মেহেরপুরে দুই ভাইকে হত্যা মামলায় ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড
মেহেরপুরের গাংনীতে রফিকুল ইসলাম (৪০) ও আবু জেহেল (৩৫) নামে দুই ভাইকে হত্যা মামলায় ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।
রবিবার (২ এপ্রিল) বেলা ১২টার দিকে মেহেরপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রিপতি কুমার বিশ্বাস এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- কাজিপুর গ্রামের আছের উদ্দীনের ছেলে আতিয়ার (৪২), আব্দুল জলিলের ছেলে জালাল উদ্দীন (৪২), কিয়ামতের ছেলে হালিম (৩৪), নজির উদ্দীনের ছেলে দবির উদ্দীন (৩৩), নজির আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম (৪১), মৃত দবীর উদ্দীনের ছেলে শরিফ (৩৯) ও ফরিদ (৪৬), আফেল উদ্দীনের ছেলে আজিজুল (৩৫), মুনছারের ছেলে মনি (২৭) ।
তাদের মধ্যে জালাল উদ্দীন পলাতক থাকলেও রায় প্রদানের সময় দণ্ডপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া বাকি ৫ জন আলমাস, আরিফ, রাজিব, হারুন ও ফারুকের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস প্রদান করেন আদালত।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১২ সালের ৫ জুন কাজিপুর এলাকায় ফেনসিডিলের একটি বড় চালান ধরা পড়ে। ওই ঘটনায় একই গ্রামের কিয়ামুর্দ্দীনের ছেলে আবু জেহেল ও রফিকুল ইসলামের ফেনসিডিল ধরিয়ে দেওয়ার সঙ্গে হাত রয়েছে এমন অভিযোগ তোলা হয়। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২০১২ সালের ১৫ জুন রাতে বিষয়টি মীমাংসা করবে বলে দুই ভাইকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে যায় অভিযুক্তরা। পরদিন সকালে কাজিপুর গ্রামের মন্ডল পাড়ার বাংলাদেশ-ভারত ১৪৫নং সীমানা পিলারের পাশ থেকে দুই ভাইয়ের ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে তাদের হত্যার ঘটনায় তাদের বোন জরিনা বেগম বাদী হয়ে গাংনী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান মামলার প্রাথমিক তদন্ত শেষ করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলায় মোট ১৭ জন সাক্ষীর স্বাক্ষ্যপ্রমাণের উপর ভিত্তি করে ৯ জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অতিরিক্ত পিপি অ্যাড. কাজী শহিদুল হক এবং আসামি পক্ষে ছিলেন অ্যাড. এ কে এম শফিকুল আলম, আতাউল হক ও কামরুল হাসান কৌশলী।
এ মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাড. কাজী শহীদুল হক। তিনি বলেন, এটি একটি দৃষ্টান্তমূলক রায়। এ রায় নজির হয়ে থাকবে। কারণ মামলায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও রয়েছে।
অন্যদিকে আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাড. এ কে এম শফিকুল আলম বলেন, এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট নয়। ন্যায় বিচারের জন্য উচ্চ আদালতে আপিল করব।
এসজি