নাটোর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ
নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার বৈদ্যবেলঘরিয়ার বাসুদেবপুরের ‘নাটোর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র’র ড্রাইভিং ইনস্ট্রাক্টর পদে নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে!
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো ওই নিয়োগের জন্য প্রতিনিধি মনোনয়ন করলেও তার ধার ধারেননি প্রতিষ্ঠাটির প্রধান। তিনি নিজে ওই পদে গোপনে নিয়োগ দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন ওই পদের এক প্রার্থী।
বড়াইগ্রাম উপজেলার ধানাইদহ এলাকার আকতার আলী প্রামাণিক নামে এক প্রার্থী এ ব্যাপারে ৩ ফেব্রুয়ারি জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন।
এ বিষয়ক নথিপত্র থেকে জানা গেছে, ২০২১ সালের ২৭ ডিসেম্বর জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর পরিচালক (প্রশিক্ষণ পরিচালনা) প্রকৌশলী সালাহ উদ্দিনের সই করা পত্রে তিনি উল্লেখ করেন, স্কিলস ফর এমপ্লয়মেন্ট প্রোগ্রামের (seip) অর্থায়নে tranche-3 এর অধীনে বিএমইটির অধীন টিটিসি বিজনেস প্লানের শর্ত অনুযায়ী গেস্ট ট্রেইনার নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রতিনিধি মনোনয়ন করা হয়েছে। মনোনীত তিনজন প্রতিনিধি হতে একজন উপযুক্ত প্রতিনিধি নিয়ে আইএমটি বা টিটিসিকে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে নির্দেশনা দেওয়া হয় প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষকে। মনোনীত প্রতিনিধির মধ্যে ছিলেন পাবনা টিটিসির (টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার) অধ্যক্ষ, একজন উপপরিচালক (প্রশিক্ষণ) এবং একজন সহকারী পরিচালক (প্রশিক্ষণ)।
এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠান প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ গোলাম নবীকে ফোন করলে নামাজের পর কথা বলতে চান বলে রেখে দেন। কিন্তু পরে বার বার ফোন দেওয়া স্বত্বেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে পাবনা টিটিসির (টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার) অধ্যক্ষ মকছেদুল আলম জানান,তাকে ওই ব্যাপারে ডাকা হয়নি। তবে অন্য দুইজনের কাউকে ডেকে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে কি না তা তার জানা নেই।
এদিকে অভিযোগকারী জানান, এ সংক্রান্ত কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বা পরীক্ষা নেওয়া হয়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী মোহাম্মদ গোলাম নবী প্রতিষ্ঠানের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে (খণ্ডকালীন) ড্রাইভিং ইন্সট্রাক্টর (গেস্ট টেইনার) ও সহকারী ড্রাইভিং ইন্সট্রাক্টর (গেস্ট টেইনার) সহ চারটি পদে নিয়োগের জন্য দরখাস্ত আহ্বান করেছেন। তবে আবেদনের শর্তাবলীতে উল্লেখ করা হয়েছে গত বছরের ২৬ ডিসেম্বরের মধ্যে আবেদন করতে হবে। যা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের তারিখের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। কারণ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আগে আবেদন জমা দেওয়া অসম্ভব।
অপরদিকে ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জন্য নাটোরের স্থানীয় উত্তরবঙ্গবার্তা পত্রিকার সম্পাদককে যে চিঠি দিয়েছেন প্রতিষ্ঠান প্রধান, তাতে বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশ করতে বলা হয়েছে গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর। অথচ তিনি ওই আদেশ পাঠানোর চিঠিতে যে স্বাক্ষর করেছেন তাতে তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি। ঢাকাপ্রকাশের কাছে এসব নথিপত্র এসেছে।
গোপনে নিয়োগ দেওয়ার পর আইনি জটিলতা এড়াতেই তিনি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নাটক করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন আকতার আলী।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর পরিচালক (প্রশিক্ষণ পরিচালনা) প্রকৌশলী সালাহ উদ্দিনের সঙ্গে একাধিক বার যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ওই প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা এ বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারবেন। প্রতিষ্ঠান প্রধানের সঙ্গে কথা বললে তাকে জানানো হয়েছে, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশসহ যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই ওই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক শহিদুল আলম বলেন, ‘ওই আবেদন আমার হাতে এসেছে কি না সঠিক স্মরণে নেই। তবে অভিযোগটি পেলে যতাযথ তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এসএন