বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা, হিট অ্যালার্ট জারি
বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ
চুয়াডাঙ্গায় অব্যাহত রয়েছে তীব্র তাপদাহ। টানা চারদিন ধরে ৪০ ডিগ্রির উপরে তাপমাত্রায় পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা। টানা তাপদাহে অতিষ্ঠ সীমান্তবর্তী জেলার মানুষ। অসহ্য গরমে ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছে প্রাণিকুল। হাসপাতালে বাড়ছে গরমজনিত রোগীর সংখ্যা।
শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকেল ৩ টার সময় চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
বুধবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং মঙ্গলবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তীব্র তাপদাহে হিট ওয়েভ অ্যালার্ট জারি করেছে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন। মাইকিং করে বলা হয়, খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের না হতে।
দিনের বেশিরভাগ সময় সূর্যের তাপে চরম গরম অনুভূত হচ্ছে। রোদে যেন আগুনের ফুলকি ঝরছে। রোদের তীব্র প্রখরতায় উত্তাপ ছড়াচ্ছে চারপাশ। নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষেরা পড়েছেন চরম বিপাকে। নির্মাণ শ্রমিক, কৃষি শ্রমিক, ইজিবাইক চালক ও ভ্যান-রিকশা চালকদের গরমে নাভিশ্বাস উঠেছে। হা-হুতাশ করতে দেখা গেছে তাদেরকে। প্রয়োজনের তাগিদে ঘর থেকে বেরিয়েও কাজ করতে পারছেন না তারা। তাপদাহে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবীরা।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান বলেন, ‘তীব্র তাপদাহ আরও কিছুদিন অব্যাহত থাকতে পারে। তবে, আপাতত বৃষ্টির সম্ভবনা নেই। তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে। এখনও পর্যন্ত কোনো বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত তাপমাত্রা কমবে না।’
২০২৩ সালে ১৯ ও ২০ এপ্রিল জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ বছর ৪৩ ডিগ্রি ছাড়িয়ে যেতে পারে। তাপমাত্রা বেশি হওয়ার কারণে গরম বেশি অনুভূত হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গার ঈশ্বরচন্দ্রপুর গ্রামের আশু মিয়া ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, প্রচণ্ড গরমে মাঠে জমিতে কাজ করা অনেক কঠিন হয়ে পড়ছে। ভ্যাপসা গরমে বেশিক্ষণ মাঠে অবস্থান করা সম্ভব হচ্ছেনা। ফসলের ক্ষেত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জমিতে সেচ দেওয়ার পরও মাটি শুকিয়ে যাচ্ছে।
কার্পাসডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা সুজন আলী বলেন, সকালে কাজের জন্য অফিসে আসতে হয়। বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর প্রচণ্ড গরম অনুভূত হচ্ছে। সড়ক থেকে গরম উঠে শরীর পুড়ে যাচ্ছে। বাইরে বেশি সময় অবস্থান করা যাচ্ছে না।
উথলী গ্রামের শিক্ষক জাকির হোসেন বলেন, বারবার পানি পান করেও তৃষ্ণা মেটানো যাচ্ছে না। বৃষ্টি একান্ত প্রয়োজন। পরিবেশের ভারসাম্য বাজায় রাখতে গাছ লাগানোর কোনো বিকল্প নেই। ৪০ ডিগ্রির ওপরে তাপমাত্রা ওঠানামা করছে প্রতিদিন।
এদিকে চুয়াডাঙ্গাতে তাপমাত্রা বাড়ার কারণে আবহাওয়া অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শক্রমে চুয়াডাঙ্গাতে বৃহস্পতিবার ৭২ ঘণ্টার জন্য হিট ওয়েভ অ্যালার্ট (তীব্র তাপদাহের সতর্কতা) জারি করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গার চারটি উপজেলায় তথ্য অফিসের মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে।