শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫ | ৬ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

আম ক্যালেন্ডারে আর্থিক ক্ষতির দাবি সাতক্ষীরার চাষী-ব্যবসায়ীদের

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন ও জেলা কৃষি অফিসের সমন্বয়ে প্রকাশিত আম ক্যালেন্ডারের কারণে পথে বসতে শুরু করেছে প্রান্তিক পর্যায়ের আম চাষীরা। গেল দুই বছরের ব্যবধানে চলতি বছর গোবিন্দভোগ ও আম্রপালি প্রজাতির আম ভাঙতে পেছানো হয়েছে ১০/১১ দিন। ২০২১ সালে ২ মে গোপালভোগ ও গোবিন্দভোগ প্রজাতির আম ভাঙার অনুমতি দেওয়া হলেও দুই বছরের ব্যবধানে এই আম ভাঙতে ১০দিন বৃদ্ধি করে ১২ মে করেছে জেলা প্রশাসন। আর আম্রপালি আম ভাঙতে ১১ দিন বৃদ্ধি করে ৪ জুনের পরিবর্তে করা হয়েছে ১৫ জুন।

জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর জেলার চার হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে আম চাষ করেছেন ১৩ হাজার ১০০ চাষি। এর মধ্যে সদর উপজেলায় এক হাজার ২৩৫ হেক্টর, কলারোয়ায় ৬৫৫ হেক্টর, তালায় ৭১৫ হেক্টর, দেবহাটায় ৩৭০ হেক্টর, কালিগঞ্জে ৮৩৫ হেক্টর, আশাশুনিতে ১৪৫ হেক্টর ও শ্যামনগরে ১৬০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। আর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৫ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন।

এ জন্য গত ১৬ এপ্রিল সকালে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের সম্মেলনে কক্ষে নিরাপদ আম বাজারজাতকরণ বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সভায় ১২ মে থেকে সাতক্ষীরার গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ, বোম্বাই, গোলাপঘাস, বৈশাখীসহ আরও কয়েকটি প্রজাতির আম, ২৫ মে হিমসাগর, ১ জুন ল্যাংড়া ও ১৫ জুন আম্রপালি ভাঙার অনুমতি দেয় জেলা প্রশাসন।

অথচ আমের রাজধানী হিসেবে পরিচিত চাঁপাইনবাবগঞ্জে গত কয়েক বছর ধরে কোনো প্রকার আম ক্যালেন্ডার প্রকাশ করা হয় না। আম চাষী ও ব্যবসায়ীরা তাদের সুবিধামতো গাছ থেকে ফল সংগ্রহ করে বাজারজাত করেন। এক্ষেত্রে সহযোগিতা করেন সেখানকার সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ। সেখানে সাতক্ষীরার মতো আম ক্যালেন্ডার প্রকাশ করা কতটুকু যুক্তিসংগত? জেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগের দায়িত্ব কী? সেটা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে।

আম সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভৌগলিক কারণে দেশে প্রথম আম পাকে সাতক্ষীরায়। সেখানে জেলা প্রশাসন ও জেলা কৃষি বিভাগ প্রতি বছর আম ভাঙার তারিখ পেছানোর কারণে প্রতি বছর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা। এ জন্য আম ক্যালেন্ডার বাতিল করে জনসচেতনতা ও বাজার মনিটরিংয়ের উপরে গুরুত্ব দিতে জেলা প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ করেন তারা।

তবে সাতক্ষীরা জেলা কৃষি বিভাগ বলছে, প্রকাশিত আম ক্যালেন্ডার নামমাত্র করা। নির্ধারিত তারিখের আগে যদি কোনো বাগানে আম পাকে তা হলে ওই এলাকার সংশ্লিষ্ট কৃষি কর্মকর্তার মাধ্যমে উপজেলা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে বাজারজাত করতে পারবেন তারা।

এ প্রসঙ্গে সাতক্ষীরার সদর উপজেলার আম ব্যবসায়ী সুফিয়ান জানান, প্রতি বছর প্রায় ৬০ বিঘা জমিতে আম চাষ করেন তিনি। তবে জেলা প্রশাসন ও জেলা কৃষি বিভাগের প্রকাশিত আম ক্যালেন্ডারের কারণে প্রতি বছর ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। তবে গেল কয়েক বছরের চেয়ে এবার ক্ষতির পরিমাণটা অনেকাংশে বেশি বলে জানান তিনি।

শফিকুল ইসলাম নামে অপর এক আম ব্যবসায়ী জানান, কয়েক লাখ টাকা দিয়ে এবার ৪০টি আম বাগান কিনেছেন তিনি। এর ভিতরে ৫টা বাগানের গোবিন্দভোগ প্রজাতির আম পাকলেও ভাঙতে পারছেন না। এতে করে আর্থিকভাবে প্রচুর ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।

এই আম ব্যবসায়ী বলেন, আমাদের হাতে জেলা প্রশাসন থেকে একটা লিফলেট দেওয়া হয়। সেখানে ১২ মে থেকে গোবিন্দভোগ প্রজাতির আম, ২৫ মে হিমসাগর, ১ জুন ল্যাংড়া ও ১৫ জুন আম্রপালি ভাঙার জন্য বলা হয়। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্ধারিত তারিখের আগে আম পাকলে করণীয় কী সেই সম্পর্কিত বিষয়ে জেলা প্রশাসনের দেওয়া ওই লিফলেটে কোনো কিছু লেখা ছিল না। তবে কৃষি বিভাগ যদি বলে থাকে আমাদেরকে আম পাকা সম্পর্কিত কোনো নির্দেশনার লিফলেট দিয়েছে তাহলে সেটা তাদের ভুল হবে।

সুফিয়ান-শফিকুলের মতো একাধিক আম চাষী ও ব্যবসায়ীরা আম ক্যালেন্ডার নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ১২ মে থেকে গোবিন্দভোগ প্রজাতির আম ভাঙার অনুমতি দেয় জেলা প্রশাসন। তবে ওই তারিখে অধিকাংশ বাগানে হিমসাগর আম পাকবে। আর গোবিন্দভোগ প্রজাতির অধিকাংশ আমের কোনো অস্তিত্ব থাকবে না। এভাবে আম ক্যালেন্ডার করে চাষী-ব্যবসায়ীদের ক্ষতি করার অধিকার কী কারও আছে? বলে প্রশ্ন রাখেন তারা।

এ সময় তারা আরও বলেন, এভাবে আম ক্যালেন্ডার না করে প্রশাসনের উচিত বাজার মনিটরিং করা। তৃণমূলের চাষীদের সাথে মতবিনিময় ও জনসচেতনতা করা।

খোজঁ নিয়ে জানা যায়, দেশের অধিকাংশ জায়গায় আম ক্যালেন্ডার প্রকাশ না করা হলেও সাতক্ষীরায় প্রকাশ করা হয়। একমাত্র ল্যাংড়া আম ব্যতিত প্রতি বছর আম ভাঙার তারিখ পেছানো হয় এই জেলাতে। এতে করে দুর্যোগ কবলিত এই অঞ্চলের আম চাষী ও ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতির শিকার হন। গেল কয়েক বছরের ব্যবধানে এবার বিভিন্ন প্রজাতির আম ভাঙার তারিখ পেছানো হয়েছে ১০/১১ দিন। এতে করে সাতক্ষীরা থেকে প্রতি বছর যে আম ইউরোপের বাজারসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হতো এবার বিশ্ব বাজারে সেই আম রপ্তানিতে অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে সাতক্ষীরার আম থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে বিভিন্ন এজেন্ট। কেননা, আম ভাঙ্গার যে ক্যালেন্ডার জেলা প্রশাসন প্রকাশ করেছে সেই সময়ে দেশের অন্যান্য জায়গার আমে পাক ধরে। আর সাতক্ষীরার চেয়ে বাজার দর কম ও পরিবহন খরচ কম হওয়াতে ওই সমস্ত এলাকায় ঝুঁকছেন এজেন্টরা। এতে করে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে সাতক্ষীরার আম চাষীরা।

অথচ আমের আতুরঘর হিসেবে পরিচিত চাপাইনবাবগঞ্জে ২০২১ সাল থেকে আম ক্যালেন্ডার প্রকাশ করে না সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ। এই বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩৭ হাজার ৮৫৫ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। চাষকৃত ওই আম কেউ যাতে অপরিপক্ব অবস্থায় ভাঙতে বা বাজারজাত করতে না পারে সেক্ষেত্রে জেলা প্রশাসন নিয়মিত মনিটরিং করলেও তারা কোনো প্রকার আম ক্যালেন্ডার প্রকাশ করিনি। মূলত, আম চাষী ও ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে এমন সিদ্ধান্ত নেন তারা।

এ প্রসঙ্গে চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক এ. কে. এম গালিভ খান বলেন, একটা সময় চাঁপাইনবাবগঞ্জে আম ক্যালেন্ডার প্রকাশ করা হতো। এতে (আম ক্যালেন্ডার প্রকাশ করলে) চাষী-ব্যবসায়ীদের ক্ষতির পরিমাণটা বেশি হয়। এ কারণে, গেল কয়েক বছর ধরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে আম ক্যালেন্ডার প্রকাশ করা হয় না। বাগানে আম পাকলে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা তাদের সুবিধামতো বাজারজাত করেন। এক্ষেত্রে জেলা প্রশাসন ও জেলা কৃষি বিভাগ তাদেরকে সহযোগিতা করেন। তবে কেউ যাতে অপরিপক্ব আম বাজারজাত করতে না পারেন এ জন্য জেলা প্রশাসন ও জেলা কৃষি বিভাগ নিয়মিত আমবাগানসহ বাজার মনিটরিং করেন।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ন কবিরের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেস্টা করেও তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা জেলা কৃষিসম্প্রসারণ (খামারবাড়ি) অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো.সাইফুল ইসলাম বলেন, 'আম ক্যালেন্ডারের কারণে কোনো চাষী ও ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না।'

‘চাষী-ব্যবসায়ীরা দাবি করছেন তারা ক্ষতিগ্রস্ত’- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'নির্ধারিত তারিখের আগে যদি কোনো বাগানে আম পাকে তাহলে ওই এলাকার সংশ্লিষ্ট কৃষি কর্মকর্তার মাধ্যমে উপজেলা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে বাজারজাত করতে পারবেন।’

‘ভৌগলিক কারণে সাতক্ষীরার আম আগাম পাকে অথচ প্রতি বছর আম ভাঙার তারিখ পেছানো হয় অথচ চাপাইনবাবগঞ্জে আম ক্যালেন্ডার হয় না তাহলে সাতক্ষীরাতে কেন?’-এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আম ক্যালেন্ডারটি না করলে নই বলে করা। মূলত জেলায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী রয়েছেন যারা অপরিপক্ব অবস্থায় আম ভেঙে বাজারজাত করে। এ কারণে জেলা প্রশাসন ও জেলা কৃষি বিভাগের সমন্বয়ে আম ভাঙার একটি প্রাথমিক তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। যাতে অসাধু ব্যবসায়ীরা অপরিপক্ব আম বাজারজাত করতে না পারে।'

এসআইএইচ

Header Ad
Header Ad

ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালই যেন নিজেই অসুস্থ!

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার ৫০ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসেন ভূঞাপুর ছাড়াও আশপাশের গোপালপুর, ঘাটাইল ও কালিহাতী উপজেলার অসংখ্য মানুষ। তবে জনগুরুত্বপূর্ণ এই হাসপাতালটি বর্তমানে নিজেই এক অসুস্থ প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠেছে।

বছরের পর বছর ধরে চলে আসা নানা অব্যবস্থাপনা, জনবল ও যন্ত্রপাতির ঘাটতি এবং অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ—সব মিলিয়ে এই সরকারি হাসপাতালটি এখন রোগীদের ভোগান্তির আরেক নাম।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের ভিতর ও বাইরের পরিবেশ একেবারেই নোংরা ও দুর্গন্ধযুক্ত। নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাবে জমে থাকা ময়লা-আবর্জনা থেকে ছড়াচ্ছে তীব্র দুর্গন্ধ, যা রোগী ও তাদের স্বজনদের দীর্ঘ সময় ধরে সইতে হচ্ছে। বিশেষ করে টয়লেটের অবস্থা ভয়াবহ; অধিকাংশ টয়লেট ব্যবহারের অযোগ্য এবং পরিচ্ছন্নতার কোনো ব্যবস্থাই নেই। পুরুষ ও নারী ওয়ার্ড উভয়ের রোগীরা এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

 

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন অবস্থায় হাসপাতাল কার্যত অন্ধকারে ডুবে যায়। হাসপাতালে একটি জেনারেটর থাকলেও তা চালু করা হয় না এবং সেটিও বহু পুরনো। হাতে গোনা কয়েকটি চার্জিং বাল্ব থাকলেও সেগুলোর অনেকগুলোর আলো টিকেই না, কিছু সময় পর বন্ধ হয়ে যায়। শিশু ওয়ার্ডের (ডায়রিয়া) মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চার্জিং বাল্ব পর্যন্ত নেই। ফলে রাতের বেলায় এক ভয়ংকর ভূতুড়ে পরিবেশ সৃষ্টি হয়। আলো না থাকায় নার্সদের মোবাইল ফোনের ফ্ল্যাশলাইট ব্যবহার করে সেবা দিতে দেখা গেছে।

চরম গরমে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন শিশু ও বৃদ্ধ রোগীরা। শিশু ওয়ার্ডে থাকা আটটি ফ্যানের মধ্যে তিনটি সম্পূর্ণ নষ্ট, আর যেগুলো সচল রয়েছে, বিদ্যুৎ না থাকায় সেগুলোও চলে না। ফলে শিশু রোগীরা ভ্যাপসা গরমে হাঁসফাঁস করছে, তাদের স্বজনরা হাতপাখা বা চার্জার ফ্যান নিয়ে চেষ্টা করছেন কিছুটা স্বস্তি দিতে।

হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রবেশ করে দেখা যায়, মেঝেতে ময়লার দাগ, দেয়ালে থুতু, কফ ও পানের পিকের ছিটা। শয্যা ও ওষুধ রাখার ট্রেগুলোতেও দেখা গেছে মরিচা ও জমে থাকা ময়লা। এসব স্থানে মাছি ঘুরে বেড়াচ্ছে অবলীলায়, যা পুরো হাসপাতালের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশকে আরও প্রকট করে তুলেছে।

এমন পরিবেশে চিকিৎসা নিচ্ছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর আলী, যিনি হাসপাতালের বারান্দায় ফ্যানহীন পরিবেশে ভর্তি রয়েছেন। অভিযোগ করে তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দেওয়ার পরও কোনো বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়নি। টয়লেট ব্যবহারের অনুপযোগিতা নিয়েও তিনি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

তিন মাসের শিশুকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোজিনা বেগম বলেন, টয়লেটের অবস্থার কারণে তিনি পানি ও খাবার খাওয়া কমিয়ে দিয়েছেন, যেন টয়লেট ব্যবহার না করতে হয়। টয়লেটে ঢোকা তো দূরের কথা, পাশে দাঁড়ানোও কষ্টকর হয়ে পড়েছে দুর্গন্ধ ও অপরিচ্ছন্নতার কারণে।

গোপালপুর উপজেলার বড়শিলা গ্রামের রোগীর স্বজন সাজেদা বেগম বলেন, এখানে চিকিৎসা নিতে এসে রোগীর স্বজনরাও অসুস্থ হয়ে পড়ছে। কোনো অভিযোগ করার সুযোগ নেই, আর কেউ কিছু বললেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।

স্থানীয়দের দাবি, ২০২২ সালে ডা. মোহাম্মদ আব্দুস সোবহান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও) হিসেবে যোগদানের পর থেকেই হাসপাতালের এই বেহাল অবস্থা তৈরি হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা, কর্মচারী ও নার্স জানান, ডা. সোবহান কর্তৃত্ববাদী মনোভাব পোষণ করেন। তার বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ থাকলেও প্রশাসনিকভাবে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উল্টো অভিযোগকারীরা বদলি বা হয়রানির শিকার হওয়ার আশঙ্কা করছেন।

তবে আরএমও ডা. খাদেমুল ইসলাম বলেন, “সমস্যা যে নেই, সেটা বলছি না। তবুও আমরা সীমিত জনবল ও সামর্থ্যে কাজ করে যাচ্ছি। শতভাগ কাজ সম্ভব হয় না।”

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আব্দুস সোবহান বলেন, “জেনারেটর থাকলেও সেটি চালাতে সরকারি বরাদ্দ নেই। মাঝেমধ্যে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালানো হয়। ক্লিনার মাত্র একজন, মাঝে মাঝে বাইরে থেকে লোক ডেকে এনে পরিষ্কার করাতে হয়। আর ফ্যান বা লাইট যেকোনো সময় নষ্ট হতে পারে, যখন জানা যায়, তখনই ব্যবস্থা নেওয়া হয়।” বীর মুক্তিযোদ্ধার বারান্দায় চিকিৎসা নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, “মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কেভিনের ব্যবস্থা রয়েছে। যদি এমন কিছু হয়ে থাকে, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

সার্বিকভাবে ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে চিকিৎসাসেবা যে ভয়াবহ নাজুক অবস্থায় রয়েছে, তা এই চিত্রগুলো স্পষ্ট করে দেয়। দ্রুত সময়ের মধ্যে যথাযথ নজরদারি ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা না নিলে, এই হাসপাতাল রোগীদের সুস্থতার জায়গা হয়ে না থেকে এক ভয়াবহ দুর্ভোগের কেন্দ্রে পরিণত হতে পারে।

Header Ad
Header Ad

জাতীয় পার্টি কোনো সুবিধাবাদী দল নয়: জিএম কাদের

জাতীয় পার্টি (জাপা) কোনো সুবিধাবাদী দল নয় বলে দাবি করেছেন দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। আজ শনিবার সকালে রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে আয়োজিত বর্ধিত সভায় তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমাদের নামে অনেক ধরনের অপপ্রচার করা হচ্ছে। কিছু মানুষ আমাদেরকে নানাভাবে হেনস্তা করার চেষ্টা করছেন। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন মাধ্যমে বক্তব্য-বিবৃতি দিয়ে জানাশোনা কথাকে তারা ভুলভাবে তুলে ধরছেন। তাদের কথা হলো- আমরা সুবিধাবাদী, সুবিধাভোগী।

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, আমরা বলতে চাই জাতীয় পার্টির সিংহভাগ মানুষ সব সময় জনগণের পাশে ছিল। জনগণের স্বার্থে তারা সংগ্রাম করেছে। আগামীতেও তারা জনগণের পাশেই থাকবে।

 

Header Ad
Header Ad

প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট নিয়ে আইসিইউতে পরিচালক সৃজিত মুখার্জি

ছবি: সংগৃহীত

ওপার বাংলার জনপ্রিয় নির্মাতা সৃজিত মুখার্জিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গুরুতর সমস্যা নিয়ে শুক্রবার মধ্যরাতে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেয়া হয় তাকে। পরে চিকিৎসকরা তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণের জন্য আইসিইউতে নিয়ে যান।

পরিচালকের ঘনিষ্ঠ সুত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, গতকাল রাতে হঠাৎই শ্বাসকষ্ট শুরু হয় সৃজিতের। সেই সঙ্গে বুকে হালকা ব্যথাও অনুভব করছিলেন পরিচালক। এরপর রাত সাড়ে ১২ টার দিকে দ্রুত হাসপাতালে নেয়া হয় তাকে।

সেখানে রাতেই বেশ কিছু টেস্ট করানো হয়। শনিবার টেস্টের রিপোর্ট পাওয়ার কথা রয়েছে। আর তা দেখে চিকিৎসকেরা সিদ্ধান্ত নেবেন কতদিন পরিচালককে হাসপাতালে থাকতে হবে।

আরও পড়ুন: অন্তরঙ্গ দৃশ্যের আগে প্রেমিক ও পরিবারের অনুমতি নিয়েছিলেন কৌশানি। তবে হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, সৃজিতের শারীরিক অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল।

সদ্যই লিমকা বুক অফ রেকর্ডসের তালিকায় স্থান দখল করেছে সৃজিতের ‘অতি উত্তম’। ইনস্টাগ্রামে গর্বের কথা শেয়ার করেছেন তিনি। তাছাড়া এই নির্মাতার নতুন সিনেমা ‘কিলবিল সোসাইটি’ মুক্তি পেয়েছে গত ১১ এপ্রিল।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালই যেন নিজেই অসুস্থ!
জাতীয় পার্টি কোনো সুবিধাবাদী দল নয়: জিএম কাদের
প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট নিয়ে আইসিইউতে পরিচালক সৃজিত মুখার্জি
জুলাই গণঅভ্যুত্থান যেন কোনোভাবেই ব্যর্থ না হয় : নাহিদ ইসলাম
আ.লীগের মিছিল ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নির্দেশ
হাসিনা-কাদেরসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে ‘রেড নোটিশ’ জারির আবেদন
নিখোঁজের ১৪ ঘণ্টা পর সেই শিশু সেহেরিশের লাশ উদ্ধার
আগামী ঈদের আগেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কাজ করছে সরকার
লাল কাপড়ে ঢাকা হবে দেশের সব পলিটেকনিকের ফটক
৬০ বছর বয়সে বিয়ে করলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ
চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে ১২ কেজি রূপার গয়না জব্দ
ফয়জুল করীমকে বরিশালের মেয়র ঘোষণার দাবি
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নেওয়া বাংলাদেশি যুবক নিহত
গোবিন্দগঞ্জে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আটক
বাংলাদেশি যুবককে ধরে নিয়ে বিএসএফের হাতে তুলে দিল ভারতীয়রা
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে এনসিপির বৈঠক শনিবার
বাংলাদেশের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে যা জানাল পাকিস্তান
গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলা, শিশুসহ একই পরিবারের ১৩ জন নিহত
ভারতীয় ক্রিকেটাররা আমাকে নগ্ন ছবি পাঠাত, অভিযোগ ট্রান্সজেন্ডার ক্রিকেটারের
১৮৭ জনকে নিয়োগ দেবে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর