তিন বছর ধরে নষ্ট রমেক হাসপাতালের সিটি স্ক্যান মেশিন
রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে তিন বছর ধরে নষ্ট হয়ে আছে সিটি স্ক্যান মেশিন। ভোগান্তিতে পড়েছেন হাজার হাজার রোগী।
হাসপাতালে ভর্তি মুমূর্ষু রোগীদের প্রয়োজনীয় সিটি স্ক্যান করাতে বিভিন্ন বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যেতে হচ্ছে। এতে শুদু রোগীদের ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে না, টাকাও খরচ করতে হচ্ছে সাধ্যের বাইরে।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি জটিল রোগে আক্রান্ত নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক রোগীর স্বজন জানান, রোগ নির্ণয়ের জন্য হাসপাতালের চিকিৎসক সিটি স্ক্যান করার চিকিৎসা পত্র দেন। কিন্তু হাসপাতালে সিটি স্ক্যান মেশিন নষ্ট থাকায় বিপত্তিতে পড়তে হয়। রোগীর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে পরীক্ষার জন্য বাইরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে স্বজনরা ব্যর্থ হয়েছেন। এখন বিষয়টি অনেকটা ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালে সর্বশেষ সিটি স্ক্যান হয়েছে তিন বছর আগে। দুটি সিটি স্ক্যান মেশিনের মধ্যে ফিলিপস কোম্পানির ৬৪¯স্লাইস মডেলের সিটি স্ক্যান মেশিন আগে বিভিন্ন কারণে নষ্ট হলেও তা মেরামত করা হয়েছে। কিন্তু ২০১৯ সালের ১৯ মার্চ এটিকে পুরোপুরি বিকল ঘোষণা করা হয়। মেশিনটি স্থাপন করা হয়েছিল ২০১২ সালের ২ মার্চ।
সিমেন্স কোম্পানির সিঙ্গেল স্লাইস মডেলের দ্বিতীয় সিটি স্ক্যান মেশিন পুরোপুরি বিকল হয়েছে ২০১৯ সালের ৩০ আগস্ট। এটি স্থাপন করা হয় ২০০৬ সালের ৯ জুলাই। এ মেশিনও বেশ কয়েকবার মেরামত করে চালানো হয়েছিল। সিটি স্ক্যান বন্ধ হওয়ার আগের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, প্রতিদিন ৩৫ থেকে ৪০ জন রোগী বিভিন্ন রোগ নির্ণয়ে সিটি স্ক্যান করতে আসতেন।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. নাজমুন নাহার সাংবাদিকদের কাছে স্বীকার করেন, মেশিন নষ্ট হওয়ায় বর্তমানে সিটি স্ক্যান বন্ধ আছে। তিনি বলেন, মেশিনারিজ জিনিস যেকোনো মুহূর্তে খারাপ হতে পারে। তবে সিটি স্ক্যান মেশিনগুলো সম্পর্কে সব সময় তারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে আসছেন।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার মেডিসিন অ্যান্ড অ্যাপ্লায়েড সায়েন্সেসের প্রধান ডা. মো. মোরশেদ আলী বলেছেন, গুরুতর রোগীদের জটিল রোগ নির্ণয় করতে সিটি স্ক্যান করা খুবই জরুরি।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. রেজাউল করিম বলেছেন, সিটি স্ক্যান মেশিন সংস্কার বা মেরামত করে চালানোর অবস্থায় নেই। অত্যন্ত ব্যয় বহুল হওয়ায় নতুন মেশিন স্থাপনের চাহিদা বরাদ্দ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
এসএন