নওগাঁয় কলেজ অধ্যক্ষ ও হিসাব রক্ষকের বিরুদ্ধে নোটিশ
নওগাঁর রাণীনগর অনার্স মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন আর্থিক অনিয়ম ও শিক্ষক- কর্মচারীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের জন্য কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ওই কলেজের হিসাব রক্ষক সুমন চন্দ্রকেও কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন কলেজের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার মাহাতো।
বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) নোটিশের মাধ্যমে তাদের আগামী সাত দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলেছেন ইউএনও।
নোটিশ সূত্রে জানা গেছে, অধ্যক্ষ মিরাজুল ইসলাম কলেজ পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্ত ব্যতিত সাময়িক বরখাস্তকৃত প্রদর্শক এএসএম রায়হান আলমকে মামলা প্রত্যাহারের জন্য চাপ প্রয়োগ, সভাপতির অনুমোদন ব্যতিত এডহক কমিটির প্রস্তাব জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রেরণ করেছেন এবং কলেজের শিক্ষক কর্মচারীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে আসছেন। এই বিষয়গুলোতেও অধ্যক্ষকে ইতিপূর্বে একাধিকবার কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাবে তাকে ক্ষমা প্রদর্শন করা হয়। এরপর অধ্যক্ষ কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক সুজিত চন্দ্র সাহা ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক সনজীব কুমার সাহার বেতন ভাতা করে দেওয়ার নামে তাদের কাছ থেকে প্রথমে ১০ লাখ টাকা উৎকচ নেন এবং পরবর্তিতে আরো ৬ লাখ টাকা প্রদানের জন্য বার বার চাপ প্রয়োগ করে আসছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত ওই দুই শিক্ষকের কোনও বেতন-ভাতা হয়নি। এ ছাড়াও গত বছরের মার্চ মাসের ২১ তারিখ থেকে ২২ সালের মার্চের ৩১ তারিখ পর্যন্ত কলেজের আয় হয়েছে ১৪ লাখ ৪৭ হাজার ৯৫২টাকা, যার মধ্যে অধ্যক্ষ বিভিন্ন সময়ে কলেজের হিসাব নম্বরে ৭ লাখ ৬৫ হাজার ৯৫০টাকা জমা দিয়েছেন। অবশিষ্ট ৬ লাখ ৮২ হাজার ২ টাকা কলেজের হিসেবে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এই সব কর্মকাণ্ড চাকরি বিধির পরিপন্থী হওয়ার কারণে অধ্যক্ষকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ মিরাজুল ইসলাম বলেন, 'আমি এখনও নোটিশ পাইনি। ওই দুই শিক্ষকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে প্রয়াত সাংসদ ইসরাফিল আলম। আর আমি বাধ্য হয়েই তাতে স্বাক্ষর করেছি। এ ছাড়াও অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে হিসাব রক্ষক সুমন শুধুমাত্র কলেজের গত এক বছরের আয়-ব্যয় দেখিয়েছে কিন্তু কলেজের কাজে ওই এক বছরে বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ডে যাওয়াসহ যে খরচ হয়েছে সেটা হিসাব রক্ষক না দেখিয়েই ব্যয়ের হিসাবটি করেছে। যার কারণে মনে হচ্ছে আমি অবশিষ্ট ৬ লক্ষাধিক টাকা আত্মসাৎ করেছি। আমার কাছে সকল হিসাব আছে। আমি নোটিশ পেলে অবশ্যই উপযুক্ত কাগজপত্রাদি দাখিল করে জবাব দিব।'
এ ব্যাপারে কলেজের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, 'ওই অধ্যক্ষকে বিভিন্ন কারণে একাধিকবার নোটিশ দিয়ে তাকে সাবধান করার চেস্টা করেছি। তবুও তিনি চাকরি পরিপন্থী এইসব কর্মকাণ্ড থেকে সরে আসেন নাই। আমি গত বৃহস্পতিবার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাসহ একাধিক কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে কলেজে গিয়ে বিষয়গুলো তদন্ত করেছি এবং অভিযোগগুলোর বিষয়ে যথেষ্ট সত্যতা পেয়েছি। আমি অতি দ্রুত অধ্যক্ষের বিষয়ে দৃষ্টান্তমূলক স্থায়ী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।'
এসআইএইচ