বরিশালে এসআইয়ের নির্যাতনে স্ত্রীর আত্মহত্যা!
বরিশালে মাইনুল ইসলাম সাইফুল নামে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের এক উপ-পরির্দশকের (এসআই) শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনে সাথী আক্তার নামে তার নববিবাহিতা স্ত্রী আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্ত্রীর আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ থেকে বাঁচতে অসুস্থতার ভান ধরে অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম শের-ই-বাংলা মেডিকেলে ভর্তি হয়েছেন বলে জানান সাথীর স্বজনরা।
সাথীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রথম স্ত্রী ও দুই সন্তানের কথা গোপন রেখে কলেজছাত্রী সাথীকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন সাইফুল। বিয়ের পর সাথীকে চাকরি দেওয়ার নামে তার বাবার বাড়ি থেকে আনা ৫ লাখ টাকা নেন ওই এসআই। এ নিয়ে সাইফুল ও সাথীর মধ্যে দাম্পত্য কলহ ছিল।
সাথীর ভাই মো. রতন জানান, মাইনুল ইসলাম তার প্রথম স্ত্রী এবং ওই সংসারের দুই সন্তানের কথা গোপন রেখে এক বছর আগে সাথীকে বিয়ে করেন। এ ছাড়া সোনালী ব্যাংকে চাকরি দেওয়ার নামে সাথীর বাবার বাড়ি থেকে ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন সাইফুল।
এসব নিয়ে তাদের সংসারে দাম্পত্য কলহ ছাড়াও বিভিন্ন সময় সাথীকে শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন করেন সাইফুল।
নির্যাতনের মুখে গত সোমবার (৭ মার্চ) দুপুরে নগরীর বৈদ্যপাড়া এলাকায় সাইফুলের ভাড়া বাসায় ফ্যানের সঙ্গে গলায় রশি বেঁধে আত্মহত্যা করেন সাথী।
এ বিষয়ে সাথীর ভগ্নিপতি ও বাবুগঞ্জের কেদারপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. নুরে আলম জানান, এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। সাথী আক্তারকে নিয়মিত মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করা হতো। এ ঘটনা তদন্ত করে কঠোর বিচার দাবি করেন তিনি।
তবে স্ত্রীকে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ থেকে বাঁচতে সাইফুল অসুস্থতার ভান ধরে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন নুরে আলম।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত উপ-পরিদর্শক মাইনুল ইসলাম সাইফুলের বক্তব্য জানতে তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।
তবে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার ওসি আব্দুর রাজ্জাক জানান, জেলা গোয়েন্দা শাখার এসআই সাইফুল ইসলামের দ্বিতীয় স্ত্রীর আত্মহত্যার খবর তারা শুনেছেন। এ ঘটনার পর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সাইফুল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। অসুস্থতার জন্য তাকে সাময়কি ছুটি দেওয়া হয়েছে।
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মো. আজিমুল করিম জানান, মর্গে সাথীর মরদেহ ময়না তদন্তের পর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। ময়না তদন্ত রিপোর্ট পেলে সে অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এমএসপি