৮ ডিগ্রিতে কাঁপছে চুয়াডাঙ্গা

শীতে কাঁপছে চুয়াডাঙ্গা। আজ শনিবার (৭ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় এ জেলার তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। কুয়াশার সঙ্গে উত্তরের হিমেল হাওয়ার কারণে জেঁকে বসেছে শীত। এদিকে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। বাতাসের আর্দ্রতা শতকরা ৯৫ ভাগ।
আবহাওয়া অফিস জানায়, শনিবার (৭ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। এর আগে শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) ছিল ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়ার এই পরিস্থিতি আরো কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ অফিসের ইনচার্জ মো. রাকিবুল হাসান।
সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলেনি। এ জন্য মানুষজন আগুন জ্বালিয়ে শীত নির্বারণের চেষ্টা করছে। সবচেয়ে কষ্টে আছে খেটে খাওয়া মানুষেরা। যাদের প্রতিদিন রুটি-রুজির সন্ধানে সকালে কাজে বের হতে হয় তারা প্রচণ্ড শীতে কাবু হয়ে যাচ্ছে।
রাজমিস্ত্রি দাউদ আলী বলেন, সকাল ৮টার মধ্যে কাজে লাগতে হয়। যে শীত তাতে হাত-পা অবশ হয়ে যাচ্ছে। সিমেন্ট-বালি দিয়ে কুর্নি ঘোরানোই মুশকিল।
প্রতিদিন সকালে ডিম বিক্রি করতে বেরিয়ে পড়েন হাবিল মিয়া। সকাল ৭টায় কথা হয় তার সঙ্গে। শীতে ঠকঠক করে কাপঁতে কাঁপতে হাবিল মিয়া জানান, শীত আর বাতাসে বড় বেকায়দায় পড়েছি। পেটের দায়ে বের হতে হচ্ছে।
ইটভাটা শ্রমিক ইলিয়াস বলেন, ভোরে ভাটায় এসে কাঁদার মেশিন থেকে কাঁদা নিয়ে ইট কাটা শুরু করেছি। ঠাণ্ডা বাতাসে বসা যাচ্ছে না।
চায়ের দোকানদার পঞ্চাশোর্ধ আকছেদ আলী বলেন, আমার জীবনে এত শীত দেখেনি। কেউ একটা কম্বলও দিল না।
তবে এসব শীতার্ত মানুষের মাঝে প্রতিদিন জেলা প্রশাসন ও বিভিন্ন ব্যক্তি এবং সংস্থার পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র বিশেষ করে কম্বল বিতরণ করা হচ্ছে। তবে তা চাহিদার তুলনায় কম।
এ প্রসঙ্গে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান বলেন, ‘এ জেলায় যে পরিমাণ শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। আরো শীতবস্ত্র চেয়ে মন্ত্রণালয়ে পত্র পাঠানো হয়েছে।’
জেলা ত্রাণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরকারিভাবে আজ (৭ জানুয়ারি) পর্যন্ত ২১ হাজার ১০০ পিস কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়াও চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের এমপি সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দারের পক্ষ থেকে ২ হাজার ৮৮৮ পিস কম্বল কেনা হয়েছে। যেগুলো বিতরণের কাজ চলছে।
এদিকে শীতজনিত কারণে জেলার হাসপাতালগুলোতে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে । বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধরা। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে ১৫টি বেডের বিপরীতে ভর্তি রয়েছেন ৫০ জন। অপরদিকে প্রতিদিন ডায়রিয়া ওয়ার্ডে প্রচুর রোগী ভর্তি হচ্ছে।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. ফাতেহ্ আকরাম জানান, প্রতিদিন আউট ডোরে প্রায় দুই শতাধিক রোগী দেখা হচ্ছে। যাদের অধিকাংশই ঠাণ্ডা-সর্দি-কাশিসহ শীতজনিত রোগে আক্রান্ত।
এসআইএইচ
