ইতালি যাওয়ার পথে নৌকাডুবি, নিহত ৯ জনের মধ্যে ৫ জনই মাদারীপুরের
ছবি: সংগৃহীত
অবৈধভাবে সমুদ্রপথে ইতালি যাবার সময় নৌযানে অগ্নিকাণ্ডে নিহত ৯ জনরে মধ্যে পাঁচজনই মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার বাসিন্দা। এদিকে যুবকদের মৃত্যুর খবরে এলাকাজুড়ে চলছে শোকরে মাতম। আদরের সন্তানদের হারিয়ে দিশেহারা পরিবার। এই ঘটনায় দালালের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী।
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে লিবিয়ার দূতাবাসের মাধ্যম ও নিহতদের বাড়িতে গিয়ে এ তথ্য নিশ্চিতি হওয়া গেছে।
নিহত মাদারীপুরের ৫ যুবকরা হলেন- রাজৈর উপজেলার বাজিতপুর ইউনিয়নের কোদালিয়া গ্রামের মিজানুর রহমান কাজীর ছেলে সজীব কাজী (১৯), খালিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম স্বরমঙ্গল গ্রামের ইউসুফ আলী শেখের ছেলে মামুন শেখ (২২), একই ইউনিয়নের সেনদিয়া গ্রামের সুনীল বৈরাগীর ছেলে সজল বৈরাগী (২২), কদমবাড়ির ইউনিয়নের উত্তরপাড়া গ্রামের পরিতোষ বিশ্বাসের ছেলে নয়ন বিশ্বাস (২৪), কবিরাজপুর ইউনিয়নের কেশরদিয়া গ্রামের কাওসার হোসেন (২২)।
বাকি তিনজন হলেন- গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার রাঘদি ইউনিয়নের বড়দিয়া গ্রামের দাদন মিয়ার ছেলে রিফাদ (২১), দিকনগর ইউনিয়নের ফতেয়পট্টি এলাকার মো. রাসেল (২০) ও গয়লাকান্দি গ্রামের পান্নু শেখের ছেলে ইসরুল কায়েস আপন (২২)।
স্বজনরা জানায়, গত ১৪ জানুয়ারি মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার ও গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের বেশ কয়েকজন যুবক ইতালির উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হয়। পরে গত বুধবার লিবিয়া থেকে দালালদের মাধ্যমে একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় রওনা দেয় তারা।
তিউনিসিয়ার ভূমধ্যসাগরে নৌকার ইঞ্জিন ফেটে আগুন ধরে যায়। পরে সাগরেই ডুবে যায় নৌকাটি। এতে সজীব কাজি, মামুন শেখ, সজল বৈরাগী, নয়ন বিশ্বাস, কাওসার, আপন, রাসেল ও রিফাদের মৃত্যু হয়। এ ছাড়া এক পাকিস্তানি নাগরিকও মারা যান। খবর পেয়ে কয়েকজনকে জীবিত উদ্ধার করে স্থানীয় কোস্টগার্ড। নিহতদের খবর বাড়িতে আসলে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনরা।
স্বজনদের অভিযোগ, মানব পাচারকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের গজারিয়া গ্রামে রহিম শেখ ও রাঘদি ইউনিয়নের সুন্দরদী গ্রামের বাদশা কাজির ছেলে মোশারফ কাজি ইউরোপ নেওয়ার কথা বলে প্রত্যেকের কাছ থেকে ১০-১৫ লাখ টাকা নেয়। পরে অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই করে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় ইতালি পাঠালে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মাসুদ আলম জানান, তিউনিসিয়ার ভূমধ্যসাগরে মাদারীপুরের ৫ জনসহ বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি মারা গেছেন। এই ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে দালালদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।