সাবেক এমপির বাড়িকে পাগলাগারদ বানানো হলো না ‘সমন্বয়কের’(ভিডিও)

আ.লীগের সাবেক এমপির বাড়ি দখল করে পাগলাগারদ বানালো সমন্বয়ক। ছবি: সংগৃহীত
টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য জোয়াহেরুল ইসলামের বাড়ি দখল করে ‘পাগলের আশ্রম’ চালু করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক পরিচয়ধারী এক তরুণী। শনিবার দুপুরে প্রায় ২৫ জন ছিন্নমূল মানসিক প্রতিবন্ধীকে নিয়ে এই আশ্রম চালু করেন তিনি।
ওই তরুণীর নাম মারইয়াম মুকাদ্দাস ওরফে মিষ্টি। তিনি নিজেকে আল মুকাদ্দাস ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সংগঠক হিসেবে পরিচয় দেন।
মারইয়াম মুকাদ্দাস মিস্টি জানান, ফেসবুকে পূর্ব ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। আওয়ামী লীগের সকল নেতাদের বাড়িতে পাগলদের জন্য ‘আশ্রম’ গড়ে তোলা হবে। তারই অংশ হিসেবে শনিবার সকালে তালা ভেঙে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলামের ৬তলা ভবনে প্রবেশ করা হয়েছে। ওই বাসায় আল মুকাদ্দাস ফাউন্ডেশনের ২০ জন পাগল রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।
মিষ্টির মতে- এটাকে জবরদখল বলা যাবে না, কারণ কোনো ব্যক্তি বিশেষের ব্যবহারের জন্য ভবনটি নেওয়া হয়নি। সমাজের অবহেলিত পাগলদের জন্য আশ্রম করা হচ্ছে। এটাকে অন্য সমন্বয়করা তাকে সমর্থন দিয়েছেন বলে জানান।
এদিকে, ১০ কোটি টাকা চাঁদা না দেওয়ায় টাঙ্গাইলের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলামের বাসা জবরদখলের অভিযোগ করেছেন জোয়াহেরুল ইসলামের স্ত্রী রউশন আরা।
তিনি বলেন, ‘টাঙ্গাইলের ছাত্র প্রতিনিধি ও সমন্বয়ক পরিচয়ে মারইয়াম মুকাদ্দাস মিষ্টি নামে এক মেয়ে আমাদের কাছে প্রথমে ১০ কোটি টাকা চাঁদা চেয়ে ছিল। সেই টাকা না দেওয়ায় তারা বাড়ি জবরদখল করে। আমি এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করব।’
রউশন আরা আরও বলেন, ‘বাড়িটি আমার নামে, আমার স্বামীর নামে নয়। আমি এ ঘটনায় সঠিক বিচারের দাবি করছি।’
এ ঘটনায় জেলাজুড়ে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হলে নড়চড়ে বসে প্রশাসন।
এদিন রাত সাড়ে ১০ টার দিকে পৌর শহরের ছোট কালিবাড়ীতে অবস্থিত ছয়তলা বিশিষ্ট ভবনটি যৌথবাহিনীর অভিযানে দখলমুক্ত করা হয়। এতে টাঙ্গাইল সদর উপজেলা সহকারী কমিমনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রুহুল আমিন শরিফের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথভাবে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
টাঙ্গাইল সদর উপজেলা সহকারী কমিমনার (ভূমি) রুহুল আমিন শরিফ বলেন,‘দখল হওয়া বাসাটি যৌথবাহিনীর অভিযানে বাসাটি দখল মুক্ত করা হয় এবং সেখানে রাখা ১৭ জন মানসিক ভারসাম্যহীন রোগীকে পূর্বের জায়গায় পাঠানো হয়েছে।’
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর থেকে সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম স্বপরিবারে আত্মগোপনে। গত ৬ ফেব্রুয়ারি বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা টাঙ্গাইলের সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলামের (ভিপি জোয়াহের) বাসায় প্রবেশ করে লুটপাট ও ভাঙচুর চালায়।
