শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১৩ পৌষ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

নির্বাচন নিয়ে সাতক্ষীরার রাজনীতি- পর্ব ৪

নির্বাচন নিয়ে জাতীয় পার্টির প্রচারে নেই অগ্রগতি

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। বিএনপি নিরপেক্ষ সরকার ইস্যুতে অনড় থাকলেও তলে তলে নির্বাচনের প্রস্তুতি রাখছে। অপরদিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সরকারের সঙ্গে ‘ডোন্ট ডিস্টার্ব’ চুক্তি করে রাজপথের আন্দোলন থেকে সরে এসেছে জামায়াতে ইসলামী।

প্রকাশ্যে কোনো আন্দোলনে না থাকলেও যুদ্ধাপরাধীর তকমা লাগা এই সংগঠনটি গতবছর বিএনপি জোট থেকে সরে আসার ঘোষণা দিয়েছে। আর দেশের ৩০০ আসনের বিপরীতে ইতোমধ্যে ১২০ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে তারা। তলে তলে সংগঠনকে সুসংগঠিত করার পাশাপাশি নিজেদের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে গোপনে নির্বাচনী কার্যক্রমও চালাচ্ছে দলটির নেতা-কর্মীরা। তবে দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সবার চোখ এখন জাতীয় পার্টির (জাপা) দিকে!

১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টি প্রতিষ্ঠার পর থেকে সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত জাতীয় পার্টি ৫টি অংশে ভাগ হয়েছে। বর্তমানে জাপার মূল অংশ নিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দলটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ ও চেয়ারম্যান জিএম কাদের। বর্তমান সংসদে জাপার মূল অংশের ২৪ সদস্য প্রতিনিধিত্ব করছেন। দেশের রাজনীতিতে জাতীয় পার্টি বড় ধরনের একটা ফ্যাক্ট হলেও জাতীয় পার্টিতে নাটকীয়তা নতুন কিছু নয়।

বায়ুদূষণে রাজধানী ঢাকার যেমন বেহাল দশা, রাজনৈতিক দল হিসেবে জাতীয় পার্টির অবস্থাও বর্তমানে তেমন। দলটির প্রতিষ্ঠাতা এরশাদের মৃত্যুর পর দেবর-ভাবির বিরোধে বর্তমানে জাতীয় পার্টির অবস্থা ‘হ-য-ব-র-ল’ হলেও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নতুন করে দলটি কোনো পলিটিকাল ড্রামা দেখাবে কি না? সেটাই এখন ভাবনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে অন্যান্য রাজনৈতিক সংগঠনের কাছে।

এদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরার ৪টি আসনে রাজনৈতিক সংগঠনগুলো যখন তৎপর তখন ব্যতিক্রম অবস্থানে জাতীয় পার্টি। টানা দুই মেয়াদে জাতীয় পার্টি দেশের প্রধান বিরোধী দলের ভূমিকায় থাকলেও সেই অর্থে সাতক্ষীরার শহর থেকে গ্রামপর্যায়ে জাতীয় পার্টি নিজেদের জায়গা ও কর্মী সমর্থক বাড়াতে পারিনি।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন নিয়ে চার পর্বের ধারাবাহিকতার আজ শেষ পর্বে থাকছে সাতক্ষীরার ৪টি আসনে জাতীয় পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থী ও দলটির আদ্যোপান্ত নিয়ে।

টানা দুই মেয়াদে জাতীয় পার্টি (জাপা) বিরোধী দলের ক্ষমতায় থাকলেও সাতক্ষীরায় জাতীয় পার্টির অবস্থান নড়বড়ে। কেন্দ্রীয় নেতাদের দ্বন্দ্বে প্রভাব পড়েছে তৃণমূলে। বর্তমানে সাতক্ষীরায় সে অর্থে (শহরকেন্দ্রিক ব্যতীত) দলটির সাংগঠনিক কার্যক্রম নেই বললেও চলে। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় মহাজোটের প্রার্থী হয়ে সাতক্ষীরার ৪টি আসনের মধ্যে ২টি আসনে জয় পায় জাতীয় পার্টি। তবে পরবর্তী দুটি সংসদ নির্বাচনে আসনগুলো আর ফিরে পায়নি দলটি।

সাতক্ষীরা-১: জেলার কলারোয়া ও তালা উপজেলা নিয়ে গঠিত সাতক্ষীরা-১ আসন। এ আসন থেকে সর্বশেষ ১৯৮৮ সালের ৩ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন সৈয়দ দীদার বখত। সে বারের নির্বাচন আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, কমিউনিস্ট পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টিসহ দেশের অধিকাংশ প্রধান দলই বর্জন করে। ওই নির্বাচনে জয়লাভ করার পর ১৯৮৯ সালের ২৩ ডিসেম্বর সৈয়দ দীদার বখত এরশাদের মন্ত্রিসভায় সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান এবং ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্ব পালন করেন।

পরে ২০০০ সালে তিনি বিএনপিতে যোগদান করেন কিন্তু বিএনপি থেকে সাতক্ষীরা-১ আসনের মনোনয়ন না পাওয়ায় লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টিতে যোগদান করেন। পরে তিনি পুনরায় জাতীয় পার্টিতে ফিরে আসেন এবং ২০১৯ সালের মে মাসে তাকে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য করা হয়। যদিও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করলেও প্রদত্ত ভোটের ৮ ভাগের কম ভোট পাওয়ায় জামানত বাজেয়াপ্ত হয় তার। তবে জেলার ৪টি আসনে অবস্থিত ৭টি উপজেলার মধ্যে দিদার বখতয়ের নিজ উপজেলা তালাতে জাতীয় পার্টি সাংগঠনিকভাবে অনেক মজবুত। এই আসনটিতে সাবেক সংসদ ও প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করার সুবাদে এখনো বেশ জনপ্রিয় তিনি। এ কারণে সত্তরোর্ধ্ব সৈয়দ দীদার বখত-এ ভরসা রাখতে হবে জাতীয় পার্টির। জাতীয় পার্টি থেকে সাতক্ষীরা-১ আসনে সৈয়দ দীদার বখত যে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হবেন সেটা একপ্রকার নিশ্চিত।

সাতক্ষীরা-২: মহাজোটের প্রার্থী হয়ে সর্বশেষ নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে এ আসনে জয় পায় জাতীয় পার্টি। এরপর অনুষ্ঠিতব্য দুটি সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির কোনো প্রার্থী এ আসন থেকে জয় পাইনি। বরং কাঙ্ক্ষিত ভোট না পাওয়ায় এ আসনে জামানত হারাতে হয় জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের। এবারের নির্বাচনে এই আসন থেকে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাশী কেন্দ্রীয় জাপার নেতা শেখ মাতলুব হোসেন লিয়ন। এ ছাড়া সাতক্ষীরা জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি অ্যাডভোকেট শেখ আজহার হোসেন, জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক আশরাফুজ্জামান আশু এ আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন চাইবেন বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।

সাতক্ষীরা-৩: এই আসন থেকে এখন পর্যন্ত একবার জয় পেয়েছে জাতীয় পার্টি। ১৯৮৮ সালের ৩ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন নিয়ে জয়লাভ করেন জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাড. স ম সালাহউদ্দিন সরদার। এর আগে ১৯৮৬ সালের ৭ মে অনুষ্ঠিতব্য সংসদ নির্বাচনে তিনি জয়লাভ করলে সেবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেছিলেন তিনি। এরপর থেকে জাতীয় পার্টির কোনো প্রার্থী এ আসন থেকে জয় পাইনি। তবে এবারের নির্বাচনে এ আসন থেকে জাতীয় পার্টির মনোনয়নের তালিকায় অ্যাড. স ম সালাহউদ্দিনসহ দেবহাটা উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ আবুল ফজলের নাম শোনা যাচ্ছে।

সাতক্ষীরা-৪: সর্বশেষ নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টির গোলাম রেজা নির্বাচনে জয়লাভ করেন। এরপর দুবার জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও এ আসন ফিরে পায়নি জাতীয় পার্টি। তবে এই আসনে জাতীয় পার্টির যেমন প্রভাব রয়েছে তেমন আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াতের প্রভাব থাকায় এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চতুর্মুখী হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে জাতীয় পার্টির হয়ে দলীয় মনোনয়ন চাইবেন কালিগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবর রহমানসহ আরও কয়েকজন।

দ্বাদশ নির্বাচন নিয়ে তৃণমূলের নেতা-কর্মীর ভাবনা: জাতীয় পার্টির প্রধান দুই কর্ণধার দেবর-ভাবির বিরোধে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। তারা বলছেন, ইতোপূর্বে জাতীয় পার্টির নেতাদের বিরোধের কারণে দলটি আজ ৫ ভাগে বিভক্ত। তবে সবার মধ্যে যদি ঐক্য থাকত তাহলে জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগ-বিএনপির চেয়ে দেশের অন্যতম একটা রাজনৈতিক দল হতে পারত।

এবারের নির্বাচনে কেমন প্রার্থী চান তারা? প্রশ্নের জবাবে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা বলেন, আমরাতো এখনো এটা জানি না এবার জাতীয় পার্টি মহাজোটের শরিক হয়ে নির্বাচন করবে নাকি মহাজোট ব্যতীত নির্বাচন করবে। সম্প্রতি শুনছি জাতীয় পার্টি এককভাবে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে। তবে যদি সেটা হয় তাহলে সাতক্ষীরার অনেক আসন যোগ্য প্রার্থীর সংকটে ভুগবে বলে জানান তারা।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাবনা: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রস্তুতি সম্পর্কিত বিষয়ে কথা হয় দলটির অনেক কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে। তারা বলছেন, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ঘুরে দাঁড়াতে চায় জাতীয় পার্টি (জাপা)। আগামী সংসদ নির্বাচনের জন্য আমরা ৩০০ আসনেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। যেটা জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে দলটির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের ইতোমধ্যে গণ্যমাধ্যমকেও জানিয়েছেন।

দেবর-ভাবির বিরোধ নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে কি না? প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেবর-ভাবির বিরোধ প্রভাব ফেলবে না।

দলের মধ্যে যে সমস্যাটা ছিল সেটা মিটে গেছে দাবি করে তারা বলেন, জাতীয় পার্টি কারও দয়া-দাক্ষিণ্যে নয়, জনগণের ভালোবাসা নিয়ে ক্ষমতায় যেতে চাই। আর সে লক্ষ্যে তিন স্তরে প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া চলছে।

তবে সূত্র বলছে, জাতীয় পার্টি এখন ঘর সামলাবে নাকি দেবর-ভাবির বিরোধে বিভক্ত জাপার তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করবে? সেটা নিয়ে রাজনৈতিক এবং সাংগঠনিকভাবে দিশেহারা হয়ে পড়েছে দেবর-ভাবির নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির শীর্ষপর্যায়ের নেতারা। এ কারণে এবারের নির্বাচনে ষষ্ঠবারের মতো জাপা বিভক্ত হবে নাকি ভিন্ন কোমো চমক দেখাবে সেটাই এখন ভাবনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে দলটির তৃণমূলের নেতা-কর্মীসহ অন্যান্য রাজনৈতিক সংগঠনদের কাছে।

সব মিলিয়ে সাতক্ষীরার ৪টি আসনে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল, জামায়াতের জোট ছাড়ার ঘোষণা, বিএনপির যোগ্য প্রার্থীর সংকট, জাতীয় পার্টির দেবর-ভাবির বিরোধে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা বিভক্ত হওয়ায় এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যেকোনো দলের প্রার্থীকে জয় পেতে হলে তরুণ ও ভাসমান ভোটারদের সমর্থন লাগবে। অন্যথায় হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে জেলার সবকটি আসনে।

এসজি

Header Ad
Header Ad

দুর্নীতিবাজদের ফাইলগুলো পুড়ে গেছে : রুহুল কবির রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যদের দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরু হওয়ার পরই সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা রহস্যজনক। শুক্রবার রাজধানীর কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে জাতীয়তাবাদী ৮৮ এসএসসি ব্যাচ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

রিজভী অভিযোগ করেন, সচিবালয়ের মতো নিরাপদ সরকারি দপ্তরে আগুনে ভস্মীভূত হয়ে গেছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ফাইল। এর মধ্যে রয়েছে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত সাবেক কেবিনেট সচিবের ফাইল, যার ওপর তদন্ত চলছিল। তিনি প্রশ্ন করেন, “শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজনদের ফাইল তলব করার পরপরই কেন এমন ঘটনা ঘটল? এটি নিছক দুর্ঘটনা নয়, বরং পরিকল্পিত।”

তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার স্বৈরাচারের দোসরদের চিহ্নিত করে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। শেখ হাসিনার সহযোগীদের প্রশাসনে বসিয়ে গণতন্ত্র রক্ষার বিপ্লবকে ব্যর্থ করার চেষ্টা চলছে। যারা অতীতে গণতন্ত্র রক্ষায় আন্দোলন করেছে, তাদের বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষ তৈরি করার চেষ্টা হচ্ছে।

রিজভী বলেন, নির্বাচন গণতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনকে উপেক্ষা করে সংস্কারের কথা বলছে। তিনি অভিযোগ করেন, “এটি মঈনুদ্দিন-ফখরুদ্দিন আমলের ষড়যন্ত্রের মতো। জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচনই গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি। আনুপাতিক হারে নির্বাচন জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়, কারণ এটি জটিল এবং সরাসরি ভোটাধিকারের বিরোধী।”

রিজভী আরও বলেন, যারা গণতন্ত্রের জন্য জীবন দিয়েছে, তাদের অবদানের প্রতি সম্মান জানিয়ে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের রায়কে গুরুত্ব দিতে হবে। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারকে সতর্ক করে বলেন, গণতন্ত্র রক্ষার স্বার্থে জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করতে হবে এবং কোনো ষড়যন্ত্রমূলক পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকতে হবে।

Header Ad
Header Ad

শনিবার যেসব এলাকায় বিদ্যুৎ থাকবে না

ছবি: সংগৃহীত

সিলেট নগরীর ২৫ এলাকায় শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে। বিদ্যুৎ বিভাগ জানিয়েছে, জরুরি মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত এবং কিছু এলাকায় সকাল ৮টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হবে।

এ বিষয়ে সিলেট বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ এর প্রকৌশলী শামস-ই-আরেফিন বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছেন।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ১১ কেভি মুক্তিরচক ও ধোপাদিঘীরপাড় ফিডারের আওতাধীন এলাকাগুলোতে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে। এই এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে মেন্দিবাগ, নোয়াগাঁও সাদিপুর, বোরহানউদ্দীন রোড, কুশিঘাট, মীরেরচক, মুক্তিরচক, মুরাদপুর, পীরেরচক, উপশহর রোড, সোবহানীঘাট বিশ্বরোড, ডুবড়ী হাওর, সবজিবাজার, ফুলতলী মাদরাসা, হাফিজ কম্প্লেক্স, নাইওরপুল পয়েন্ট, ওসমানী শিশু পার্ক, ধোপাদিঘীরপাড় ও আশপাশের এলাকা।

অন্যদিকে, ১১ কেভি সোবহানিঘাট ও কালিঘাট ফিডারের আওতাধীন এলাকাগুলোতে সকাল ৮টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে। এই এলাকাগুলো হলো কাস্টঘর, চালিবন্দর, আমজাদ আলী রোড, মহাজনপট্টি, লালদিঘীরপাড়, হকার্স মার্কেট, বন্দরবাজার রোড, জেল রোড এবং আশপাশের অঞ্চল।

বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কাজ শেষ হলে নির্ধারিত সময়ের আগেই বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরায় চালু করা হবে। সাময়িক এ অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে বিভাগটি এবং গ্রাহকদের সহযোগিতা কামনা করেছে।

Header Ad
Header Ad

গুম অবস্থায় ভারতের কারাগারে যাওয়ার লোমহর্ষক বর্ণনা সুখরঞ্জন বালির

সুখরঞ্জন বালি। ছবি: সংগৃহীত

২০১২ সালের ৫ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামায়াত নেতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পক্ষে সাক্ষ্য দিতে এসে নিখোঁজ হন পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানি উপজেলার উমেদপুর গ্রামের বাসিন্দা সুখরঞ্জন বালি।

দীর্ঘ পাঁচ বছর পর ভারত থেকে মুক্তি পেয়ে দেশে ফিরে তিনি নিজের ওপর ঘটে যাওয়া ভয়াবহ অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। তার এই অভিজ্ঞতা বাংলাদেশে গুম, নির্যাতন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের এক মর্মস্পর্শী উদাহরণ।

২০১২ সালের ৫ নভেম্বর সকালে ঢাকার আদালতে যাওয়ার সময় সুখরঞ্জন বালিকে অপহরণ করা হয়। তিনি জানান, সাদা পোশাকধারী ব্যক্তিরা তাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে একটি অচেনা স্থানে নিয়ে যায়। চোখ বেঁধে তাকে অন্ধকার একটি ঘরে আটকে রাখা হয়। সেখানে তাকে মাঝে মাঝে খাবার দেওয়া হলেও কোনো আলো-বাতাস প্রবেশ করতে পারত না।

এরপর তাকে আরেকটি ঘরে নিয়ে যাওয়া হয় যেখানে জোরপূর্বক সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। তিনি জানান, তাদের প্রস্তাবে রাজি না হলে তাকে শারীরিক নির্যাতন, বৈদ্যুতিক শক এবং ভয়াবহ মানসিক যন্ত্রণা দেওয়া হয়।

অপহরণের কয়েকদিন পর তাকে বিজিবি ও পুলিশের সহায়তায় ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-এর হাতে তুলে দেওয়া হয়। বিএসএফ তাকে প্রচণ্ড মারধর করে এবং উত্তর চব্বিশ পরগণার স্বরূপনগর থানায় হস্তান্তর করে। সেখান থেকে তাকে বশিরহাট ও পরবর্তীতে দমদম কারাগারে পাঠানো হয়।

দমদম কারাগারে পাঁচ বছর কারাবাসের সময় বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা তার সাক্ষাৎকার নেয়। ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের আদেশে ২০১৮ সালে তিনি মুক্তি পান এবং দেশে ফিরে আসেন।

সুখরঞ্জন বালির অভিযোগ অনুযায়ী, বাংলাদেশ পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ তাকে অপহরণ করে এবং বিজিবি’র সহায়তায় বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করে। তিনি বলেন, "বাংলাদেশের একজন নাগরিককে রাষ্ট্রীয় বাহিনী কিভাবে অন্য একটি দেশের বাহিনীর হাতে তুলে দেয়?"

বিএসএফের হাতে নির্যাতনের দাগ এখনো তার শরীরে দৃশ্যমান। তিনি জানান, দমদম কারাগারে থাকা অবস্থায় তার পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার সহায়তায় তার মুক্তির ব্যবস্থা করেন।

দেশে ফিরে আসার পর তিনি পিরোজপুরে নিজের গ্রামে ফিরে যেতে সাহস পাননি। নিরাপত্তার কারণে বাগেরহাটে আত্মীয়দের আশ্রয়ে দিন কাটিয়েছেন। তিনি দাবি করেন, গুম এবং পাঁচ বছরের কারাবাসের কারণে তিনি শারীরিক ও মানসিকভাবে স্বাভাবিক জীবনযাপনে অক্ষম হয়েছেন।

২০১৮ সালে মুক্তির পর তিনি রাষ্ট্রের কাছে বিচার ও ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।

২০২৪ সালের আগস্টে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত গুম-সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ১,৬৭৬টি গুমের অভিযোগ জমা পড়েছে। এর মধ্যে অনেকগুলো অভিযোগে তৎকালীন সরকারের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশনার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এক ভাষণে বলেন, "গুম কমিশনের প্রতিবেদন মানুষ মানুষের প্রতি কী পরিমাণ নৃশংস হতে পারে তার দলিল।" তিনি আরও বলেন, "গুমের শিকার ব্যক্তিদের ভয় আজও কাটেনি।"

 

 

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

দুর্নীতিবাজদের ফাইলগুলো পুড়ে গেছে : রুহুল কবির রিজভী
শনিবার যেসব এলাকায় বিদ্যুৎ থাকবে না
গুম অবস্থায় ভারতের কারাগারে যাওয়ার লোমহর্ষক বর্ণনা সুখরঞ্জন বালির
শেখ হাসিনাকে ‘নারী’ বলতে রাজি নন মৎস্য উপদেষ্টা
সূর্যের সবচেয়ে কাছে মানুষের তৈরি যান
বর্তমান সরকার রিজার্ভ বাড়িয়েছে, ব্যাংক সেক্টর সচল করছে: জামায়াত আমির
বাংলাদেশ জটিল রাজনৈতিক সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে : মির্জা ফখরুল
সংবিধান সংস্কারে রাজনৈতিক দলের সংকল্প জরুরি: অধ্যাপক আলী রীয়াজ
চলতি বছরের বিজিবি-বিএসএফ বৈঠক হচ্ছে না
ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে নিহত সবাই একই পরিবারের
ইউসুফ (আঃ)- এর সমাধিতে নিয়ে গেল ইসরায়েলি সেনারা
ইন্টারপোলের রেড নোটিশে ৬৩ বাংলাদেশি: অপরাধীদের ধরতে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আজমীর বরখাস্তের আদেশ বাতিল
মাহফিলে আজহারী উঠবেন রাতে, দুপুরেই ভরে গেছে ময়দান
ইসরায়েলি হামলায় অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচলেন ডব্লিউএইচও প্রধান
থাইল্যান্ডে নিখোঁজ হওয়া বাংলাদেশিকে পাওয়া গেল থাই নারীর সঙ্গে হোটেলে  
হাসিনার দোসররা সচিবালয়ে পরিকল্পিতভাবে অগ্নিকাণ্ড করেছে: শাকিল উজ্জামান
ভারতে ইসকন মন্দিরে চিন্ময়ের আইনজীবীর বৈঠক
ভোটার হওয়ার বয়স ১৭ বছর নির্ধারিত হওয়া উচিত: ড. মুহাম্মদ ইউনূস  
নির্বাচনে অংশ নিতে খালেদা জিয়ার আইনগত কোনো বাধা নাই