১৬ বছর ধরে প্রতিবন্ধী সজীবের বাদাম বিক্রি
নড়াইলের লোহাগড়ায় বাদাম বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন প্রতিবন্ধী সজীব বিশ্বাস (৩১)। প্রতিবন্ধকতা তাকে চার দেয়ালের মাঝে আটকে রাখতে পারেনি। জীবন যুদ্ধে লড়ে যাচ্ছেন নিরবে। মাকে নিয়ে একটু সুখে থাকার আশায় রোজ বাদামের ডালা গলায় ঝুলিয়ে পথে পথে ঘুরে বাদাম বিক্রি করছেন সজীব। এভাবেই তার জীবনের ১৬টি বছর কেটে গেছে। তিনি লোহাগড়া পৌরসভার কুন্দশী গ্রামের শুবদেব বিশ্বাসের ছেলে।
জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, অফিস চত্বর, হাট-বাজারে ফেরি করে বাদাম বিক্রি করেন সজীব। প্রতিদিন বাদাম বিক্রি করে যে অর্থ আয় করেন তা দিয়ে সংসার চালান। তবে দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ায় মাকে নিয়ে সংসার চালাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে সজীবকে।
বাদাম বিক্রেতা প্রতিবন্ধী সজীব বিশ্বাস জানান, বাদাম বিক্রি করে তার সংসার চলে। সব প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে তিনি উপজেলার এই প্রান্ত থেকে ওই প্রান্তে ছুটে যায় বাদাম বিক্রির জন্য। এত কষ্ট করলেও আরাম-আয়েশের চিন্তা করি না সজীব। শুধু মাকে নিয়ে একটু সুখে থাকার চিন্তা তার। প্রতিবন্ধী হওয়ায় বিয়ে করেননি । মাকে একটু সুখে রাখার জন্যই বাদাম বিক্রি করেন। প্রতি মাসে নিজের ও মায়ের জন্য অনেক টাকার ওষুধ কিনতে হয় তার। ১৬ বছর ধরে বাদাম বিক্রি করে মাকে নিয়ে এই সংসার চালাচ্ছেন তিনি। তারা দুই ভাই তিন বোন। তিন বোনকে ইতিমধ্যে বিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার বড় ভাই সন্তানদের নিয়ে আলাদা খায়। তিনিও শারিরীকভাবে অসুস্থ। তার সংসারও চলে খুবই কষ্টে।
বাদাম ক্রেতা প্রসাদ গাইন, বিবেক, বিজয়, লোকমান মোল্যা জানান, ভালো বাদাম হওয়ায় সজিবের বাদাম বিক্রির জন্য বাদাম, বাদাম বলে চিৎকার করতে হয় না। তারা রোজই সজিবের কাছ থেকে বাদাম কেনেন। সারাদিন এত কষ্ট করে বাদাম বিক্রি করলেও সজীবের চোখেমুখে কোনও ক্লান্তির ছাপ দেখতে পান না তারা।
এদিকে সজীবের মা বলেন, তিনি সর্বদা ছেলেকে সাহায্য করেন। তিনি বাদাম ভেজে দেন আর তার ছেলে সারাদিন বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে বাদাম বিক্রি করে। মা ও ছেলে দুজনই পরিশ্রম করি একটু সুখে থাকার আশায়।
এ ব্যাপারে লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আজগর আলী জানান, সজীব যদি প্রকৃত প্রতিবন্ধী হন এবং তার কার্ড না থাকে তাহলে তাকে প্রতিবন্ধী কার্ডসহ অন্যান্য সকল ধরনের সরকারি সুযোগ-সুবিধা তাকে দেওয়া হবে।
এসআইএইচ