গাইবান্ধায় বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস পালিত
প্যারাসিটামল ও ব্যথানাশকসহ অন্যান্য ওষুধ সামান্য মনে করে গর্ভবতী মা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া খেলে তা ভ্রুণের অঙ্গ সৃষ্টিতে বাঁধার সৃষ্টি করতে পারে। গর্ভবতী মা যদি দীর্ঘদিন ধরে রক্তস্বল্পতায় ভোগেন, পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার না খান তবে ভ্রুণের গঠনগত বিকলাঙ্গ দেখা দেয় ও মস্তিস্কের বিকাশ ব্যাহত হয়। গর্ভবতী মা ফরমালিনযুক্ত খাদ্য খেলে বিকলাঙ্গ শিশুর জন্ম হতে পারে। ধুমপায়ীসহ তামাকজাত দ্রব্য থেকে গর্ভবতী মাকে দূরে রাখতে হবে। এসবসহ আরও বিভিন্ন কারণে শিশু যে কোন ধরনের বিকলাঙ্গ বা প্রতিবন্ধীতা নিয়ে জন্মগ্রহণ করতে পারে। তাই প্রত্যেক বাবা-মাসহ পরিবারের সকলকে ও আশেপাশের মানুষকে সচেতন হতে হবে।
এমন বিশ্ব গড়ি, অটিজম বৈশিষ্টসম্পন্ন ব্যক্তির প্রতিভা বিকাশ করি প্রতিপাদ্যে বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে গাইবান্ধায় আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা। শনিবার দুপুরে গাইবান্ধা শহরের পাবলিক লাইরেী অ্যান্ড ক্লাব মিলনায়তনে এই সভার আয়োজন করে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসন ও জেলা সমাজসেবা কার্যালয়। এতে সহযোগিতা করে জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদ, এনডিডি সুরক্ষা ট্রাস্ট, জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউণ্ডেশন ও প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়সমূহ।
গাইবান্ধা সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন শাহ্য়ের সঞ্চালনায় ও জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. ফজলুল হকের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মো. অলিউর রহমান। বক্তব্য রাখেন জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. কামরুল হাসান সরকার, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল কর্মকর্তা মো. রবিউল পারভেজ প্রামানিক, গাইবান্ধা প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তা মো. আখতার হোসেন, বীরমুক্তিযোদ্ধা আলী আকবর মিয়া, এসকেএস ফাউণ্ডেশনের প্রতিনিধি মো. আশরাফুল আলম, গাইবান্ধা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইদ্রিস আলী সরকার, সাংবাদিক গোবিন্দ লাল দাস, অধিকার চাই প্রতিবন্ধী উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কার পাওয়া প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর মা মঞ্জিলা হক, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী মো. সজিব প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের সমাজসেবা কর্মকর্তা (রেজিস্ট্রেশন) মিজানুর রহমান মল্লিক, সাদুল্লাপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মানিক চন্দ্র রায় ও গাইবান্ধা সমন্বিত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষা কার্যক্রমের হাউজ প্যারেন্ট কাম টিচার মো. রিয়াজুল হকসহ বিভিন্ন প্রতিবন্ধী বিষয়ক প্রতিষ্ঠান, সংগঠন ও বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ অভিভাবককরা।
আলোচনা সভায় বক্তারা আরও বলেন, অপরিণত বয়সে মা হলে ত্রুটিপূর্ণ সন্তান জন্ম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আবার বেশি বয়সে অন্ত:ক্ষরাগ্রন্থির স্বাভাবিক কার্যাবলি হ্রাস পায়। তাই ৩৫ বছরের পর প্রথম সন্তান জন্মের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। গর্ভাবস্থায় মা ঘন ঘন খিঁচুনি হলে গর্ভস্থ শিশুর শরীরে অক্সিজেনের অভাব ঘটে ও তার মস্তিস্কের ক্ষতি করে। গর্ভাবস্থায় বিশেষত প্রথম তিন মাসে এক্সরে বা অন্য কোনো ভাবে মায়ের দেহে যদি তেজস্ক্রিয় রশ্মি প্রবেশ করে তবে গর্ভস্থ ভ্রুণের নার্ভতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয় ও সন্তান প্রতিবন্ধী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই এসব বিষয়ে প্রত্যেককে সচেতন হতে হবে।
কেএফ/