সেতু ভেঙে জনদুর্ভোগ চরমে
নড়াইলের লোহাগড়া পৌরসভার একটি কাঠের সেতুটি ভেঙে পড়ে আছে প্রায় কয়েক মাস ধরে। সেতুটি সংস্কার বা নির্মাণেও নেই কোনো উদ্যোগ। ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সেতু ব্যবহারকারীদের। কারণ সেতুর অভাবে পাঁচ কিলোমিটার ঘুরে গন্তব্যস্থলে যেতে হচ্ছে তাদের। সাধারণ যাত্রীসহ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও অফিসগামী এবং হাট-বাজারের যাতায়াতকারীদের অতিরিক্ত অর্থ এবং সময় দুইটাই ব্যয় হচ্ছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, নবগঙ্গা নদীর উত্তরে চোরখালী, জয়পুর ও ছাতড়া গ্রাম নিয়ে গঠিত ১ নম্বর ওয়ার্ড। আর নদীর দক্ষিণে কচুবাড়ীয়া, রামপুর, শিংগা ও মশাঘুনি গ্রাম নিয়ে গঠিত পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড। পৌরসভার পশ্চিম এলাকার জনগণের যাতায়াত নিরবচ্ছিন্ন করার লক্ষ্যে ২০০৮ সালে নবগঙ্গা নদীর উত্তরের ঢোরখালী আর দক্ষিণের কচুবাড়ীয়া গ্রামের সোজাসুজি একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করে লোহাগড়া পৌর কর্তৃপক্ষ। তাতে করে পৌরবাসীর স্বল্প দূরত্বে পৌর কার্যালয়, উপজেলা সদর ও জেলা শহরে যাতায়াতে সুবিধা হয়। তবে চলতি বছরের জুনের শেষ দিকে বালু ব্যবসায়ীরা ড্রেজার পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে আনতে গিয়ে সেতুটি মাঝ বরাবর ভেঙে দেয়। তারপর থেকেই চরম দুর্ভোগে পড়ে যায় সেতু ব্যবহারকারীরা।
কচুবাড়িয়া গ্রামের শ্যাম সুন্দর বলেন, সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় ৫ কিলোমিটার ঘুরে শহরে যেতে হয়। এতে আর্থিকভাবে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি তেমনি সময়ও নষ্ট হচ্ছে। ব্রীজটা দ্রুত মোরামত করে দিলে সময় বাঁচবে এবং আর্থিক ক্ষতি থেকেও রক্ষা পাব আমরা।
ধোপাদাহ গ্রামের জাহিদুল হক জানান, তাদের ছেলে-মেয়ে ওপারের মাদ্রাসায় পড়ে। তারা এখন ঠিকমতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারছে না। এ ছাড়া নড়াইল সদর হাসপাতালে ও কোর্টে ঠিকমতো যেতে পারছে না গ্রামবাসী। এক মিনিটের পথ এখন ঘুরে যেতে সময় লাগছে এক ঘণ্টা। তারপর আবার সময় মতো এখান থেকে গাড়ি পাওয়া যায় না। ব্রীজটা খুবই জরুরি।
এলাকাবাসীর দাবি, জেলার 'সি' শ্রেণির এই পৌরসভার চার ভাগের একভাগ মানুষের সহজ যাতায়াতের জন্য সেতুটি যেন মেরামত করে ব্যবহার উপযোগী করা হয়। সেইসঙ্গে স্কুলে যাতায়াত ও সাধারণের অফিস-আদালত, হাট-বাজারসহ মূল সড়কে সংক্ষিপ্ত যাতায়াতের ব্যবস্থা করে দিয়ে মূল সড়কে সংযুক্ত করে দেওয়ার দাবিও জানান তারা।
এ ব্যাপারে লোহাগড়া পৌরসভার বর্তমান মেয়র ও লোহাগড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মসিয়ুর রহমান বলেন, সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথা জানলেও ক্ষতিপূরণ বা ড্রেজার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কোনো কথা বলতে পারেননি। তবে এই মুহূর্তে সেতু মেরামতের কথা না ভেবে সংসদ সদস্যের সঙ্গে কথা বলে স্থায়ী কংক্রিটের ব্রিজের নির্মাণের কথা ভাবছেন তিনি।
এসআইএইচ