অশ্লীল ভিডিও বানিয়ে ব্লাকমেইল করে টাকা দাবি, স্কুলছাত্রী গ্রেফতার
ভূঞাপুর থানা। ছবি: সংগৃহীত
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষিকা, ছাত্রী ও বিভিন্ন জনের ছবি ব্যবহার করে অশ্লীল ভিডিও তৈরি। তারপর সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক মেসেঞ্জারে গ্রুপ বানিয়ে সেখানে পোস্ট করে লাখ লাখ টাকা দাবি করার অভিযোগে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে এক স্কুলছাত্রীকে গ্রেফতার করেছে ভূঞাপুর থানা পুলিশ।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে গ্রেফতারকৃত স্কুলছাত্রীকে টাঙ্গাইল আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ।
গত রবিবার (১৯ জানুয়ারি) রাতে পৌর শহরের পূর্ব ভূঞাপুর নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। সে উপজেলার ফলদা ইউনিয়নের চন্ডিপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং এসএসসি পরীক্ষার্থী।
পুলিশ জানায়, উপজেলার কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষিকা, ছাত্রী ও ব্যক্তিদের ছবি ব্যবহার করে অসামাজিক ভিডিও তৈরি করে একাধিক মেসেঞ্জার গ্রুপ করে সেখানে পোস্ট করা হয়। পরে পোস্ট করা ভিডিওর সাথে মোবাইল নম্বর দিয়ে লাখ লাখ টাকা দাবি করা হয়।
সম্প্রতি ‘দিলরুবা’ ও রাকিবুল ইসলাম’ নামের ফেসবুক আইডি থেকে এলাকার অনেকের আইডি যুক্ত করে মেসেঞ্জার গ্রুপ তৈরি করে। পরে গ্রুপে অসামাজিক ভিডিও দেওয়া হয়। পরে ফেসবুক, গুগল কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে আইডিগুলো ব্যবহারকারী শনাক্ত করা হয়।
এসব কর্মকাণ্ডের জড়িত থাকার সন্দেহে গ্রেফতারকৃত স্কুলছাত্রীর স্মার্ট মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ জব্দ করে তাকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং জব্দ করা ফোনে এসব পোস্ট ও ভিডিও’ ছড়ানোর সত্যতা পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে স্কুলছাত্রী জানায়, আমার ছবি ব্যবহার করে অসামাজিক ভিডিও বানানো হয়েছে। সেই ভিডিও দিয়ে আমার পরিবারের কাছে টাকা চাওয়া হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িত মির্জাপুরের সীমান্ত ও গোপালপুরের সিফাতকে পুলিশ ডেকে এনেছিল। তারা স্বীকারও করেছে কিন্তু তারপরও তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের সাথে কাজের সাথে আমি জড়িত না, সেটার প্রমাণ আমার কাছে আছে।
স্কুলছাত্রীর বাবা জানান, আমার মেয়ের ছবি দিয়ে নগ্ন ভিডিও বানিয়ে টাকা দাবি করা হয়েছিল। যে নম্বরগুলোতে টাকা চাওয়া হয়েছিল তাদের পুলিশ ধরেছিল। তারা স্বীকারও করেছে এ ঘটনা। সে সময় মেয়ের মোবাইল চেক করে কোনো কিছু পাওয়া যায়নি। পরে মোবাইল ফেরত দিলেও গত রবিবার রাতে মেয়েকে থানায় নিয়ে যায়। পরে সোমবার পর্নোগ্রাফি মামলায় তাকে আদালতে পাঠায় পুলিশ। এটার সাথে আমার মেয়ে জড়িত না।
এ ব্যাপারে ভূঞাপুর থানার তদন্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, জি-মেইল দিয়ে একাধিক ফেসবুক আইডি খোলা হয়েছে ওই ছাত্রীর মোবাইল দিয়ে। লোক-লজ্জার ভয়ে অনেকেই কিছু বলতে চান না। এই ঘটনায় একজন ভুক্তভোগী থানায় অভিযোগ দায়ের করে। পরে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করা হয়। এতে গুগল, ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা হয়। তদন্তে আইডির ব্যবহারকারীর পরিচয় শনাক্ত হওয়ার পরই ওই ছাত্রীকে গ্রেফতার করা হয়।