বরিশালে সাবেক সেনা কর্মকর্তার স্ত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু
বরিশালে সাবেক সেনা কর্মকর্তার স্ত্রীর মাথায় ইট মেরে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
রবিবার (৩ এপ্রিল) বিকাল ৩টার দিকে নগরীর নথুল্লাবাত সংলগ্ন ফিশারি রোড এলাকায় সেনা কর্মকর্তার নিজ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটেছে।
নিহত ব্যক্তি সাবেক সেনা কর্মকর্তা মো. গিয়াস উদ্দীনের স্ত্রী মোসা. আফিয়া খানম কনা (৪৫)।
আফিয়া খাতুন কনাকে (৪৫) সন্ধ্যায় জরুরি বিভাগে নিয়ে যায় তার স্বজনরা। পরে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত উল্লেখ করে জরুরি বিভাগ থেকে ওই নারীকে মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে তার মৃত্য হয়। তবে পরক্ষণেই বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত উল্লেখ করা ভর্তি টিকিটটি গায়েব করে দেওয়া হয়।
নিহতের স্বামী সাবেক সেনা কর্মকর্তা (অব) মো. গিয়াস উদ্দীন অভিযোগ করে বলেন, 'নগরীর ২৮ নং ওয়ার্ডের ফিশারী রোড এলাকায় আমার একখণ্ড জায়গায় একটি বাড়ি নির্মাণের চিন্তা করি। সেই সুবাদে বাড়ির কাজ করতে গিয়ে পরিচয় হয় স্থানীয় ২৮ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর জাহাঙ্গির হোসেনের ভাই তৌহিদুল ইসলাম মুন্নার সাথে। পরে তাদের কাজ না দেওয়ার কথা বললে আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়। সেই শত্রুতার জেরে রবিবার (৩ এপ্রিল) বাড়ির কাজ শুরু করার জন্য স্থানীয়দের মিষ্টি বিতরণকালে আদম আলী হওলাদারের ছেলে তৌহিদুল ইসলাম মুন্না এবং তার অনুসারী হেমায়েত উদ্দিন মো. জুম্মান বাড়ির কাজ করার দাবি করে আমার সঙ্গে কথার কাটাকাটি শুরু করে। এক পর্যায়ে কোনো কারণ খুঁজে না পেয়ে তার স্ত্রীর সঙ্গে আমার সম্পর্কের কথা বলে আমাকে মারধর মারে। এসময় আমার স্ত্রী আফিয়া খানম আমাকে বাঁচাতে আসলে তাকে লক্ষ্য করে ইট ছুঁড়ে। সেই ইট আমার স্ত্রীর মাথার পেছনে লাগলে সে আঘাত পায়'
তিনি আরও বলেন, 'পরে গুরুতর অবস্থায় স্ত্রীকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসি। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আমি এ ঘটনায় আইনের আশ্রয় নেব।'
তবে এ ঘটনায় অভিযুক্ত তৌহিদুল ইসলাম মুন্নার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মহিলা মেডিসিন বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. শুভ ওযা বলেন, 'প্রথমে আমরা রোগীকে অচেতন অবস্থায় পেয়েছি। পরবর্তীকালে তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পরে জানতে পারি তিনি হাই প্রেশারের রোগী ছিলেন। তা ছাড়া এই ঘটনার আগে থেকেই তিনি হাইপার্ড অবস্থায় ছিলেন। যার ফলে তার মাথায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের সৃষ্টি হয়। আর এ কারণেই তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।'
তবে তার শরীরে কোনো ইনজুরি পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন এই কর্তব্যরত চিকিৎসক।
বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমলেশ হালদার বলেন, 'ঘটনাটি শুনেছি। তার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে লাশের ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেব।'
টিটি/