে।
পাহাড়ি ঢলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে গোয়াইনঘাট উপজেলায় দেখা দিয়েছে বন্যা পরিস্থিতি। তলিয়ে যাচ্ছে কৃষকের কয়েকশ হেক্টর জমির বোরো ধান।
আবার কোথাও রাস্তাঘাট ভেঙে গিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থাও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। উপজেলার পূর্ব জাফলং ইউনিয়নের আসামপাড়া জামে মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় প্রবল বন্যার স্রোতে ভেঙে গেছে রাস্তা। নিম্নাঞ্চলের অনেক জায়গায় ঘরবাড়ি ও ডুবেছে। যাতায়াতে বেড়েছে মানুষের ভোগান্তি। উপজেলার আমির মিয়া উচ্চ বিদ্যালয় হাজী সোহরাব আলী উচ্চ বিদ্যালয়সহ অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি উঠে গেছে।
পরগানা বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বলেন, উনাইর হাওর রাস্তায় মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে।
তিনি বলেন, রাস্তা নির্মাণ কাজের জন্য যে বাইপাস রাস্তা করা হয়েছিল তা পানিতে ভেঙে যাচ্ছে। অকাল বন্যার ধকল সইতে উপজেলায় বসবাসকারী মানুষের অনেক ভোগান্তি ও বেগ পেতে হবে।
রুস্তুমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন সিহাব বলেন, বন্যা পরিস্থিতির কথা কী বলব, বলার ভাষা নেই। কৃষকদের বোরো ফসল পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রায়হান পারভেজ বলেন, ডুবে যাওয়া ধানের জমি ও এলাকা পরিদর্শন করে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে কাজ করছি। পরিদর্শন শেষে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানাতে পারবো।
তিনি জানান, উপজেলার পূর্ব জাফলং, পশ্চিম জাফলং, রুস্তুমপুর ও ডৌবাড়ী ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের বোরো ফসলের জমি বর্তমানে পানির নিচে আছে।
এমএসপি