লবণাক্ত জমিতে সূর্যমুখী চাষে সফল কৃষকরা
উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালীতে লবণাক্ততার কারণে অনেক ফসলই এখন চাষাবাদ করা সম্ভব হচ্ছে না। ফসলের ফলন পাওয়া যায় না। তবে বছর দুয়েক ধরে লবণাক্ত জমিতে সূর্যমুখী চাষ শুরু করেছেন কৃষকরা। এতে উন্নত মানের তেলের চাহিদা পূরণের পাশপাশি আর্থিকভাবেও লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। আর কৃষকদের উন্নত জাতের সূর্যমুখী চাষে সার্বিক সহযোগিতা করছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট।
আমন ধান কাটার পর বেশ কয়েক মাস উপকূলীয় এলাকার অধিকাংশ জমি অনাবাদি অবস্থায় পড়ে থাকে। মাটি ও পানি লবণাক্ত থাকায় অন্য কোনো ফসল ফলানো সম্ভব হয় না। এমন পরিস্থিতিতে এবার আমন ধান কাটার পর জেলার কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ এলাকায় বেশ কিছু জমিতে বারি সূর্যমুখী-২ বীজ বপন করা হয়েছে। আর বর্তমানে সেই সূর্যমুখী ফসল তোলার উপযোগী হয়েছে।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের সার্বিক পরামর্শে নিয়মিত পরিচর্যা ও সুষম সার প্রয়োগে ফলনও হয়েছে ভালো। পাশাপাশি পাখির আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষায় এসব ফসলের মাঠে স্থানীয় প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয়েছে।
নীলগঞ্জ ইউনিয়নের কুমিরমারা গ্রামের কৃষক সুলতান গাজী ঢাকাপ্রকাশকে জানান, ‘আমাদের এ অঞ্চলের জমিগুলো এক ফসলি, এতে সূর্যমুখী তেমন একটা চাষ হতো না। গত বছর কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে জানানো হয়, লবণাক্ত জমিতে বারি সূর্যমুখী-২ জাতটি ভালো হয়। সেই কারণে আমি ৩৩ শতাংশ জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেছি। ফলনও হয়েছে ভালো। এবার একর প্রতি ২০ মণ বীজ উৎপাদন হবে বলে আশা করছি। আর যেহেতু তেলের দাম দিনকে দিন বাড়ছে সে কারণে আগামীতে আরও বেশি জমিতে সূর্যমুখী চাষাবাদ করব।’
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের পটুয়াখালী সরেজমিন গবেষণা বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. শহিদুল ইসলাম ঢাকাপ্রকাশকে জানান, ‘বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত বারি সূর্যমুখী-২ চাষাবাদ ছড়িয়ে দিতে বর্তমানে কৃষকদের মাঝে বিনা মূল্যে বীজ সরবরাজ, বীজ রোপণে সিডার মেশিন দিয়ে সহায়তা করা, সুষম সার প্রয়োগসহ যাবতীয় প্রযুক্তিগত সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এতে করে কৃষকরা এ ফসল তাদের চাষাবাদের রুটিনে যুক্ত করছেন।’
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার ঢাকাপ্রকাশকে জানান, বর্তমানে দেশে যেসব ভোজ্য তেল ব্যবহার করা হয় এর মধ্যে সূর্যমুখীর গুণগত মান সবচেয়ে ভালো। ফলে উপকূলের লবণাক্ত এসব জমিতে সূর্যমুখীর উৎপাদন বাড়াতে পারলে দেশে ভোজ্য তেলের আমদানি নির্ভরতা কমবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
এসএন