মধুখালীতে বাঁশের খুঁটি দিয়ে বিদ্যুতের সংযোগ
ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার মেগচামী গ্রামে বাঁশের খুঁটির মাধ্যমে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। এতে জীবনের ঝুঁকিতে রয়েছে শত শত মানুষ।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই বিদ্যুতের খুঁটি বসানোর দাবি জানিয়ে আসছেন তারা, কিন্তু কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কায় রয়েছেন তারা।
সরেজমিন দেখা গেছে, মেগচামী ১ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যপাড়া খানবাড়ী থেকে মধ্যপাড়া গোরস্থান মডেল বাজার এলাকায় গাছ ও বাঁশের ঝাড়ের মধ্য দিয়ে ঝুকিপূর্ণভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়েছে ডাব্লিউজেডপিডিসিএলের রাজবাড়ী অফিস। বৈদ্যুতিক খুঁটি না বসিয়ে বাঁশ ও গাছের ডালে দিয়ে বিদ্যুতের তার টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। অনেক স্থানে তারের ভারে বাঁশগুলো হেলে পড়েছে। কোথাও বা হেলে থাকা বাঁশ আরও একটা বাঁশ দিয়ে ঠেকা দেওয়া হয়েছে।
রাস্তার আশেপাশের মেহগনি গাছের সঙ্গেও বিদ্যুৎতের তার পেঁচানো রয়েছে। এক কিলোমিটারের কিছু বেশি রাস্তা জুড়ে বসানো বাঁশের খুঁটিতে ভরসা করেই প্রায় ১০০ বাড়িতে বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। ওই এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুতের খুঁটির জন্য চেষ্টা করছিলেন ওই এলাকার বাসিন্দারা। কিন্তু খুঁটির ব্যবস্থা না করে কর্তৃপক্ষ বাঁশ বসিয়ে সংযোগ দিয়েছে। গত ১০-১২ বছর এভাবেই চলছে।
মেগচামী এলাকার বাসিন্দা বাদশা মিয়া বলেন, ‘আমার বাড়ির সামনে একটি সিমেন্টের খুঁটি ছিল সেটি ভেঙে যাওয়ার পর অফিসের লোক এসে মেহগনি গাছের সঙ্গে বিদ্যুৎ তার পেঁচিয়ে রাখছে, আমরা খুঁটি লাগাতে বলছি কিন্তু কর্তৃপক্ষ অপেক্ষা করতে বলেছে। দ্রুতই খুঁটি স্থাপন করা হবে বলেও জানায়। কিন্তু আজও হয়নি। গত ১০-১২ বছর এভাবেই চলছে।’
মেগচামী এলাকার শাহিন খন্দকার, এরশাদ খন্দকার, রাজিবুল হাসান ও সাব্বির খান জানান, ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও নিরুপায় হয়ে এভাবে ঝুঁকি নিয়েই বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে হচ্ছে। যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটার আগেই সংযোগগুলোর নিরাপদ ব্যবস্থা প্রয়োজন। অফিসের লোকজন বিদ্যুতের মিটার দেখে বিল দেয় না। তারা অফিসে বসে থেকে মনগড়া বিল তৈরি করে দেয়। এসব নিয়ে অভিযোগ করতে করতে তারা নিজেরাই বিরক্ত হয়ে গেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা স্বপ্না বেগম জানান, মিটারে একটি তার কয়েকদিন আগে খুলে গিয়েছিল। অফিসে ফোন দিলে অফিস বলে আবেদন করতে হবে ৫৭০ টাকা লাগবে। জিয়া খান নামে একজন এসে ১৫০০ টাকা নিয়ে তার লাগিয়ে দিয়েছেন। লাইনে এখনো সমস্যা আছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যুৎ বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ১০০ গজের বেশি দূরত্বে সার্ভিস লাইন দেওয়ার কোনো নিয়ম নেই। ১০০ গজের অতিরিক্ত দূরত্ব হলে অবশ্যই খুঁটি দিতে হবে, অন্যথায় সংযোগ দেওয়া যাবে না। অথচ এ এলাকায় ২০০-৩০০ মিটারের বেশি দূরে গিয়ে খুঁটি বসানো হয়েছে। মাঝের স্থানগুলোতে বসানো হয়েছে বাঁশের খুঁটি।
এ ব্যাপারে ডব্লিউজেডপিডিসিএল রাজবাড়ীর নির্বাহী প্রকৌশলী আমিনুর রহমান বলেন, আমার এ বিষয়ে কিছু জানা নেই। ওই এলাকায় গিয়ে বিষয়টি দেখে সমাধান করব।
এসএন