বাংলাদেশি যুবকের মরদেহ ফেরত দেয়নি বিএসএফ
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত হওয়ার ঘটনার চারদিন পার হলেও এখনও নিহত ওই যুবকের মরদেহ ফেরত দেয়নি বিএসএফ। এ নিয়ে দুদেশের বিজিবি-বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও নিহত যুবকের মরদেহ ফেরত দিতে বিএসএফ গড়িমসি করছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। ফলে বিজিবির পক্ষ থেকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে।
এর আগে সোমবার (৭ মার্চ) বিকাল সোয়া তিনটার দিকে ১৫১-১৪ (এস) সীমান্ত পিলার সংলগ্ন দৌলতপুর উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের মহিষকুন্ডি মাঠপাড়া সীমান্তে নো-ম্যান্স ল্যান্ডে দুদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়৷ সাড়ে তিনটা পর্যন্ত চলা ওই পতাকা বৈঠকে বিজিবির পক্ষে নেতৃত্ব দেন ৪৭ বিজিবি ব্যাটালিয়ন অধীনস্থ প্রাগপুর কোম্পানি কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) নায়েক সুবেদার আমজাদ হোসেন এবং বিএসএফের পক্ষে নেতৃত্ব দেন ১৪১ বিএসএফ কমান্ডেন্ট অধীনস্থ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার হোগলবাড়িয়া থানার অন্তর্গত মেঘনা কোম্পানি কমান্ডার এসকে সিনা।
পতাকা বৈঠকে বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশি যুবক লিটন বিশ্বাসের মরদেহ বিজিবির পক্ষ থেকে ফেরত চাওয়া হলে বিএসএফ মরদেহ ফেরত না দিয়ে কৃষ্ণনগর হাসপাতাল মর্গে রয়েছে বলে গড়িমসি করে। মরদেহ ফেরত নিয়ে বিএসএফের এমন আচরণে বিজিবি চরম ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে পতাকা বৈঠক শেষ করে ফেরত আসেন।
বুধবার (৯ মার্চ) এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মরদেহ ফেরত না পেয়ে নিহতের স্বজনেরা চরম হতাশ হয়ে উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
উল্লেখ্য, শনিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে দৌলতপুর সীমান্তের ওপারে ভারতীয় ভূ-খণ্ডে বিএসএফের গুলিতে লিটন বিশ্বাস (৩২) নামে এক বাংলাদেশি মাদক চোরাকারবারি যুবক নিহত হন। নিহত লিটন দৌলতপুর উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের সীমান্ত সংলগ্ন বিলগাথুয়া গ্রামের আকবর আলী বিশ্বাসের ছেলে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ঘটনার দিন লিটন বিশ্বাসের নেতৃত্বে বাংলাদেশি একদল মাদক চোরাকারবারি ভারত থেকে মাদক চোরাচালান করছিল। এ সময় ১৫১-৬ (এস) সীমান্ত পিলার সংলগ্ন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার হোগলবাড়িয়া থানার মেঘনা সীমান্তে ১৪১ বিএসএফ কমান্ডেন্ট অধীনস্থ মেঘনা ক্যাম্পের টহলরত বিএসএফ তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে লিটন বিশ্বাস ঘটনাস্থলে নিহত হলে অপর মাদক চোরাকারবারিরা বাংলাদেশ সীমানায় পালিয়ে আসে।
পরে বিএসএফ লিটনের মরদেহ উদ্ধার করে হোগলবাড়িয়া থানায় সোপর্দ করে। হোগলবাড়িয়া থানা পুলিশ নিহত যুবকের মরদেহের ময়না তদন্তের জন্য কৃষ্ণনগর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
এমএসপি