'জিনিসের যে দাম বাড়ছে, ভাত খাওন দায়'
তিনদিন ধইরা কাইজ-কাম নাই। শনিবারে (৫ মার্চ) কাজ কইরা ৪০০ টেকা রোজ পাইছলাম। একদিনেই বাজার কইরা সব টেকা শেষ। দুই বছরের মইধ্যে এমন অভাবে আর পরছি না। এখন তো দ্যাখতাছি একদিনের রুজি দিয়া একদিনই চলা দায়। জিনিসের যে দাম বাড়ছে!
কথাগুলো বলছিলেন ষাটোর্ধ শ্রমিক লোকমান মিয়া। বাড়ি সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে। স্ত্রী ও তিন সন্তান দিয়ে নগরীর শাহী ঈদগাহে বাস করছেন প্রায় এগারো বছর ধরে। বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের অগ্নিমূল্যে বে-কায়দায় তিনি।
এক দিকে কাজের অভাব, অন্য দিকে, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে দিশেহারা সিলেটের হাজারো লোকমান। কাক ডাকা ভোরে যাদের দেখা মিলে সিলেটের শ্রমের হাটগুলোতে।
মঙ্গলবার (৮ মার্চ) সিলেট নগরীর আম্বরখানা এলাকায় গিয়ে এ দৃশ্য দেখা গেল। কাজের সন্ধানে যেখানে প্রতিদিন হাজির হন শ’য়ে শ’য়ে শ্রমজীবী।
হাটে গিয়ে কথা হয় বারেক মিয়া, জালালা মিয়া, হারিছ, মছদ্দর ও জয়নাল আলীর সঙ্গে। কথা বলতে এগিয়ে আসেন ৬ সদস্যের পরিবারের চল্লিশোর্ধ বারেক মিয়া। তিনি বলেন, ‘এখন আর পারতাছি না। আমার বড় পরিবার। দিন শেষে ৫-৬শ টাকা পেয়ে চাল কিনে ডাল কেনা যায় না। আর মাছ-মাংসের কথা তো আমরা চিন্তাও করতে পারি না।’
বারেক মিয়ার মতো এমন ১৫-২০ জনের সঙ্গে কথা বলে তাদের দুঃখ-দুর্দশার একই চিত্র পাওয়া যায়।
মৌলভীবাজারের ষাটোর্ধ্ব আব্দুল আউয়াল জানান, পেটের দায়ে মৌলভীবাজারে আসেন ২ বছর হলো। এত অভাবে তিনি আগে পড়েননি। এখন একদিকে জিনিসের দাম, আবার সব সময় কাজও মিলে না।
এখন চালের কেজি মানভেদে ৪৫-৭০ টাকা। সবজির দামও ঊর্ধ্বগতি। মাছের বাজারে মোটামুটি স্বস্তি থাকলেও ভোজ্যতেল, চিনি, ময়দা, ডাল, ছোলা, পেঁয়াজের দাম প্রতিদিন বাড়ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিলেটের জেলা প্রশাসক মজিবুর রহমান বলেন, ‘বাজার নিয়ন্ত্রণে মনিটরিং জোরদার করা হয়েছে। ১০ মার্চ থেকে টিসিবির পণ্য চলে এলে বাজারে পজিটিভ রেজাল্ট পাওয়া যাবে।’
এমএসপি