সাতক্ষীরায় আমের দাম নিয়ে হতাশ চাষি-ব্যবসায়ীরা
সংবাদ প্রকাশের পর সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন সব ধরনের আম সংগ্রহের তারিখ এগিয়ে আনলেও বাজার দর পাচ্ছে না চাষীরা। জেলায় আনুষ্ঠানিকভাবে আম পাড়ার ৪র্থ দিনেও গোবিন্দভোগ প্রজাতির আমের দাম নিয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন এখানকার চাষি ও ব্যবসায়ীরা।
সোমবার (৮ মে) সাতক্ষীরার পাইকারি বাজারগুলোতে আমের দাম ছিল গত মৌসুমের তুলনায় প্রায় অর্ধেক। আমের এই দাম অব্যাহত থাকলে বড় ধরনের লোকসানের আশঙ্কা করছেন আম চাষি ও ব্যবসায়ীরা।
মৌসুমের শুরুতেই আমের দাম কম থাকার কারণ প্রসঙ্গে সাতক্ষীরার সুলতানপুর বড়বাজারের আড়তদাররা জানান, জেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ঘোষিত আম ক্যালেন্ডার অনুযায়ী গোবিন্দভোগ, বোম্বাই ও গোলাপখাসসহ স্থানীয় জাতের আম সংগ্রহের দিন ছিল ১২ মে। যে কারণে চাষীরা বাগানের আম পাড়তে পারেনি। পরে ঢাকাপ্রকাশে এ সংক্রান্ত কয়েকটি রিপোর্ট প্রকাশ করার পর জেলা প্রশাসন দুই দফায় আম ক্যালেন্ডার পরিবর্তন করে। এতে ১২ তারিখের পরিবর্তে ৫ মে করায় প্রথম দিন থেকে বাজারে আমের সরবরাহ বৃদ্ধি পেতে থাকে। যেটা এখনও চলমান রয়েছে। আর এই কারণে শহরের সুলতানপুর বড় বাজারের আড়তগুলোয় চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেশি হওয়ার কারণেই আমের দরপতন হয়েছে।
আম ব্যবসায়ী আনারুল ইসলাম বলেন, দাম বেশি পাওয়ার আশায় আড়তে ৬০ মণ আম নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু জেলার বড়বাজারে এসেই হতাশ হয়েছি আমের দাম দেখে। গত মৌসুমের প্রথম দিকে এই বড়বাজারের আড়তে গোবিন্দভোগ আম বিক্রি করেছিলাম মণ প্রতি ২ হাজার ৯০০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা দরে। কিন্তু গতকাল একই বাজারে গোবিন্দভোগ বিক্রি করেছি ১ হাজার ৫০০ টাকা মণ দরে।
তিনি বলেন, বাগান ক্রয়, পরিচর্যা, শ্রমিক ও অন্যান্য খরচ বাদ দিয়ে প্রতি মণ গোবিন্দভোগ আম উৎপাদন খরচ পড়েছে কমপক্ষে ২ হাজার টাকার উপরে। সেখানে বাজারে প্রতি মণ আম বিক্রি হয়েছে দেড় হাজার টাকা দরে। ফলে ৮টি বাগানে তার কয়েক লাখ টাকা লোকসান হবে বলে দাবি করেন তিনি।
সাতক্ষীরা বড়বাজারের মেসার্স মর্জিনা ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী কামরুল ইসলাম জানান, বাজারের সব আড়তে আমে সয়লাব হয়ে গেছে। একদিনেই কয়েক হাজার মণ আম উঠেছে সুলতানপুর বড় বাজারের আড়তে। যে কারণে ভালো দাম পাচ্ছেন না চাষি বা ব্যবসায়ীরা।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, জেলায় অন্তত ১৫-১৬ জাতের আম উৎপাদন হয়, যা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। এবার আমের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে আশা করা যাচ্ছে।
এসআইএইচ