একদিন পর আবারও বদলি ইউএনও মাহমুদা
আলোচিত নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদা বেগমকে একদিনের ব্যবধানে এবার চট্টগ্রামে বদলি করা হয়েছে। শনিবার (২৭ আগস্ট) নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার (২৪ আগস্ট) ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার মো. খবিরুল আহসান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে মাহমুদা বেগমকে জেলার মদন উপজেলায় বদলি করা হয়েছিল। পরে বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাঠ প্রশাসন-২ শাখার উপসচিব কে এম আল-আমীন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে মাহমুদা বেগমকে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে পদায়ন করা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও ইউএনওর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কেন্দুয়া উপজেলার বলাইশিমুল গ্রামে ১ একর ৮৭ শতাংশ জমির মধ্যে খেলার মাঠের ৪৬ শতাংশ জায়গা কান্দা শ্রেণিতে পরিবর্তন করে সেখানে আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় গৃহহীনদের ঘর নির্মাণের কাজ চালিয়ে আলোচনায় আসেন মাহমুদা বেগম। মাঠ রক্ষায় এলাকাবাসীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। একই সঙ্গে স্থানীয় ৮ বাসিন্দা বাদী হয়ে গত ৩০ মে আদালতে একটি মামলা করেন। গত ২ জুন রাতের আঁধারে নির্মাণাধীন দুটি ঘরের গাঁথুনি ভেঙে দেওয়া হয়। পরের দিন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী বাদী হয়ে ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরে পুলিশ পাহারায় ঘরের নির্মাণকাজ চলে।
স্থানীয় লোকজনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ২৩টি ঘরের মধ্যে ১১টি সরিয়ে নেন। মাঠের পশ্চিম পাশ দখলমুক্ত করে ২৪ শতাংশ জায়গায় ১২টি ঘর বানানো হয়। সেখানকার দুটি ঘরে গত ১৩ আগস্ট ভোরে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ৬৩ জনের নাম উল্লেখ করে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বাদী হয়ে মামলা করেন।
ঘর পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগের নেতাসহ বেশ কয়েকজনকে দায়ী করেন ইউএনও মাহমুদা বেগম। তিনি এসব তথ্য এনএসআই, ডিজিএফআইয়ের গোয়েন্দা প্রতিবেদন থেকে জেনেছেন বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানান। সরকারি দল, বিরোধী দল সবাই মিলে ষড়যন্ত্র করেছে বলে দাবি করেন তিনি। এ ছাড়া কয়েকজন আসামি করে মামলা করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি।
ওই সংবাদ সম্মেলনে ইউএনওর বক্তব্যের একটি ভিডিও দৈনিক সংবাদ ও ডেইলি অবজারভারের উপজেলা প্রতিনিধি হুমায়ূন কবীর নিজের ফেসবুক পেজে পোস্ট করলে ইউএনও তাকেও মামলায় জড়ানোর হুমকি দেন। এরপর জেলা প্রশাসক তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন।
গত ১৯ আগস্ট বলাইশিমুল ঈদগাহে ইউনিয়নের ২৮ গ্রামের বাসিন্দাদের বৈঠকে ইউএনও মাহমুদা বেগমকে বলাইশিমুল ইউনিয়নে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে তাকে অপসারণের আলটিমেটাম দেওয়া হয়।
এসজি