সাতক্ষীরায় শ্রমিক ইউনিয়নের দু'পক্ষে সংঘর্ষ, আহত ৪
শ্রমিক ইউনিয়নের ভোট না হওয়ার জের ধরে সাতক্ষীরায় দুই গ্রুপের ভিতরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ভাঙচুর করা হয়েছে স্থানীয় একটি পত্রিকা অফিসে। রবিবার (৩ এপ্রিল) দুপুর থেকে কয়েক দফায় সাতক্ষীরা বাস টার্মিনালে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় উভয়পক্ষের চারজন আহত হন। এ ঘটনায় ছয়টি রুটে প্রায় তিন ঘণ্টা বন্ধ ছিল বাস চলাচল। আহতদের সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী শ্রমিক জানান, গতকাল শনিবার শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। তবে শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি শেখ রবিউল ইসলাম ভোটার তালিকাসহ আগের কমিটির স্বজনপ্রীতি ও বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ এনে হাইকোর্টে পিটিশন দাখিল করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট নির্বাচনের উপর তিন মাসের স্থগিতাদেশ দেন। এ নিয়ে বাস টার্মিনালে শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল।
তারা আরও বলেন, রবিবার দুপুর ১২টার দিকে বাস টার্মিনালের ভেতরে রবি গ্রুপের শ্রমিক রতন ও মাসুম হোসেনকে পিটিয়ে আহত করেন জাহিদ গ্রুপের আক্তার হোসেন, টিপু, শাহাজাহান হোসেন ও মিলন হোসেন। পরে রবি গ্রুপের শ্রমিকরা পাল্টা হামলা চালায় জাহিদ গ্রুপের লোকজনের উপর। এতে টিপু ও আক্তার হোসেন আহত হন। এর জের ধরে জাহিদ গ্রুপের লোকজন ইট-পাটকেল ছোড়ে বাস, মিনিবাস মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক আবু আহমেদের সম্পাদনায় প্রকাশিত দৈনিক কালের চিত্র অফিসে। এতে পত্রিকার অফিস কক্ষের বাইরের থাইগ্লাস ভেঙে যায়।
এ বিষয়ে দৈনিক কালের চিত্র পত্রিকার ম্যানেজার গাজী হাবিব জানান, সম্প্রতি পত্রিকা অফিসে হামলাসহ টর্মিনাল সংক্রান্ত বেশ কিছু সংবাদ দৈনিক কালের চিত্রসহ বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশের জের ধরে রবিবার বেলা সাড়ে ১২টায়
শ্রমিকরা পুনরায় দৈনিক কালের চিত্র পত্রিকা অফিসে হামলা করে। তারা ইট-পাটকেল মেরে পত্রিকা অফিসের দরজা, জানালার গ্লাসসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র ভাঙচুর করে। এ ছাড়াও অফিসের সামনে থাকা ডিসকভার
মোটরসাইকেলটি ভাঙচুর করে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ প্রসঙ্গে বাস শ্রমিক ইউনিয়নের সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুর রহমান বলেন, ‘আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। পরে গণ্ডগোলের খবর শুনে টার্মিনালে আসি। এসে শুনি, রবির লোকজনের হাতে শ্রমিক টিপু ও আক্তার আহত হয়েছেন।’
শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি শেখ রবিউল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচনের স্থগিতাদেশ হওয়া আমাদের জন্য কাল হয়েছে। আমাদের যেখানে-সেখানে মারছে, অথচ প্রশাসন কিছু করছে না।’
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম কবির জানান, ‘টার্মিনালের পরিস্থিতি এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বাস চলাচল শুরু হয়েছে। এ ঘটনায় কেউ এখনও থানায় অভিযোগ করেননি।’
এসআইএইচ