দুটি ভোল মাছের দাম সাড়ে ১৮ লাখ টাকা
বঙ্গোপসাগরের বিরল প্রজাতির সামুদ্রিক দাঁতিনা ভোল মাছ ধরা পড়েছে ফারুক নামে এক জেলের জালে । আর এই মাছ বঙ্গোপসাগরের দুবলার চরে বিক্রি হয়েছে সাড়ে ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকায়। বেশি দাম পাওয়ার আশায় ৬৩ কেজি ৫০০ গ্রাম ওজনের মাছ দুইটি রবিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) মোংলা থেকে চট্টগ্রামে পাঠিয়েছেন আড়তদার।
মাছ ব্যাবসায়ীরা জানান, শুধুমাত্র মাছের মূল্য তা নয়, এই মাছের মধ্যে বিশেষ ধরনের ফুলকী ও প্যাটা রয়েছে। যার মূল্য কেজি প্রতি প্রায় কয়েক লাখ টাকা।
জানা গেছে, শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকালে সুন্দরবনের দুবলার চর থেকে মোংলা মৎস্য আড়তের ‘মেসার্স জয়মনি ফিস’ এর মালিক আল-আমিন এই মাছ দুটি ক্রয় করে মোংলায় নিয়ে আসে। মাছ দুটি এক নজর দেখতে ভিড় জমায় মোংলা মাছ বাজারের উৎসুক লোকজন।
মেসার্স জয়মনি ফিসের মালিক আল আমিন জানান, বৃহস্পতিবার রাতে সাগরের গহীনে মাছ ধরতে গেলে ফারুক হোসেনের জালে এই মাছ ২টি ধরা পড়ে । তা দুবলার চরে নিয়ে আসার পর নিলামে উঠানো হয়। ওই নিলামে ২০ থেকে ২৫ জন দরদাতার মধ্যে সর্বোচ্চ দরদাতা হয়ে মাছ দুইটি ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকায় কিনে নেই। তার মধ্যে বড় মাছটির ওজন ৩৬ কেজি ৫০০ গ্রাম, দাম হাকা হয় ১১ লাখ এবং ছোট আকারের মাছটির ওজন হয় ২৭ কেজি, দাম ধরা হয়েছে ৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। বিরল প্রজাতির সামুদ্রিক এই মাছ দুটির প্রতি কেজি মাছের মূল্য পড়েছে ২৯ হাজার ১৩৩ টাকা।
তিনি আরও জানান, মাছ দুটি সঠিক পদ্ধতিতে প্রসেসিং ও প্যাকেটজাত করে রবিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) মোংলা থেকে চট্রগ্রামের মাছের বড় বাজারে পাঠিয়েছেন।
এ বিষয়ে মোংলা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে ও মৎস্য সমবায় সমিতির সভাপতি মো. আফজাল ফরাজী বলেন, দাতিনা ভোল মাছ এ অঞ্চলে খুবই কম পাওয়া যায়। মোংলা পশুর নদী বা সুন্দরবন সংলগ্ন নদ-নদীতে আগে দুই-একটি মাছ পাওয়া গেলেও এখন দুর্বৃত্তরা জেলে সেজে সুন্দরবনে বিষ দিয়ে মাছ মেরে ফেলায় এখন আর এই মূল্যবান মাছ পাওয়া যায় না। মূলত এই মাছের ফুলকী-প্যাটা ও বালিশের কারণে দাম প্রচুর বেশি। এই মাছের প্যাটা ও বালিশ বিদেশে রপ্তানি হয় এবং এ দিয়ে ওষুধ তৈরি করা হয় ।
এ ব্যাপারে মোংলা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম জানান, সামুদ্রিক ভোল মাছ খুবই দামি মাছ। কারণ হিসেবে তিনি মনে করেন, ‘এই মাছের বায়ুথলি দিয়ে এক ধরনের সুতা তৈরি করা হয়। এই সুতা বিদেশে ওপেন হার্ট সার্জারির কাজে লাগে। এছাড়া বিয়ার তৈরির কাজেও ব্যবহৃত হয়।’
এসআইএইচ