পাবনায় ভাই হত্যার বদলা নিতে মেয়ে সেজে প্রেম, ডেকে এনে খুন
শিশু আরাফাত (৮) হত্যার বদলা নিতে ভাই আজাদুর রহমান মেয়ে সেজে খুনি ইমরান হোসেনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন আজাদুর ওরফে নবীন (২৪)। পরে বন্ধু মো. আলাউদ্দিনের (২০) সহায়তায় ইমরানকে হত্যা করেন তিনি। এ জন্য আজাদুর তিন মাস মেয়ে সেজে মুঠোফোনে ইমরানের সঙ্গে প্রেমের অভিনয় করেন।
একপর্যায়ে ২৬ মার্চ রাতে মেয়ে কণ্ঠে ইমরানকে বাড়ির বাইরে ডেকে এনে খুন করেন। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার আজাদুর ও আলাউদ্দিন গতকাল মঙ্গলবার হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন।
থানা-পুলিশ ও এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাবনার বেড়া উপজেলার আলোচিত শিশু অপহরণ ও হত্যা মামলার আসামি ছিলেন ইমরান হোসেন (২১)। ২৭ মার্চ সকালে বেড়া পৌর এলাকার আলহেরানগর মহল্লার একটি খেত থেকে ইমরানের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ইমরান সাঁথিয়ার করমজা গ্রামের আবদুল কুদ্দুসের ছেলে। নিহত ইমরান ২০১৫ সালের ৪ সেপ্টেম্বর বেড়া পৌর এলাকার সান্যালপাড়া মহল্লার আরাফাত নামের এক শিশু অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কিশোর অপরাধী হিসেবে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। ওই ঘটনায় প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর যশোর কিশোর সংশোধনাগারে কারাভোগের পর কয়েক মাস আগে মুক্তি পান তিনি।
ইমরান হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানায় অভিযান চালিয়ে খুনের শিকার আরাফাতের ভাই আজাদুর ও তার বন্ধু আলাউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে তাদের আদালতে পাঠানো হলে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
পুলিশ জানায়, আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে শিশু আরাফাত হত্যার বদলা নিতে ইমরানকে খুন করা হয় বলে দুই আসামি স্বীকার করেছেন।
গ্রেপ্তার আজাদুর ও আলাউদ্দিন বলেন, ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে ইমরানসহ তিনজন মিলে শিশু আরাফাতকে অপহরণের পর হত্যা করেন। এ ঘটনায় ইমরান সাড়ে পাঁচ বছর কারাভোগের পর কয়েক মাস আগে বের হন। বের হওয়ার পর তিনি আরাফাতের ভাই আজাদুরকে ‘কী করতে পারলি’ বলে তির্যক মন্তব্য করেন। এতে আজাদুরের মধ্যে ভাই হত্যার বদলা নেওয়ার ইচ্ছা জাগে। তিনি ইমরানের ফোন নম্বর সংগ্রহ করে মেয়ে সেজে তিন মাস প্রেমের অভিনয় করেন। পরে বন্ধু আলাউদ্দিনকে সঙ্গে নিয়ে ইমরানকে খুনের পরিকল্পনা করেন। এ জন্য দুজনে দুটি ছুরিও কেনেন। পরিকল্পনা মোতাবেক ২৬ মার্চ রাত সাড়ে ১১টার দিকে মেয়ে কণ্ঠে ইমরানকে বেড়া পৌর এলাকার আলহেরানগর মহল্লার একটি নির্দিষ্ট জায়গায় আসতে বলেন আজাদুর। সেখানে পৌঁছানোর পর আজাদুর ও আলাউদ্দিন এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ইমরানকে হত্যা করেন।
বেড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অরবিন্দ সরকার বলেন, ইমরান হত্যা মামলায় আসামি আজাদুর ও আলাউদ্দিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ভাই হত্যার বদলা নিতে গিয়ে আরেকটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
এমএসপি