শেরপুরে বিদ্যুতের ফাঁদ দিয়ে হাতি হত্যা
শেরপুরের ঝিনাইগাতীর সীমান্ত এলাকা থেকে একটি বন্য হাতির মৃতদেহ উদ্ধার করেছে বন বিভাগ। এ সময় উদ্ধার হয়েছে হত্যায় ব্যবহৃত জিআই তার।
শনিবার (৬ মে) সকালে উপজেলার বাঁকাকুড়ার ঢাকাইয়া মোড় থেকে হাতিটির মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। রাংটিয়া রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা মকরুল ইসলাম আকন্দ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, ধান পাকার মৌসুম এলেই তাণ্ডব শুরু হয় সীমান্তজুড়ে। কিছুদিন ধরে বন্য হাতির দল শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্ত অঞ্চলে অবস্থান নিয়েছে। ফসল রক্ষা করতে হাতি-মানুষের দ্বন্দ্বে এরইমধ্যে গত দেড় মাসের ব্যবধানে সীমান্তের চার কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
গেল মধ্যরাতে বন্যহাতির একটি দল খাদ্যের সন্ধানে বাঁকাকুড়ার ঢাকাইয়া মোড় এলাকার লোকালয়ে কৃষকের ধান ক্ষেতে হানা দেয়। এসময় পাগলারমুখ এলাকার কৃষক নুহু মিয়ার ক্ষেতে আগে থেকে পেতে রাখা বিদ্যুতের ফাঁদে আটকা পড়ে হাতিটি। পর ওই ফাঁদেই মারা যায় হাতিটি।
জানা গেছে, গারো পাহাড়ে পর্যাপ্ত হাতির প্রয়োজনীয় খাবার না থাকায় তারা পাহাড় ছেড়ে লোকালয় ও ফসলের খেতে চলে আসছে। ২০১৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত সরকারি হিসেবে জেলায় ২৬টি হাতির মৃত্যু হয়েছে, যার বেশিরভাগই বিদ্যুতের ফাঁদ পেতে হত্যা করা হয়েছে।
অন্যদিকে, ২০১৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত সরকারি হিসেবে জেলায় হাতির আক্রমণে ২১ জন কৃষকেরও মৃত্যু হয়েছে।
রাংটিয়া রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা মকরুল ইসলাম আকন্দ বলেন, হাতিটি পুরুষ, বয়স আনুমানিক ৪/৫ বছর। ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল থেকে জিআই তার উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান রেঞ্জ কর্মকর্তা।
বন্যহাতির মৃত্যুর ঘটনায় প্রকৃতি ও পরিবেশবাদী সংগঠন ‘সবুজ আন্দোলন’ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে হাতি মৃত্যুর ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের জোর দাবি জানিয়েছে।
সবুজ আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মেরাজ উদ্দিন বলেন, গারো পাহাড়ে বার বার হাতির মৃত্যু ও হত্যার ঘটনা ঘটেই চলেছে। এসব হাতি নানা উপায়ে হত্যা করলেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। শুধু একটি হাতি হত্যার ঘটনায় মামলা করা হলেও বাকিগুলোর বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আমরা মনে করি, হাতি হত্যা থামছে না। হাতি-মানুষের সহাবস্থানের জন্য গারো পাহাড়ে হাতির অভয়াশ্রম ও খাদ্যের সংস্থান করার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।
আরএ/