বিষাক্ত ইনজেকশন পুশ করে শিশুপুত্রকে হত্যায় বাবা আটক
বিষাক্ত ইনজেকশন পুশ করে আড়াই মাস বয়সী এক শিশুকে হত্যা করেছে বাবা। এ ঘটনায় অভিযুক্ত বাবাকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার (৩০ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টার দিকে তাকে আটক করা হয়। এ ঘটনাটি ঘটেছে চুয়াডাঙ্গা শহরে। এ ঘটনায় স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা করেছেন তার স্ত্রী।
নিহত শিশু আলমডাঙ্গা উপজেলার আঠারোখাদা গ্রামের ইখলাছ উদ্দিনের ছেলে ইকবাল হোসেন।
জানা গেছে, ইখলাছ উদ্দিন দ্বিতীয় স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার মাঝেরপাড়ার পলাশ উদ্দিনের বাড়িতে ভাড়ায় থাকতেন। বুধবার (৩০ মার্চ) সকাল ৮টার দিকে অসুস্থ হয়ে পড়লে সকালেই শিশু ইকবালকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে শিশুটিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন চিকিৎসক। সেখানে নেয়ার পথে মারা যায় শিশুটি। এরপর খবর পেয়ে সন্ধ্যায় আঠারোখাদা গ্রাম থেকে ইকবালের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এদিকে শিশুটির মা মিতা খাতুনের অভিযোগ, আমার অন্য এক জায়গায় বিয়ে হয়েছিল। পারিবারিক কলহের কারণে বিয়ে বিচ্ছেদ হয়। এদিকে প্রথম স্ত্রীর কোনও সন্তান না হওয়ায় গত ৪ বছর আগে ইখলাছ আমাকে বিয়ে করে। বিয়ের পর থেকে সে আমাকে সন্দেহ করতে থাকে। পরে আমাদের কোলজুড়ে আসে এক ছেলে সন্তান। ওই ছেলে তার জন্মের নয় বলে জানায় ইখলাছ।
তিনি আরও বলেন, বুধবার সকালে বাড়ির কাজ করছিলাম। সেই সময় ইখলাছ ছেলেকে কোলে নেয়। হঠাৎ সুস্থ ছেলে কেঁদে ওঠে। পরে গিয়ে দেখি আমার ছেলের বাম পা দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। জানতে চাইলে ইখলাছ বলে, টিকা দেয়ার স্থান থেকে রক্ত বের হচ্ছে। পরে তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়। ডাক্তার জানায়, টিকা দেওয়ার স্থান থেকে কোনও রক্ত বের হয়নি। ছেলের বাম পায়ের অন্য স্থানে একটি ইনজেকশন পুশ করার চিহ্ন রয়েছে। সেখানে ফুলে গেছে। আমার ছেলেকে বাম পাশে বিষ মিশ্রিত ইনজেকশন পুশ করে হত্যা করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মাহবুবুর রহমান মিলন জানান, দুপুরে শিশুটিকে আমার কাছে নিয়ে আসা হয়। তখন শিশুটির অবস্থা খারাপ ছিল। শিশুটির খিঁচুনি হচ্ছিল। তার মা বিষাক্ত ইনজেকশন পুশ করার অভিযোগ করছিলেন। শিশুটির বাম পায়ে একাধিক ইনজেকশন পুশের চিহ্ন ছিল। শিশুটির শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিকেলে রেফার্ড করা হয়। তবে শিশুটির পায়ে কোন ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে তা ময়নাতদন্ত ছাড়া বলা যাবে না। বেঁচে থাকলে রক্ত পরীক্ষা করে বলা যেত। তার আগেই তো শিশুটি মারা গেছে।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন জানান, সন্ধ্যায় খবর পেয়ে আঠারোখাদা গ্রামে পৌঁছে নিহত শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি মর্গে পাঠানো হয়েছে। আটক করা হয়েছে শিশুটির বাবা ইখলাছকে। মিতা খাতুন বাদী হয়ে সদর থানায় তার স্বামী ইখলাছের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছে।
এসআইএইচ