বাকিতে পেট্রল না পেয়ে তেল ছিটালেন সাবেক সিআইডি কর্মকর্তা
ছবি:সংগৃহীত
খুলনার একটি পেট্রোল পাম্প থেকে বাকিতে পেট্রল না দেওয়ায় কর্মচারীদের কাছ থেকে পাম্পের নজেল কেড়ে নিয়ে পাম্প চত্বরে পেট্রল ছিটান সিআইডির সাবেক উপপরিদর্শক (এসআই) পরিচয় দেওয়া মধুসুদন বর্মন নামে এক ব্যাক্তি। মোটরসাইকেলের জন্য বাকিতে এক হাজার টাকার পেট্রল না পেয়ে এই কান্ড করেন তিনি। একইসঙ্গে ওই পাম্পটি আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়ারও হুমকি দেন।
গত শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) রাত পৌনে ১টার দিকে খুলনা মহানগরীর গল্লামারীতে অবস্থিত মেট্রো ফিলিং স্টেশনে এ ঘটনা ঘটে। যা ওই পাম্পের সিসিটিভির ফুটেজে ধরা পড়েছে। তেল ছিটিয়ে হুমকি দেওয়ার পর সেখান থেকে সটকে পড়েন মধুসুদন। ওই ঘটনায় লবণচরা থানায় মামলা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) খুলনার লবণচরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান গনমাধ্যমকে মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও মামলা এজাহারে জানা গেছে, সিআইডি পুলিশের পরিচয় দিয়ে শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত পৌনে ১টার দিকে একটি মোটরসাইকেলে মধুসুদন বর্মনসহ দুইজন মেট্রো ফিলিং স্টেশনে আসেন। মধুসূধন নিজের পরিচয় দিয়ে পাম্প কর্মচারীদের কাছে এক হাজার টাকার পেট্রল বাকিতে ভরে দিতে বলেন। কিন্তু এতে কর্মচারীরা রাজি না হওয়ায় তাদের মারধর করে জোর ধরে মোটরসাইকেলে তেল নিয়ে আশপাশে ফেলে দেন তিনি। মধুসুধন বর্মন একপর্যায়ে আগুন নিয়ে পাম্প জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। পাম্প কর্মচারীরা ঘটনাটি দ্রুত স্থানীয় থানায় জানালে মধুসুধন সটকে পড়েন।
এ ঘটনায় গত ১০ ডিসেম্বর পেট্রল পাম্পের মালিক অ্যাডভোকেট শেখ মাসুদ হোসেন রনি খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) কমিশনার বরাবর সিসি ক্যামেরার ফুটেজসহ একটি অভিযোগ দাখিল করেন। পুলিশের তদন্ত শেষে সোমবার রাতে পেট্রল পাম্প ম্যানেজার নূর ইসলাম বাদী হয়ে লবণচরা থানায় মামলা করেন।
পেট্রল পাম্পের মালিক শেখ মাসুদ হোসেন রনি বলেন, ঘটনার সময় মধুসুদন বর্মন নিজেকে সিআইডির এসআই পরিচয় দেন এবং বাকিতে পেট্রল চান। কিন্তু তা দিতে অস্বীকার করায় জোর করে কর্মচারীদের কাছ থেকে পাম্পের নজেল ছিনিয়ে মোটরসাইকেলে পেট্রল নেন এবং পাম্প চত্বরে পেট্রল ছিটান। এ সময় তিনি পাম্প জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন।
সিআইডি খুলনার বিশেষ পুলিশ সুপার শম্পা ইয়াসমিন ঢাকা গনমাধ্যমকে বলেন, মধুসুদন বর্মন এক সময় খুলনা সিআইডিতে উপপরিদর্শক পদে কর্মরত ছিলেন। কিন্তু উচ্ছৃঙ্খল আচরণের জন্য ২০২০ সালে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করে তাকে বরখাস্ত করা হয়। শুনেছি গল্লামারী এলাকার একটি পেট্রল পাম্পে নিজেকে পুলিশ সদস্য পরিচয় দিয়ে ফায়দা লুটার চেষ্টা করেছেন। এ বিষয়ে কেএমপিতে পেট্রল পাম্পের মালিক অভিযোগ দিয়েছেন। বর্তমানে মধুসুদন পুলিশের কোনো সদস্য নন।