চলন্ত বাসে ডাকাতি-ধর্ষণ ঘটনায় ৬ আসামিকে রিমান্ড
কুষ্টিয়া থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী ঈগল পরিবহণের একটি চলন্ত বাসে এক নারী যাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও অস্ত্রের মুখে ঘুমন্ত যাত্রীদের হাত-মুখ ও চোখ বেঁধে জিম্মি করে নির্যাতন ও লুটপাটের ঘটনায় ৬ জনের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। একইসাথে এ ঘটনায় অপর ৪ আসামির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেওয়ার কথা রয়েছে। তবে তারা কোনো বিচারকের কাছে জবানবন্দি দেবেন সে বিষয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি।
মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) বিকাল ৪ টার দিকে টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক ফারজানা হাসনাত আসামিদের রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন। রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া আসামিরা হলেন- রতন, মান্নান, জীবন, দ্বীপ, বাবু ও সোহাগ। জবানবন্দি দিতে রাজি হওয়া আসামিরা হলেন- আসলাম, রাসেল, আলাউদ্দিন এবং নাইম।
এ বিষয়টি আদালত পরিদর্শক তানবীর আহম্মদ বিষয়টি নিশ্চিত করে করে জানান, বিকেলে আসামিদের আদালতে আনা হয়। আদালতে ছয় আসামির সাত দিন করে রিমান্ড আবেদন করা হয়। বিচারক রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে আসামিদের তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে গত রবিবার (৭ আগস্ট) রাতে ঢাকা, গাজীপুর ও সিরাজগঞ্জ এলাকায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে মূল পরিকল্পনাকারীসহ ডাকাত চক্রের ১০ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। পরের দিন সোমবার (৮ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে তাদের ঢাকা থেকে টাঙ্গাইলের ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার (২ আগস্ট) সন্ধ্যায় কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থেকে ঈগল পরিবহনের একটি বাস নারায়ণগঞ্জ হয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা হয়। রাত সাড়ে ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জের একটি খাবার হোটেলে যাত্রা বিরতি করে। সেখান থেকে যাত্রা শুরুর পর তিন দফায় যাত্রীবেশে ডাকাতরা বাসে উঠে।
পরে বাসটি বঙ্গবন্ধু সেতু পার হওয়ার পর আনুমানিক রাত দেড়টার দিকে যাত্রীরা ঘুমানোর এক পর্যায়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের টাঙ্গাইলের নাটিয়াপাড়া এলাকা পৌঁছালে ডাকাত দলের সদস্যরা অস্ত্র নিয়ে পুরো বাসের নিয়ন্ত্রণ নেন এবং কমপক্ষে ৩ ঘণ্টা তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখে। এরইমধ্যে প্রথমে পুরুষ যাত্রীদেরকে তাদের পোশাক খুলে হাত মুখ বাধা হয়।
অন্যদিকে, নারী যাত্রীদেরকে বাসের পর্দা ও সিটের কভার খুলে মুখ এবং হাত বেঁধে ফেলা হয়। পরে অস্ত্রের মুখে বাসের চালক ও হেলপারকে জিম্মি করা হয়। টাঙ্গাইলের গোড়াই এলাকা থেকে বাসটিকে ইউর্টান করে এলেঙ্গা হয়ে ময়মনসিংহ রোড ধরে যেতে থাকে। এ সময়ের মধ্যে যাত্রীদের কাছে থাকা মোবাইল, টাকা, কানের দুল, হাতের বালা, গলার চেইন লুট করে নেওয়া হয়। পরে ৫ থেকে ৬ জন ডাকাত দলবদ্ধভাবে গাড়িতে থাকা এক নারীকে ধর্ষণ করে।
এরপর রাত সাড়ে ৩ টার দিকে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়া জামে মসজিদের পাশে বালুর ঢিবির কাছে বাসের গতি থামিয়ে খাদে ফেলে পালিয়ে যায়। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসলে যাত্রীরা ডাকাতি ও নির্যাতনের বিষয়টি জানান। এ ঘটনায় ওই বাসের যাত্রী হেকমত মিয়া বাদী হয়ে মধুপুর থানায় বাস ডাকাতি ও ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন।
এএজেড