সেই তিন বোনকে পুলিশ দিচ্ছে ঘর, স্বজনরা হত্যার হুমকি
দখল হয়ে যাওয়া পৈতৃক জমিজমা ও বসতঘর ফিরে পেতে বরগুনায় কাফনের কাপড় পরে অনশন করা সেই তিন বোনকে তাদের জমি বুঝিয়ে দিয়েছে পুলিশ। তবে বিষয়টি নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ করায় প্রতিপক্ষ স্বজনরা তাদের হত্যার হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন তিন বোন।
রবিবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে গণমাধ্যামের কাছে এমনটাই অভিযোগ করেন বামনা উপজেলার উত্তর গোলাঘাটা গ্রামের মৃত আ. রশিদ হাওলাদারের তিন মেয়ে রুবি আক্তার, জেসমিন আক্তার ও মোসা. রোজিনা।
বড় বোন রুবি আক্তার বলেন, আমরা অনশন করার পরে এসপি স্যার আমাদের জমি বুঝিয়ে দেন এবং একটি পাকা ঘড় উপহার দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেন। বর্তমানে ওই ঘরের কাজ চলছে। তবে ঘরে ওঠার আগেই আমাদের হত্যার হুমকিসহ এলাকা থেকে বিতাড়িত করার পায়তারা করছে প্রতিপক্ষ স্বজনরা।
তিনি আরও বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে ২৮ মার্চ বামনা থানায় লিখত অভিযোগ করেছি। অভিযোগের পর থেকে প্রতিপক্ষ স্বজনরা তাদের আত্মীয়-স্বজনদের দিয়ে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করছেন। এমনকি থানার ওসি স্যারকে নিয়েও মিথ্যাচার করছেন। এতিম বলে বারবার আমাদের সঙ্গে এমনটা হচ্ছে, আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাই।’
এবিষয়ে বামনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বশিরুল আলম বলেন, ওই তিন বোনকে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে দেওয়া উপহারের ঘর নির্মাণের কাজ চলমান। পুলিশ সুপারের নির্দেশ অনুযায়ী আমি নিজেই ওই কাজের তদারকি করছি।
তিনি আরও বলেন, ২৮ মার্চ তিন বোন লিখিত অভিযোগ করলে ওই দিনই আমি খোঁজ খবর নিই। ক্ষিপ্ত হয়ে ২৯ মার্চ তিন বোনের প্রতিপক্ষের আত্মীয় রাসেল মল্লিক ও তার বোন সাহানাকে দিয়ে উল্টো আমার বিরুদ্ধেই ঘুষ দাবিসহ নানা ধরনের মিথ্যা অভিযোগ এনেছেন, সংঘবদ্ধ ষড়যন্ত্র চালাচ্ছেন। চক্রান্তকারীরা যতই শক্তিশালী হোক না কেন পুলিশ বিভাগ এতিম তিন বোনের পাশে থাকবে।
এবিষয়ে যোগাযোগ করা হলেও অভিযুক্তদের কেউই কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
উল্লেখ্য, দখল হয়ে যাওয়া নিজেদের জমি-জমা ও বসতঘর ফিরে পেতে ২৩ ফেব্রুয়ারি বরগুনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে কাফনের কাপড় পরে অনশনে বসেন তিন বোন। খবর পেয়ে বরগুনার পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর মল্লিক গিয়ে তাদের বুঝিয়ে অনশন প্রত্যাহার করান। পরে তিনি ওই তিন বোনকে নিয়ে বামনার গোলাঘাটায় তাদের গ্রামের বাড়িতে যান। সেখানে অভিযুক্ত স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন এবং উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে ওই তিন বোনকে তাদের পৈতৃক ভিটেমাটি বুঝিয়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে সেখানে তিন বোনের জন্য জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে একটি পাকা ঘর নির্মাণের কাজ চলছে।
এসএন